ভারতীয় দল অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে এমন পরিস্থিতি কেউ ভেবেছিল? ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজে ক্লিনসুইপ। ঘরের মাঠে চূড়ান্ত লজ্জা। সুপারস্টারদের পারফরম্যান্স হতাশাজনক। নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচেও ইতিবাচক কোনও প্রাপ্তি ছিল না। তার উপর প্রথম টেস্টে নেই রোহিত শর্মা, শুভমন গিল। প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে অলআউট। এত কিছুর পরও পারথ টেস্টে চালকের আসনে ভারত। বরং দ্বিতীয় দিনের শেষেই যেন বলা যায়, জয়ের গন্ধ আসছে। ক্যাপ্টেন বুমরা বোলিং এবং নেতৃত্বে যেমন নজর কেড়েছেন, দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত ব্যাটিং বিভাগেরও।
প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে অলআউট হওয়ার পর প্রয়োজন ছিল অস্ট্রেলিয়াকে অন্তত ২৫০-র মধ্যে আটকে রাখা। তবে ভারতীয় বোলাররা অন্য স্বপ্ন দেখেছিলেন। জসপ্রীত বুমরার বিধ্বংসী বোলিং, অভিষেক ম্যাচে নামা হর্ষিত রানা এবং তুলনামূলক অভিজ্ঞ মহম্মদ সিরাজের অবদান। অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ১০৪ রানেই অলআউট করে ভারত। প্রথম ইনিংসে ৪৬ রানের লিড। দ্বিতীয় ইনিংসে একটু ধৈর্য দেখাতে পারলে…।
যেমন ভাবনা, তেমনই কাজ। ভারতীয় দল যেমন জ্যাজ়বল খেলতে পারে, তেমনই ধ্রুপদী টেস্ট ইনিংসও। সেটাই করে দেখালেন দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল ও লোকেশ রাহুল। ১৯৩ বলে ৯০ রানে অপরাজিত যশস্বী। তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন সেঞ্চুরির স্বপ্ন নিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলছেন। প্রথম ইনিংসের হতাশা দূরে শুরু নতুন উদ্দমে খেলছেন। অন্যদিকে, অভিজ্ঞ সঙ্গী লোকেশ রাহুলও ধৈর্যের পরীক্ষায় একশোয় একশো। প্রথম ইনিংসে টেকনোলজির কাছে হার মানতে হয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে কেরিয়ারের ১৬তম হাফসেঞ্চুরি পার। ৬২ রানে ক্রিজে রয়েছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে তাঁর নবম এবং দেশের বাইরে অষ্টম সেঞ্চুরিও হয়ে যেতে পারে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। দ্বিতীয় দিন কামিন্সদের রীতিমতো ক্লাস নিলেন যশস্বী-রাহুল। স্টার্ক, হ্যাজলউড, কামিন্স, লিয়ঁর মতো স্পেশালিস্ট বোলাররা ছিলেন। সঙ্গে অলরাউন্ডার মিচেল মার্শকেও ব্যবহার করা হল। এতেই শেষ নয়, পার্টটাইম বোলার মার্নাস লাবুশেন ও ট্রাভিস হেডও হাত ঘোরান। জুটি ভাঙতে পারেননি। সব মিলিয়ে ২১৮ রানে এগিয়ে ভারত। তৃতীয় দিন আর একশোটা রান যোগ করতে পারলেই যেন ম্যাচ পকেটে। পূর্বাভাস বলছে, পিচ ইতিমধ্যেই ভাঙতে শুরু করেছে। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং একেবারেই সহজ হবে না। আর বুমরা যে ছন্দে রয়েছেন, তাতে ৩০০-৩৫০ রান তাড়া করা, অস্ট্রেলিয়ার জন্যও মিরাকল প্রয়োজন।