Turtuk: লাদাখ প্রান্তে অবস্থিত ভারতের এই শেষ গ্রামে আপনার পরিচয় ঘটতে পারে এক অন্য সংস্কৃতির সঙ্গে!

নুব্রা ভ্যালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য যে শব্দে বর্ণনা করা যায় না তা বলা বাহুল্য। কিন্তু আপনি যদি একটি রাত তুরতুকে কাটান তাহলে সম্মুখীন হতে পারেন অনেক অজানা তথ্যের।

Turtuk: লাদাখ প্রান্তে অবস্থিত ভারতের এই শেষ গ্রামে আপনার পরিচয় ঘটতে পারে এক অন্য সংস্কৃতির সঙ্গে!
লাদাখ প্রান্তে অবস্থিত ভারতের শেষ গ্রাম তুরতুক
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 22, 2021 | 2:00 PM

বর্তমানে লাদাখ বেড়াতে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় না ইনার লাইন পারমিটের, অর্থাৎ অনুমতি পত্র ছাড়াই আপনি ঘুরে আসতে পারেন লে ও লাদাখ। অনেকের আবার ড্রিম ডেস্টিনেশনের তালিকায় নাম রয়েছে এই জায়গা। আর যদি ভ্রমণ পিপাসুদের কথা চিন্তা করি, তাহলে লাদাখ তাদের কাছে পুরনো হয়ে গেছে বলা চলে। তাই আমরা আপনার জন্য নিয়ে এসেছি লাদাখের একটি অফবিট জায়গার খোঁজ।

লে শহর থেকে ২০৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত হুন্ডার। সেখান থেকে আরও ৮৫ কিলোমিটার অতিক্রম করলেই পাবেন একটি ছোট্ট গ্রাম, যার নাম তুরতুক। রুক্ষ পাহাড়ের বুকে নুব্রা ভ্যালিতে অবস্থিত এই তুরতুক। নুব্রা ভ্যালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য যে শব্দে বর্ণনা করা যায় না তা বলা বাহুল্য। কিন্তু আপনি যদি একটি রাত তুরতুকে কাটান তাহলে সম্মুখীন হতে পারেন অনেক অজানা তথ্যের।

পাকিস্তান ও ভারত সীমান্তে অবস্থিত এই গ্রাম তুরতুক। এক সময় পাকিস্তানের বাল্টিস্তানের চোরবাট অঞ্চলের অধীনে ছিল তুরতুক। ১৮৪০ সালে জম্মুর রাজা মহম্মদ গুলাব সিংহ বাল্টিস্তান করেন। তারপর দেশভাগের পর প্রথম ভারত-পাক যুদ্ধে তুরতুক পাকিস্তানের দখলে চলে যায়; ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর আবার সেটি ভারতের অধীনে ফিরে আসে। আর এই ইতিহাসের কারণেই এখানে প্রভাব রয়েছে বাল্টিস্তানের সংস্কৃতির। আড়াই হাজারের মত মানুষের বাস এই তুরতুকে, যাদের ভাষা বাল্টি ও উর্দু। সুফিবাদের প্রভাবও রয়েছে এদের সংস্কৃতিতে।

last village turtuk

তুরতুকের এই রাস্তাই হল ভারত ও পাকিস্তানের বর্ডার

সিয়াক নদির ওপরে ছোট্ট কাঠের ফুটব্রিজের দু ধারে ছড়ানো এই তুরতুক। এখানের ঘরবাড়ি তৈরি প্রাচীন পাথর দিয়ে। আর চারিদিক তুষারবৃত পাহাড় দিয়ে ঘেরা। রয়েছে খেত, তবে ফসল বলতে আঙুর আর অ্যাপ্রিকট। আর এই গ্রামই সিয়াচিন হিমাবহের প্রবেশদ্বার। গ্রামের মধ্যেই রয়েছে দুটি মসজিদ। আর পাহাড়ের কিছু ওপরে উঠলেই পেয়ে যাবেন বৌদ্ধ গুম্ফা। সেই মনেস্ট্রি থেকে আপনি কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির মনোরম দৃশ্য অনুভব করতে পারবেন।

এই গ্রামে আবার রয়েছে রাজবাড়ি আর রয়েছেন রাজা ইয়াবগো মহম্মদ খান কাচো। সুতরাং তুরতুকে গেলে আতিথেয়তা পেতে পারেন রাজপরিবারের থেকে। তবে এই গ্রামের রাজা পেশায় একজন কৃষক ও অ্যাপ্রিকট ব্যবসায়ী। এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষের জীবিকা কৃষিকাজ ও পশুপালন। যাঁরা পশুপালন করেন তাঁরা পাহাড়ের তাঁবু তৈরি করে থাকেন। অক্টোবর মাসে বরফ পড়া শুরু হলে নেমে আসেন গ্রামে। সুতরাং চেষ্টা করুন জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে লাদাখ ঘুরে আসার।

কয়েক কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত গিলগিট বাল্টিস্তান। কিছুকাল আগে অবধি এই তুরতুকে প্রবেশের জন্যও প্রয়োজন হল ইনার লাইন পারমিটের। তবে এখন এই তুরতুকে রাত কাটাতে পারেন সাধারণ মানুষ। তাই লাদাখ বেড়াতে গেলে একদিনে কাটিয়ে যান এই তুরতুকে।

আরও পড়ুন: অস্তিত্ব সংকটে শ্রীনগরের বিখ্যাত গোলাপ জল!