এবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বরফের খোঁজ চালাবে মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসা। আর সেই জন্যই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এবার আইস-সিকিং রোভার পাঠাবে নাসা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চাঁদের এই দক্ষিণ মেরু অঞ্চলকে বলে Nobile Crater। ২০২৩ সালে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বরফ খোঁজার অভিযান শুরু করবে নাসা। ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার এই অভিযানের কথা ঘোষণা করেছে মার্কিন স্পেস এজেন্সি। বিজ্ঞানীদের আশা চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রপৃষ্ঠের একদম নীচেই বরফ এবং জলের সন্ধান পাবে রোভার। আর এই সমস্ত উপকরণ আগামী দিনে মঙ্গল গ্রহে অভিযানের জন্য পাঠানো রকেটের জ্বালানি তৈরিতে ব্যবহার করা হবে।
নাসার প্ল্যানেটারি সায়েন্স ডিভিশনের ডিরেক্টর লোরি গ্লেজার জানিয়েছেন, Nobile Crater চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে এমন একটি গর্ত যা চাঁদের সঙ্গে সৌর জগতের অন্য একটি উপাদানের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়েছিল। অন্যদিকে বলা হয়, চাঁদের দক্ষিণ মেরু সৌর জগতের সবচেয়ে শীতলতম স্থান। এই অঞ্চলে এখনও সেভাবে অভিযান চালানো হয়নি। তবে এবার নাসার Lunar Reconnaissance Orbiter এবং Lunar Crater Observation and Sensing Satellite– এইসবের সহায়তায় চন্দ্রপৃষ্ঠের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের কোথায় বরফ এবং জল সঞ্চিত রয়েছে তা খুঁজে বের করা হবে।
বিজ্ঞানী গ্লেজার আরও বলেছেন, যে রোভার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পাঠানো হবে সেটি চাঁদের ওই অংশে মাটি ভাল ভাবে পরীক্ষা করবে। এমনকি লুনার সয়েল পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ড্রিলিং বা খোঁড়াখুঁড়িও চালাতে পারে এই রোভার। এই রোবট রোভারের নাম দেওয়া হয়েছে Volatiles Investigating Polar Exploration Rover, or VIPER। এই রোবট রোভার অনেকটা স্টার ওয়ার্সের droids- এর মতো দেখতে। একটা গলফ কোর্টের আয়তনে (৫ ফুট বাই ৫ ফুট বাই ৮ ফুট) তৈরি হয়েছে এই রোভার। ওজন ৪৩০ কিলোগ্রাম। জানা গিয়েছে, চন্দ্রপৃষ্ঠে এই VIPER প্রায় বাস্তব সময়ের কাছকাছি পরিমাপেই কাজ করবে। এছাড়াও খুবই দ্রুত গতিতে (0.8 kph) চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ঘুরে বেরিয়ে পর্যবেক্ষণ চালাবে এই রোভার।
সৌরশক্তি চালিত রোবট রোভার VIPER- এ রয়েছে একটি ৫০ ঘণ্টা চলবে এমন ব্যাটারি। চরমতম তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে এই রোভার। শুধু তাই নয়, এর চলন অনেকটা কাঁকড়ার মতো। ফলে চারধারের অংশ ছড়িয়ে থাকায় সেগুলো সূর্যের আলো থেকে প্রচুর পরিমাণ শক্তি সংগ্রহ করে রাখতে পারে। উল্লেখ্য, নাসার এই রোবট রোভার VIPER- এর মূল কাজ হল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বরফ এবং তার মধ্যে সঞ্চিত জল খুঁজে বের করা। এখানেই শেষ নয়। কীভাবে বরফ সেখানে এল, এত বছর ধরে কীবে সঞ্চিত রয়েছে সবটাই জানার চেষ্টা করবে এই রোভার VIPER। কোথা থেকে বরফ জল এসেছিল, কীভাবে যঞ্চিত ছিল, আগামী দিনে কোথায় যেতে পারে— পুরো সময়কালই বোঝার চেষ্টা করবে নাসার রোবট রোভার VIPER।
আরও পড়ুন- Harvest Moon 2021: সেপ্টেম্বর মাসের ফুল মুন বা পূর্ণিমাকে কেন বলে ‘হার্ভেস্ট মুন’?