Mahalaya 2021: ভগবান বিষ্ণুর যোগনিদ্রা থামাতে দেবীর রূপ কে ধরেছিলেন, জানেন?

পুরাণ মতে ব্রহ্মার নির্দেশে পিতৃপুরুষরা এই ১৫ দিন মনুষ্যলোকের কাছাকাছি চলে আসেন। তাই এই সময় তাঁদের উদ্দেশ্যে কিছু র্অপণ করা হলে তা সহজেই তাঁদের কাছে পৌছায়।

Mahalaya 2021: ভগবান বিষ্ণুর যোগনিদ্রা থামাতে দেবীর রূপ কে ধরেছিলেন, জানেন?
পিতৃপক্ষ আর দেবীপক্ষের সন্ধীক্ষণ হচ্ছে মহালয়া
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 20, 2021 | 7:25 AM

২০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হল এ বছরের পিতৃপক্ষ। পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে দেবীপক্ষের সূচনার দিনটিকেই মহালয়া হিসেবে উদযাপন করা হয়। চলতি বছরে আগামী ৬ অক্টোবর এই বিশেষ দিনটি পালিত হবে। মহালয়া শব্দের অর্থ মহান+আলয় =মহালয়। সঙ্গে স্ত্রীকারাত্মক আ যুক্ত হয়ছে। আবার মহ শব্দের র্অথ হল পুজো এবং উত্সব। অর্থাত্‍ মহালয়া হল পুজো বা উত্সবরে আলয়। মহালয়া বলতে পিতৃলোককে বোঝায়। এই দিনটিকে পিতৃপূজা ও মাতৃপূজার পরম লগ্ন বলে মনে করা হয়।

মহালয়া নিয়ে বাভালি কখনও পরিবর্তিত হবে না। কারণ এই পুজো, এই পুজোর যাবতীয় বাঙালির মননে-চিন্তনে। তাই নস্টালজিয়ার পাশাপাশি উত্‍সবের গৌরব বজায় রাখতে বাঙালি বদ্ধপরিকর। বিশ্বকর্মা পুজো মানেই পুজো একেবারে দোরগোড়ায়। আর মহালয়া মানেই বাড়ির ভিতর পুজো পুজো গন্ধ চলে আসা। প্রত্যেকেই এই দিন রেডিয়োতে ও টিভিতে মহালয়া দেখে ও শুনে থাকেন। তাই দুর্গার মর্ত্যে আগমন, দেবী দূর্গার সৃষ্টি, অসুরদের ভয়ংকর মূর্তি, নারীশক্তির উত্থান- সবকিছুই অজানা নয়।

পূরাণে কথিত আছে, ব্রহ্মার বরে মহিষাসুরের দৌরাত্ম্যে বিশেষ করে দেবতাদের কাছে অপরাজেয় হয়ে উঠেছিল। ব্রহ্মার বর অনুযায়ী, শুধুমাত্র কোনও নারীশক্তির কাছেই তাঁর পরাজয় নিশ্চিত ছিল। ব্রহ্মার কাছ থেকে এমন বর পেয়ে মহিষাসুরের তাণ্ডব ক্রমশ বাড়তে থাকে। এমনকি বিশ্বব্রহ্মান্ডের অধীশ্বর হতে চেয়ে স্বর্গধাম থেকে সকল দেবতাদের বিতারিত করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি অমর হওয়ার ইচ্ছেও তাঁকে আরও শক্তিশালী তৈরি করে তুলেছিল। মহিষাসুরকে বধ করতে তখন এক নারীশক্তির জন্ম দেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর। ত্রিশক্তির শক্তি দিয়ে তৈরি হয় মহামায়ারূপী মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গা। তাঁর দশ হাতে দশ অস্ত্র সাজিয়ে দেন দেবতারা। অস্ত্র ও শক্তি দিয়ে যুদ্ধ করে মহিষাসুরকে বধ করেন তিনি। অশুভ শক্তির বিনাস ঘটিয়েছিলেন দেবী দূর্গা। তাই এই বিশষ দিনটিকে শুভ-শক্তির প্রতীক হিসেবে মহালয়া হিসেবে পালিত হয়।

পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে মাতৃপক্ষের সূচনা হয় এই মহালয়ার দিন। শ্রী শ্রী চণ্ডী গ্রন্থের প্রথম অধ্যায়ের কাহিনি অনুসারে, প্রলয়কালে পৃথিবী এক বিরাট কারণ-সমুদ্রে পরিণত হলে শ্রীবিষ্ণু সেই সমুদ্রের উপর অনন্তনাগকে শয্যা করে যোগনিদ্রায় মগ্ন হলেন। এই সময় বিষ্ণুর কর্ণমল থেকে মধু ও কৈটভ নামে দুই দৈত্যে নির্গত হয়ে বিষ্ণুর নাভিপদ্মে স্থিত ব্রক্ষ্মাকে বধ করতে উদ্যত হল। ভীত হয়ে ব্রম্মা বিষ্ণুকে জাগরিত করবার জন্য তাঁর নয়নাশ্রিতা যোগনিদ্রাকে স্তব করতে লাগলেন। দেবীর রূপ ধরে শ্রীবিষ্ণুকে জাগরিত করলে তিনি পাঁচ হাজার বছর ধরে মধু ও কৈটভের সঙ্গে মহাযুদ্ধে রত হন।

পিতৃপক্ষ আর দেবীপক্ষের সন্ধীক্ষণ হচ্ছে মহালয়া। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষে শুরু হয়ে পরর্বতী অমাবস্যা র্পযন্ত সময়কে পিতৃপক্ষ বলে। পুরাণ মতে ব্রহ্মার নির্দেশে পিতৃপুরুষরা এই ১৫ দিন মনুষ্যলোকের কাছাকাছি চলে আসেন। তাই এই সময় তাঁদের উদ্দেশ্যে কিছু র্অপণ করা হলে তা সহজেই তাঁদের কাছে পৌছায়। তাই গোটা পক্ষকাল ধরে পিতৃপুরুষদেব স্মরণ ও মননের মাধ্যমে তর্পন করা হয়। যার চূড়ান্ত প্রকাশ বা মহালগ্ন হল এই মহালয়া। অনেকেই এই দিনটিকে দেবীপক্ষের সূচনা বলে থাকেন। যদিও এটি একটি জনপ্রিয় ভ্রান্ত ধারণা। মহালয়া পিতৃপক্ষের শেষ দিন। পরের দিন শুক্লা প্রতিপদে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। সেই দিন থেকে কোজাগরী র্পূণমিা পযন্ত ১৫ দিনই হল দেবীপক্ষ।

  আরও পড়ুন: Pitri Paksha 2021: কবে থেকে শুরু হচ্ছে পিতৃপক্ষ! মহালয়ার আগে এই বিশেষ তিথির গুরুত্ব জেনে নিন

আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: এ বছর কিসে আগমন আর কিসেই বা গমন! মর্ত্যবাসীর ভাগ্যে কী আছে, জানুন