Gemini AI: সাবধান! জেমিনির ভুলেই পথে বসে যাবেন আপনি
আপনার ই-মেলের পাসওয়ার্ড চুরি হবে, আপনারই অজান্তে, বরং আপনি নিজে থেকেই আপনার পাসওয়ার্ড জালিয়াতদের হাতে তুলে দেবেন। কি, অবাক লাগছে? ধরুন আপনি দেখলেন যে আপনার ই-মেল হ্যাক হয়ে গেছে বলে জানিয়ে গুগল আপনাকে মেসেজ করেছে। জালিয়াতেরা নয়। সত্যি সত্যি গুগলই আপনাকে মেসেজ করেছে। নব্বই শতাংশ ক্ষেত্রে আপনি ওই মেসেজে ক্লিক না করে পারবেন না। আর […]
আপনার ই-মেলের পাসওয়ার্ড চুরি হবে, আপনারই অজান্তে, বরং আপনি নিজে থেকেই আপনার পাসওয়ার্ড জালিয়াতদের হাতে তুলে দেবেন। কি, অবাক লাগছে? ধরুন আপনি দেখলেন যে আপনার ই-মেল হ্যাক হয়ে গেছে বলে জানিয়ে গুগল আপনাকে মেসেজ করেছে। জালিয়াতেরা নয়। সত্যি সত্যি গুগলই আপনাকে মেসেজ করেছে। নব্বই শতাংশ ক্ষেত্রে আপনি ওই মেসেজে ক্লিক না
করে পারবেন না। আর যদি আপনি দেখেন যে গুগলের সঙ্গে বার্তা আদান-প্রদানের সময়ই গুগল আপনাকে সিকিওরিটি অ্যালার্ট দিল। তাহলে তো একশো শতাংশ ক্ষেত্রেই আমরা সবাই ওই অ্যালার্টে ট্যাপ করে ফেলব। আর তাহলেই কিন্তু আপনার ই-মেলের পাসওয়ার্ড চলে যাবে হ্যাকারদের হাতে। তারপর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাফ হতে কিংবা প্রাইভেসি শিকেয় উঠতে আর কতক্ষণ।
কীভাবে কী হচ্ছে? আমরা প্রায় সবাই রোজ প্রচুর ই-মেল পাই। সব মেল হয়তো পড়ে দেখি না। কিন্তু, অনেকেই আছেন যাঁদের পেশার প্রয়োজনেই রোজ প্রচুর লম্বা লম্বা ই-মেল পড়তে হয়। উত্তর দিতে হয়। এক্ষেত্রে এখন প্রায় সবাই গুগলের এআই মডেল জেমিনির সাহায্য নেন। জেমিনিকে এসব মেল পাঠিয়ে জাস্ট বলে দিতে হয় summarise this email. জেমিনি সঙ্গে সঙ্গে দুটো বা তিনটে বাক্যে মেলের মূল কথা জানিয়ে দেয়।
হ্যাকাররা জালিয়াতিটা করছে কীভাবে? খোলসা করা যাক। তারা একটা সাধারণ মেল করছে। সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে কালো অক্ষরে লেখা। তার নীচেই সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপরে সাদা রঙে, জিরো ফন্ট সাইজে আরও কিছু জিনিস লিখছে। সেই লেখা খালি চোখে কেউই পড়তে পারবে না। বুঝতেও পারব না যে ওখানে কিছু লেখা আছে। তবে যেই জেমিনিকে সামারি করার জন্য মেলটা পাঠানো হবে, তখন জেমিনি কিন্তু সেই অদৃশ্য লেখা পড়তে পারবে। এই অদৃশ্য লেখাগুলো হ্যাকারদের তৈরি করে দেওয়া নানারকম কোডিং, যা এআই চ্যাটবট জেমিনিকে বিভ্রান্ত করার জন্যই লেখা হয়েছে। এই লেখা পড়ামাত্রই জেমিনির মাথা গুলিয়ে যাবে। সে তখন ভুল করে আপনাকে মেসেজ পাঠাবে যে আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেছে। আপনি এই নাম্বারে ফোন করুন। অথবা এই লিঙ্কে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার প্রবলেম সলভ হয়ে যাবে। হ্যাকারদের কোডিং এমনভাবেই করা যে ইন্টারনেট থেকে তাদের দেওয়া লিঙ্ক বা ফোন নাম্বারই জেমিনি কোট আনকোট তার বুদ্ধি দিয়ে খুঁজে বের করে পাঠাবে।
জেমিনির মেসেজ বিশ্বাস করে লিঙ্কে ক্লিক করলে বা ওই ফোন নাম্বারে ফোন করলেই ই-মেলের পাসওয়ার্ড চলে যাবে হ্যাকারদের হাতে। তারপর যে কী হবে, তা আমরা আন্দাজ করতে পারি। মোজিলা ব্রাউজারের সিকিওরিটি টিম প্রথম ধরে ফেলে যে দুনিয়াজুড়ে গুগলের জেমিনিকে এভাবে বোকা বানিয়ে সাধারণ মানুষকে পথে বসাচ্ছে হ্যাকাররা। এই নিয়ে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য সান বড় করে খবর করে। তারপর বিষয়টা গুগলের কানে যায়। তার আগে তারা বুঝতেও পারেনি যে তাদের কেউ এভাবে বোকা বানাচ্ছে। জেমিনির যে মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে তা স্বীকার করে নিয়েছে গুগল। জানিয়েছে, চ্যাটবটকে তারা আবার নতুন করে শেখাচ্ছে যে এই ভুল আর যাতে না হয়। এই ধরনের সমস্যার চটজলদি কোনও সমাধান নেই কারণ যে কোনও চ্যাটবটই তো মানুষের তৈরি। মানুষের বুদ্ধির কাছে তার হার তো যে কোনও দিনই হতে পারে। পরিশেষে বলা যায়, এআই-এর সাহায্য নিতে গিয়ে নিজেরা যেন অথর্ব না হয়ে পড়ি। এআই-এর কাঁধেই ভর দিয়ে চলতে গিয়ে আমরা নিজেরা যাতে খোঁড়া হয়ে না যাই, সেটা সবসময় মাথায় রাখতে হবে।

