Takdah: ব্রিটিশদের একসময়ের এই ক্যান্টনমেন্ট হয়ে উঠতে পারে আপনার প্রিয় ভ্রমণস্থান!
এই ধরুন আপনি পরিষ্কার আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আছেন আর হঠাৎ আপনাকে মেঘ এসে জাপটে ধরল, কেমন হবে বলুন তো! আসলে এখানে যখন তখন নেমে আসে কুয়াশা। আর এই কারণেই এই জায়গার নাম তাকদা।
উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি গ্রাম গুলো বর্তমানে হয়ে উঠেছে বাঙালি অফবিট। আর হবে নাই বা কেন, পাহাড়ের ওপর সবুজে লুকিয়ে থাকা এই গ্রামগুলির সৌন্দর্য্যই তো আলাদা। আসলে ডুয়ার্স হোক বা কালিম্পং কিংবা আলিপুরদুয়ার উত্তরবঙ্গের যে কোনও জায়গা থেকেই পাহাড়ের নানান দৃশ্য চোখে ধরা দেয় প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে। আর সেই কারণেই বার বার ফিরে যাওয়া উত্তরবঙ্গে।
দার্জিলিং জেলার ছবি আঁকা পাহাড়ি গ্রাম তাকদা আর তুকদা। কেন ছবি আঁকা তা গেলেই বুঝতে পারবেন। এই ধরুন আপনি পরিষ্কার আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আছেন আর হঠাৎ আপনাকে মেঘ এসে জাপটে ধরল, কেমন হবে বলুন তো! আসলে এখানে যখন তখন নেমে আসে কুয়াশা। আর এই কারণেই এই জায়গার নাম তাকদা। লেপচা ভাষায় নাকি তাকদা শব্দের অর্থ মেঘে ঢাকা বা কুয়াশায় ঘেরা ।
দার্জিলিং শহর থেকে মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে রংলিয়ট। সেই রংলিয়ট এলাকায় অবস্থিত এই তাকদা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই জায়গায় অবস্থান প্রায় ৪০০০ হাজার ফুট উচ্চ। এই অঞ্চলকে আপার, মিডল আর লোয়ার এই তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। এখানে আপনি যে দিকে তাকাবেন পাবেন ঢেউ খেলানো চা বাগান। মিশকালো আঁকাবাঁকা পিচরাস্তার ধারে পাহাড়ের ধাপে ধাপে চা বাগান। আর সেই চা বাগানের মাঝে পাইন আর সিডারের বন।
এই জায়গা এখন বাঙালিদের কাছে অফবিট হলেও, ব্রিটিশদের কাছে ছিল জনপ্রিয়। ব্রিটিশরা মূলত এই জায়গাকে ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে গড়ে তুলেছিল। তাই তো এখানে এখনও রয়েছে ব্রিটিশদের তৈরি করা তুকদা ক্যান্টনমেন্ট হেরিটেজ বাংলো। এছাড়াও রয়েছে ব্রিটিশ বাংলো। ১৯০৫ সাল থেকে ১০১৫ সাল পর্যন্ত এই বাংলোগুলি তৈরি হয়েছিল। ব্রিটিশরা এখানে প্রায় ১২টির মত বাংলো গড়ে তুলেছিল। এর মধ্যে তাকদার সাঁই হৃদয়ম এবং তুকদার গ্লেন ম্যারি হোমস্টেতে আপনি চাইলে রাতও কাটাতে পারেন।
এই সব বাংলোগুলির সামনে প্রশস্ত লনে রঙিন ফুলের বাহার, আর আকাশের ক্যানভাসে পর্বতমালার ঢেউ। নানান অচিন পাখিদের কুজনে মন-প্রাণ জুড়িয়ে দিতে পারে আপনার। এই তাকদার একদিকে রয়েছে জলপাইগুড়ি, মাঝে অবজারভেটরি আর দূরে সিকিমের নামচি। তাকদার সবচেয়ে বিখ্যাত জায়গা হল অর্কিড হাউস। এখানেই সন্ধান মিলবে উপমহাদেশের অন্যতম সেরা সেরা অর্কিডের।
রাতেও তালদা অপরূপ সুন্দর। তারা ভরা আকাশের তলায় দূরের আলোমাখা দার্জিলিংকেও মায়াবী দেখাবে এই তাকদা থেকে। পূর্ণ চাঁদের জ্যোৎস্নায় কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপও অসাধারণ। আর আকাশ পরিষ্কার থাকলে দিনের আলোতেও ফুটে উঠবে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ। তাছাড়া রংলি রংলিয়ট, গিলি, তিস্তা ভ্যালি, নামরিং ইত্যাদির সবুজে মোড়া সৌন্দর্য্য আপনার মনকে মুগ্ধ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই যদি উত্তরবঙ্গ ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করেন, তাহলে এই তাকদাকে অবশ্যই রাখুন বাকেটলিস্টে।
আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে লুকিয়ে থাকা এই পাহাড়ি গ্রামে ঘুম ভাঙে পাখিদের কলরবে!
আরও পড়ুন: এবার পুজোয় সোলো ট্রিপের জন্য যেতে পারেন পাইন বনে ঘেরা এই অফবিটে!
আরও পড়ুন: হাত বাড়ালেই মেঘ পাওয়া যেতে পারে দার্জিলিং-এর এই অফবিটে!