বয়স তার মোটে ৭ বছর। কিন্তু শরীরটা বড্ড খারাপ। এতটাই খারাপ যে স্কুলে অবধি যাওয়ার ক্ষমতা নেই। কিন্তু তা বলে স্কুলে ক্লাস করা বা স্কুল-টাইমেই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া থেমে নেই জার্মান ছাত্র (German Student) জোশুয়ার। কারণটা হল, তার বদলে স্কুলে পৌঁছে যাচ্ছে তারই অবতার রোবট (Avatar Robot)। ক্লাসে তার জায়গাতেই বসছে, সব কাজ করে দিচ্ছে, আর কিছু বলার সময় হলেই জাস্ট একটা সিগন্যাল দিচ্ছে। সেই সিগন্যালে সাড়া দিয়ে কথা বলছে জোশুয়া। জার্মানির ঘটনা। ৭ বছরের সেই পড়ুয়ার নাম জোশুয়া মার্টিনাঙ্গেলি (Joshua Martinangeli)। খুব শরীর খারাপ তার। আর তাই তার হয়ে স্কুলে ক্লাস করছে একটি অবতার রোবট। স্কুলেই ঠাঁই সেই রোবটের। সব ক্লাস করে। আর তার মধ্যে দিয়েই বাড়িতে বসে স্কুলটা দেখে নেয় জোশুয়া। ক্লাসগুলোও এই ভাবেই করে সে। শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের দরকারি টিপসও সে ঘরে বসে পেয়ে যায় অবতার রোবটের মাধ্যমেই।
সংবাদমাধ্যম রয়টার্সে সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। বার্লিনের পুসেতব্লাম গ্রান্ডশুলে স্কুলে পড়াশোনা করত ছোট্ট জোশুয়া। রয়টার্সের সেই রিপোর্টে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা উতে উইন্টারবার্গ-কে উদ্ধৃত করে বলা হচ্ছে, “শিশুরা সেই অবতার রোবটের সঙ্গে কথা বলে, একসঙ্গেই ওরা হাসাহাসি করে, কখনও কখনও পড়াশোনার সময় খুনসুটিও করে একসঙ্গেই। এই সব কাজগুলো জোশিও (জোশুয়ার ডাক নাম) করত।”
কিন্তু জোশুয়ার কী এমন হয়েছে যে সে স্কুলে যেতে পারে না? বাচ্চাটির মা সাইমন মার্টিনাঙ্গেলি জানালেন, ফুসফুসের একটি রোগের জন্য তার গলায় একটি নল ভরা থাকে সর্বদা। আর সেই কারণেই সে স্কুলে যেতে পারে না। বার্লিনের মার্জ়ান হেলার্সড্রফ জেলার স্থানীয় কাউন্সিলের তরফ থেকেই এই প্রাইভেট প্রজেক্টটির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জোশুয়ার চিকিৎসার খরচ, পড়াশোনার খরচ এবং সেই অবতার রোবটের খরচাও বহন করে স্থানীয় কাউন্সিল।
জেলা শিক্ষা কাউন্সিলর টর্সটেন কুয়েহনে বলছেন, “বার্লিনে এক মাত্র আমাদের জেলায় প্রতিটি স্কুলের অবতার রোবট রয়েছে। কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ই আমরা এটি স্কুলে নিয়ে আসি। তবে আমার মনে হয়, অতিমারি পেরিয়ে গেলেও আমাদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর হতে চলেছে এই রোবট।” তিনি আরও জানিয়েছেন যে, রাজনৈতিক স্তরেও এই প্রজেক্ট নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন এবং পরবর্তীতে জার্মানির অন্য়ান্য রাজ্যের স্কুলগুলিতেও অবতার রোবট নিয়ে আসা হবে।
নোয়া কুয়েসনার নামে জোশুয়ার এক বন্ধু যে ওই স্কুলেই পড়ে, সে বলছে, “আমার এই অবতারটিকে বেশ ভালই লাগছে। তবে আমি জোশুয়াকে তাড়াতাড়ি স্কুলে পেতে চাই।” আর এক বন্ধু বেরিটান আসলাঙ্গলু আবার দাবি করে বসল, “এটাকে আমি তখনই পছন্দ করব, যখন জোশুয়া আমার সঙ্গে বসে ক্লাস করবে।”
আরও পড়ুন: অপরাধ ঠেকাতে এবার আমেরিকায় আসছে স্মার্ট বন্দুক, মালিক ছাড়া আর কেউ গুলি চালাতে পারবে না!
আরও পড়ুন: আপনাকে নিয়ে আলোচনা করছে? তাঁর প্রোফাইল ফটো দিয়ে নোটিফাই করবে হোয়াটসঅ্যাপ!