Bus: ড্রাইভারের ভাগে ১২ শতাংশ, কনডাক্টরের ৬! শহরের রাস্তায় বাসের রেষারেষির কারণ কি এটাই?
Bus: সূত্রের খবর, বাম আমলে ২০০২ সালে একবার সেই প্রচেষ্টা হয়েছিল। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরে পরেই ফের একবার সেই চেষ্টা হয়। কিন্তু বেসরকারি বাসে কমিশন প্রথা রয়ে গিয়েছে সেই একই জায়গায়।
কলকাতা: সরকারি বাস যেমন উধাও হয়ে যাচ্ছে, বেসরকারি বাসও ধুঁকছে। বাস তুলে নেওয়ার নেপথ্যে বাস মালিকদের মুখে যেমন ভাড়া বাড়ানোর কথা সামনে আসছে, তেমনই আসছে কমিশন প্রসঙ্গও। রেষারেষির জেরে যে বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে, তার পিছনে উঠে আসছে কমিশনের তত্ত্ব। কমিশন পদ্ধতি কীভাবে চলছে এ রাজ্যে?
২ দরজা থাকাকালীন, এক দরজার বাসে কমিশনের ভাগাভাগি ছিল অনেকটা এরকম- এক চালক পাবেন ১২ শতাংশ, অপর চালক পাবেন ১৫ শতাংশ। প্রথম কন্ডাক্টর ৬ শতাংশ ও দ্বিতীয় কন্ডাক্টর ৯ শতাংশ পাবেন।
আসলে মাসের শেষে ড্রাইভার বা কন্ডাক্টরদের বেতন নয়, বাস শিল্পে চালু রয়েছে কমিশন প্রথা। অর্থাৎ যত বেশি টাকা উঠবে, তত বেশি কমিশন মিলবে। দু’টি বাসে রেষারেষির কারণও যে কমিশন, এমন অভিযোগও বারবার উঠে এসেছে।
প্রশ্ন হল, কোনও সরকারই কেন কমিশন প্রথা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে না? পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বাম আমলে ২০০২ সালে একবার সেই প্রচেষ্টা হয়েছিল। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরে পরেই ফের একবার সেই চেষ্টা হয়। কিন্তু বেসরকারি বাসে কমিশন প্রথা রয়ে গিয়েছে সেই একই জায়গায়। পাশাপাশি বাস উঠে যাওয়ার নেপথ্যে আরও একটি বিষয় উঠে আসছে, তা হল ভাড়া। বাস মালিকদের অভিযোগ, তেল খরচ অনেক বেড়ে গেলেও ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারে চুপ পরিবহন দফতর। তাই নতুন বাস নামাতে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকে।
বেসরকারি বাস মালিকদের একাংশের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে কলকাতা শহর থেকে উধাও হয়ে যাবে ১২০০-র বেশি বাস। ধরা যাক, একটি বাস চললে তাতে যদি ১০০ যাত্রী যান, তাহলে সেখান থেকে কর্মসংস্থান হবে দু’জনের। আবার ওই ১০০ জন যাত্রী অটোতে উঠলে ২০ জনের কর্মসংস্থান হবে। প্রশ্ন হল, এটাই কি সরকারি নীতি, যার জন্য রাস্তায় বেরিয়ে হয়রানিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ? আরও একটা বিষয় উঠে আসছে, তা হল ভাড়া না বাড়ানোর যে জনমোহিনী নীতি নিয়েছে সরকার, তার ফলে কি বাস উঠে যাচ্ছে? আর ভাড়া না বাড়ানোর জন্য পরোক্ষভাবে হয়রানির শিকার হতে হত সাধারণ মানুষকে?
পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, “কমিশন প্রথা তোলার কথা বলা হয়েছে। কমিশন নেবে, আবার ড্রাইভার রেষারেষিও করবে! এটা বদলাতে হবে। এইভাবে বাস চালাতে দেওয়া হবে না। এটা নিয়ে অ্যাসোসিয়েশনকে বলেছি বদলাতে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে এক সপ্তাহ লাগবে। যে বেপরোয়া ভাবে চালাবে, তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হবে। ড্রাইভার ঠিক করবে সে কীভাবে চালাবে। আয় করার জন্য বেপরোয়া ভাবে চালানো যাবে না। মালিককেও নজর রাখতে হবে। এই জায়গায় সরকার কড়া হবে।”