Indian Navy in Kargil War: পাহাড়ের যুদ্ধ হলেও কার্গিলে প্রবলভাবেই ছিল নৌ-সেনা

পাহাড়ের যুদ্ধ হলেও কার্গিলে প্রবলভাবেই ছিল নৌ-সেনা। এমনকি কার্গিল যুদ্ধ জয়ের পিছনেও নৌ-সেনার ভূমিকা কম নয়। কার্গিল যুদ্ধের ২৫ বছর পূর্তিতে নৌ-সেনার সেই ভূমিকাই দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে চাইছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক।

Indian Navy in Kargil War: পাহাড়ের যুদ্ধ হলেও কার্গিলে প্রবলভাবেই ছিল নৌ-সেনা
| Edited By: | Updated on: Jul 22, 2024 | 10:59 AM

১৯৯৯-র ৩০ শে এপ্রিল বা পয়লা মে। ভারতের নৌ-সেনার সদর দফতর থেকে একটি টপ-সিক্রেট মেসেজ পৌঁছল নেভির সবকটি রিজিওনাল কমান্ডে। চার লাইনের ছোট্ট মেসেজ। মেসেজের মূল বক্তব্য, যে কোনও পরিস্থিতির জন্য অপারেশন রেডি স্টেজে থাকতে হবে নৌ-সেনাকে। আর সেটা করতে হবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। ২৪ ঘণ্টা, মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময়।

এই বার্তা আসার দিনই বিকেলে নেভি কম্যান্ডের বৈঠকের পরই এগোতে শুরু করে নৌ-সেনা বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ। মূলত নৌ-সেনার ওয়েস্টার্ন ও ইস্টার্ন ফ্লিটের যুদ্ধজাহাজ। নৌ-সেনার কাছে ম্যান্ডেটটা ছিল খুব স্পষ্ট। জলপথের চারদিক থেকে পাকিস্তানকে ঘিরে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে করাচি সহ পাকিস্তানের ৩টি প্রধান বন্দরে হামলা চালাতে হবে। পাকিস্তানের কোনও বন্দর দিয়ে কোনওভাবেই যেন কোনও জাহাজ বেরতে না পারে। জলপথে পাক সেনার সাপ্লাই লাইনও কেটে দেবে নৌ-সেনা। সাপ্লাই লাইন মানে, মূলত তেল ও অস্ত্রের সাপ্লাই লাইন। তেলের সাপ্লাই লাইন কেটে গিয়েছিল বলেই যুদ্ধটা প্রথমেই হেরে বসেছিল পাকিস্তান। তখন পাকিস্তানের ভাঁড়ারে মাত্র ৬ দিন তেল মজুত রয়েছে। নতুন করে বাইরে থেকে আর কোনও জাহাজ পাকিস্তানের বন্দরে ভিড়তেই দিইনি আমরা। নৌ-সেনা জানত, ১৯৭১-এর যুদ্ধে অপারেশন ট্রাইডেন্টের ধাক্কা ১৯৯৯ সালেও কাটিয়ে উঠতে পারেনি পাক সেনা। সেবার করাচি বন্দরে তাণ্ডব চালিয়েছিল ভারতের নৌ-সেনা। তাই ১৯৯৯ সালেও করাচি বন্দরের যতটা কাছে সম্ভব পৌঁছে দিতে চেয়েছিল ভারত। আর সেটাই হয়েছিল।

এসব যখন হচ্ছে, সবে কার্গিলের পাহাড় বেয়ে সবে ওঠা শুরু করেছে ভারতীয় সেনা। বায়ুসেনার অভিযান তখনও শুরুই হয়নি। তাই কার্গিল যুদ্ধটা যে সেনা ও নৌসেনাই শুরু করেছিল, এটা বললে ভুল হয় না। ভাবলে অবাক হতে হয়, এক রাতের মধ্যেই উত্তর আরব সাগরে পাক জলসীমার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল নৌ-সেনার ১১টি যুদ্ধজাহাজ সঙ্গে সাবমেরিন। এটা অবাক হওয়ার মতো ঘটনা এই কারণেই যে এক রাতের মধ্যে এক সঙ্গে এতগুলি যুদ্ধজাহাজকে মিশনে রওনা করানো – এমন নির্দশন দুনিয়ার ইতিহাসে বিরল। যুদ্ধের শুরু থেকে শেষ – নৌসেনার ৩৩টি যুদ্ধজাহাজ ঘিরে রেখেছিল পাকিস্তানকে। এটাই অপারেশন তলোয়ার। বা অপারেশন নাইন জিরো জিরো টু। কার্গিল যুদ্ধে নৌ-সেনার অপারেশন।

পাহাড়ের যুদ্ধ হলেও কার্গিলে প্রবলভাবেই ছিল নৌ-সেনা। এমনকি কার্গিল যুদ্ধ জয়ের পিছনেও নৌ-সেনার ভূমিকা কম নয়। কার্গিল যুদ্ধের ২৫ বছর পূর্তিতে নৌ-সেনার সেই ভূমিকাই দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে চাইছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক। অপারেশন তলোয়ারের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য, সেই অপারেশনের ধাঁচে নৌ-মহড়া, নৌ-সেনার ভূমিকা নিয়ে প্রদর্শনী করবে সেনা ও প্রতিরক্ষামন্ত্রক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কার্গিল যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি গোলাগুলি ব্যবহার হয়েছিল।সবমিলিয়ে প্রায় ৩ লাখের উপর গোলাগুলি, রকেট ও বোমা খরচ করেছিল ভারতের সেনা। আসলে, কার্গিল যুদ্ধের পরতে পরতে এখনও অনেক না-জানা ঘটনা।

Follow Us: