প্রতিটা অভিযাত্রীর স্বপ্ন থাকে আরোহণের। কিন্তু স্বপ্ন থাকলেও তা সফল হয় গুটি কয়েক জনের। মাউন্ট এভারেস্ট আরোহণ করা যেমন কষ্টকর, তেমনই ব্যয়বহুল। তবু, প্রতি বছর কয়েক’শ পর্বতারোহী ছুটে যান এভারেস্ট জয়ের টানে। প্রতি বছর ২৯ মে বিশ্বজুড়ে পালিত হয় এভারেস্ট দিবস। ১৯৫৩ সালে ২৯ মে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পা রাখেন শেরপা তেনজিং নোরগে ও এডমন্ড হিলারি। যদিও এই তথ্য কমবেশি সকলেরই জানা। তবে, এভারেস্ট সম্পর্কিত এমন অনেক তথ্য রয়েছে, যা অনেকেরই অজানা। বিশ্ব এভারেস্ট দিবসে সেই তথ্যগুলো সম্পর্কে জেনে নিন।
১) প্রায় ২৭০০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত হিমালয় পরিমাপের কাজ শুরু হয়েছিল ১৮৩৮ সালে। গণনা শুরু হয়েছিল ক্রমিক সংখ্যা দিয়ে। ১৮৪১ সালে এভারেস্ট আবিষ্কার করেন স্যর জর্জ এভারেস্ট। ১৮৫২ সালে শনাক্ত হয় ১৫ নম্বর শৃঙ্গ, যেটি ছিল মাউন্ট এভারেস্ট। এরপর ১৮৬৫ সালে জর্জ এভারেস্টের সম্মানে পর্বতের নাম পরিবর্তন হয়ে হয় মাউন্ট এভারেস্ট।
২) ১৯২৪-এ জর্জ ম্যালোরি ও আরভিন নামের দু’জন অভিযাত্রী এভারেস্টে অভিযান শুরু করেন। কিন্তু তাঁরা সফল হয়েছিলেন কিনা তার কোনও তথ্য নেই। ৭৫ বছর পর জর্জ ম্যালোরির দেহ মেলে।
৩) বর্তমানে এভারেস্টের উচ্চতা ৮,৮৪৮.৮৬ মিটার। ১৮৫৬ সালে যখন এভারেস্টের উচ্চতা পরিমাপ করা শুরু হয়, তখন এটির উচ্চতা ছিল ৮৮৪০ মিটার। এভারেস্টের উচ্চতা প্রতি বছর বৃদ্ধি পায়। ২০২০ সালে নেপাল ও চিন সরকার একসঙ্গে শেষবার এভারেস্টের উচ্চতা পরিমাপ করা হয়।
৪) ৮০০০ মিটার উচ্চতার উপর জায়গাকে বলা হয় ‘ডেথ জোন’। এখানে গিয়ে অক্সিজেনের অভাবে অভিযাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। একটু অসতর্ক হলেই মৃত্যু অনিবার্য।
৫) এভারেস্ট আরোহণ করলে আপনাকে ‘মাউন্টেন স্পাইডার’-এর কবলে পড়তে হয়। ৬,৭০০ মিটার উচ্চতায় এক প্রকার মাকড়সা দেখা দেয়। এর হাত থেকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
৬) নেপালে এভারেস্টকে বলা হয় ‘সাগরমাতা’। যার অর্থ হল আকাশের দেবী। তিব্বতীরা ‘চোমোলঙমা’ নামে ডাকে এভারেস্টকে। এর অর্থ হল পর্বতের দেবী মা।
৭) প্রতিবছর মে মাসে শুরু হয় এভারেস্ট আরোহণ। ২০২০ সালে কোভিডের কারণে বন্ধ ছিল এভারেস্ট আরোহণ। ২০২১ সালের মে থেকে আবার শুরু হয় বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণ।
৮) নেপাল ও তিব্বত সীমান্তের মাঝে অবস্থিত বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। তাই দু’দিক দিয়েই ওঠা যায় এভারেস্টে। নেপাল হল এভারেস্ট আরহনের দক্ষিণ রুট এবং তিব্বতে রয়েছে উত্তর রুট। যদিও বেশিরভাগ পর্বতারোহী নেপালকে বেছে নেয় এভারেস্টে যাওয়ার জন্য। কাঠমান্ডু থেকে শুরু হয় যাত্রাপথ। সাগরমাতা জাতীয় উদ্যানের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হয় লুকলা গ্রামে। সেখান থেকে শুরু হয় এভারেস্ট ট্রেকিং। অনেকে লুকলা বিমানবন্দর থেকেও যাত্রা শুরু করেন।
৯) এভারেস্টে আরোহণ করা যেমন কষ্টকর, তেমনই ব্যয়বহুল। বিশ্বের সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণের গড় ব্যয় প্রায় ৪৫,০০০ ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় ৩৩,৮০,৪১৫ টাকা।