Nainital: জিম করবেটের নৈনিতাল! এখন কেমন সেই শৈলশহর?

জিম করবেটের লেখা পড়ে আপনি নৈনিতালের যে ছবি এঁকেছিলেন, তার থেকে কোনও অংশেই কম নয় এই শৈলশহর।

Nainital: জিম করবেটের নৈনিতাল! এখন কেমন সেই শৈলশহর?
নৈনিতাল
Follow Us:
| Updated on: Dec 03, 2021 | 2:04 PM

যদি নব্বইয়ের দশকের নব-দম্পতিদের প্রিয় ভ্রমণস্থানের একটি সমীক্ষা করা হয়, তাহলে সেই তালিকায় থাকবেই থাকবে পাহাড়। আর ডেস্টিনেশন হিসেবে থাকতে বাধ্য নৈনিতাল। যদি জনপ্রিয়তা নিয়ে কথা বলা হয়, তাহলে নৈনিতালের কাছে হার মানতে বাধ্য উত্তরাখণ্ডের অন্যান্য শহর।

কুমায়নের কোলে একটিমাত্র হ্রদ নৈনিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই শৈলশহর। এই হ্রদের গভীরতা ২৭ মিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২০৪৮ মিটার উঁচুতে এমন একটি হ্রদ- এই দৃশ্যের দেখা মেলে শুধু নৈনিতালেই। আর সাতটি শৃঙ্গ ঘিরে রয়েছে নৈনিতালকে। আয়ার্পাতা, দেওপাতা, হান্ডি-বান্ডি, চিনা পিক, আলমা, লারিয়া কান্তা ও শের কা ডান্ডা। তবে জনপদে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আপনার নজর কাড়বে এই নৈনি হৃদ।

জিম করবেটের লেখা পড়ে আপনি নৈনিতালের যে ছবি এঁকেছিলেন, তার থেকে কোনও অংশেই কম নয় এই শৈলশহর। হ্রদের পাশ দিয়ে চলে গেছে মল রোড। আর মল রোড শেষ হতে না হতেই শুরু হয়ে গিয়েছে বাজার। যদিও নৈনিতালে সবচেয়ে জনপ্রিয় মোমের তৈরি জিনিস। তারই এক ঝলক আপনি ওই মল রোডের মার্কেটেই দেখতে পাবেন।

Nainital

মল রোড

এই মল রোডের রূপ আবার সময়ের সঙ্গে বদলায়। কীরকম ভাবছেন? সবুজ জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে রোদের ছটা এসে পড়ে হ্রদের জলে। আর তাতেই হ্রদের জলও ঝিলমিলিয়ে ওঠে। বেলার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় হ্রদে বোটিং। আর এই মল রোডেই সবাই ব্যস্ত হয়ে যায় অ্যাডভেঞ্চারে। এখানে মোটরবাইক ও সাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়। আপনি চাইলেই পাহাড়ি রাস্তা অন্বেষণ করতে পারবেন খুব সহজেই।

আবহাওয়া সারা বছরই মনোরম থাকে এখানে। যদিও দুপুরের পর কখন যে শীত আপনাকে জাপটে ধরবে, তা ঠাওর করতে পারবেন না এখানে। চোখের পলক ফেলতেই সূর্য বিদায় নেয় পাহাড় কোলে। তখন এই মল রোড সেজে ওঠে আলোয়। রাস্তার দু’ধারে বসে খাবারের মেলা। হট চকোলেট, চিকেন তন্দুরি থেকে শুরু করে মোমো, সবই পাওয়া যায় মল রোডের রাস্তায়। খাবারের প্রসঙ্গ যখন এসেছে, জেনে রাখা ভাল যে নৈনিতালের ক্যাফেগুলি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। গরম কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে হ্রদের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন এই ক্যাফেগুলিতে বসে।

Night view of Nainital

রাতের নৈনিতাল

যদি সাইটসিনের কথা ভাবেন, সেখানেও আপনাকে নিরাশ করবে না নৈনিতাল। হ্রদের পাশেই রয়েছে নয়না দেবীর মন্দির। নৈনিতাল থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটারের দূরত্বে রয়েছে নয়না পিক বা চায়না পিক। ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধের পর এই শৃঙ্গের নাম পরিবর্তন হয়ে হয় নয়না পিক। পাইন, দেবদারু গাছে ঘেরা এই অঞ্চল। এই শৃঙ্গের ওপর থেকে তুষারবৃত হিমালয়ে এক অন্যরূপ অন্বেষণ করা যায়। তাই ট্রেকারদের কাছেও বেশ জনপ্রিয় এই শৃঙ্গ।

‘তাল’ যার আক্ষরিক অর্থ হল লেক বা হ্রদ। সাতটি শৃঙ্গের পাশাপাশি নৈনিতাল অঞ্চলে রয়েছে সাতটি তাল। ভীমতাল, সাততাল, নাউকুচিয়াতাল, খুরপাতাল, মালয়াতাল, হরিশতাল এবং লোখাতাল। সাতটি তালের মধ্যে ভীমতাল ও সাততাল এই অঞ্চলের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। বলা বাহুল্য যে, পাহাড়ি জনপদ হয়েও বেশ ঘিঞ্জি শহর নৈনিতাল। তবে আপনি যদি নিরিবিলি স্থানে দুদিন ছুটি কাটাতে চান, তাহলে বেছে নিতে পারেন এই ভীমতাল ও সাততালকে। এখানে থাকার জন্য হোটেল ও হোমস্টে দু’টোই রয়েছে। আর এই অঞ্চলের দূরত্ব নৈনিতাল থেকে ঘণ্টা দুয়েক।

ক্রিসমাসের ছুটিতে বহু মানুষ ভিড় করে এই নৈনিতালে। মল রোডের ওপরেই রয়েছে সেন্ট ফ্রান্সিস ক্যাথলিক চার্চ। উৎসবের সময় চার্চের পাশাপাশি সেজে ওঠে সারা শহর। তাই আপনিও চাইলে এই বছরের ক্রিসমাসের ছুটি কাটাতে পারেন শৈলশহর নৈনিতালে।

আগামিকাল: রানিখেত-আলমোড়া

আরও পড়ুন: লাদাখ প্রান্তে অবস্থিত ভারতের এই শেষ গ্রামে আপনার পরিচয় ঘটতে পারে এক অন্য সংস্কৃতির সঙ্গে!