ISRO, Mission Chandrayaan: ইসরোর নতুন সাফল্য, আবার চন্দ্রযান
চন্দ্রযান থ্রি-র সময়ে যেটা হয়নি, চন্দ্রযান ফোরে সেটাই করতে চান ইসরোর বিজ্ঞানীরা। সেটা কী আদৌ সম্ভব? চন্দ্রযান ফোরের মিশন সদস্যরা বলছেন, অবশ্যই সম্ভব। চন্দ্রযান থ্রি-র সময় এইটা আমাদের ফার্স্ট প্রায়োরিটি ছিল না। প্রায়োরিটি ছিল, রোভার প্রজ্ঞান যাতে চাঁদ থেকে ঠিকঠাক তথ্য পাঠাতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা। প্রজ্ঞান নিজের কাজটা একদমই ঠিকঠাক করেছিল। আর করেছিল বলেই ১০ দিনের মাথায় তাকে স্লিপ মোডে পাঠানো হয়েছিল।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা। কিন্তু সেটা হবে কী করে? ১৪ দিন পর দক্ষিণ মেরুতে অন্ধকার নামলে রোভার তো ফের ঘুমিয়ে পড়বে। তখন কী হবে? এই গত বছরের কথাই মনে করুন না… চাঁদে নামার ১০ দিন পরেই রোভার প্রজ্ঞানকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিল ইসরো। আশা ছিল, দু-সপ্তাহ পর দক্ষিণ মেরুতে আলো ফুটলে আবার জেগে উঠতে পারে প্রজ্ঞান। কিন্তু, তার ঘুম আর ভাঙেনি। ভারতের দূত হয়ে চাঁদের মাটিতেই চিরতরে থেমে গিয়েছে সে। তা হলে কি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে কোনও মহাকাশযানের পক্ষেই ১৪ দিনের বেশি কাজ চালানো সম্ভব নয়? এই মিথটাই ভাঙার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ইসরোর টার্গেট, এমন এক মহাকাশযান চাঁদে পাঠানো হবে, যে অনেকটা সময় ওখানে থেকে কাজ করবে। ১৪ দিন নয়, অন্তত তিন থেকে চার সপ্তাহ। কারণ এইবার চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে নমুনা নিয়ে ফিরতেই হচ্ছে অভিযান। তবে চার সপ্তাহ ধরে সেখানে কাজ চালানো কি সম্ভব?
ইসরোর বিজ্ঞানীরা বলছেন, অবশ্যই সম্ভব। এজন্য আমরা দুটো দিক খতিয়ে দেখছি। এক, অন্ধকার নামার পরও রোভার যাতে কাজ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা। দুই, ১৪ দিন পর রোভার ঘুমিয়ে পড়লেও সূর্য ওঠার পর ফের তাঁকে কাজে নামানো। মানে, চন্দ্রযান থ্রি-র সময়ে যেটা হয়নি, চন্দ্রযান ফোরে সেটাই করতে চান ইসরোর বিজ্ঞানীরা। সেটা কী আদৌ সম্ভব? চন্দ্রযান ফোরের মিশন সদস্যরা বলছেন, অবশ্যই সম্ভব। চন্দ্রযান থ্রি-র সময় এইটা আমাদের ফার্স্ট প্রায়োরিটি ছিল না। প্রায়োরিটি ছিল, রোভার প্রজ্ঞান যাতে চাঁদ থেকে ঠিকঠাক তথ্য পাঠাতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা। প্রজ্ঞান নিজের কাজটা একদমই ঠিকঠাক করেছিল। আর করেছিল বলেই ১০ দিনের মাথায় তাকে স্লিপ মোডে পাঠানো হয়েছিল।
ইসরোর বিজ্ঞানী শিবন নাভালকারের বক্তব্য, আমরা জানতাম, প্রজ্ঞানের ঘুম ভাঙার চান্স কম। কিন্তু সেই চান্স ছিল না, এমন নয়। প্রজ্ঞানের সোলার প্যানেল এমনভাবে রাখা ছিল যে ওখানে সূর্যের আলো পড়লে, একটা সুইচ আপনা-আপনি চালু হয়ে যাবে। আর সেটা হলেই প্রজ্ঞানের ঘুম ভাঙবে। যদিও, শেষপর্যন্ত তা হয়নি। চন্দ্রযান ফোরে এই ধরণের একাধিক সুইচ থাকছে। এর সোলার প্যানেলও অনেক শক্তিশালী। তাতেও কাজ না হলে ইসরোর কন্ট্রোল রুম থেকে রোভারের ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা হবে। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে নাভালকারের দাবি, আমরা আসলে একটা মর্নিং বেল তৈরির চেষ্টা করছি। রোভার যেন এক ছাত্র। তাঁকে সময়ে তুলে দিতেই মর্নিং বেল।
চাঁদে অন্ধকার নামার পরও প্রজ্ঞান কাজ থামাবে না, সেটা কী করে সম্ভব? ইসরো সেটাও খতিয়ে দেখছে। এজন্য বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি পো-লেড প্রয়োজন। ল্যান্ডারকেও নতুন করে তৈরি করতে হবে। ইসরো কোনও সম্ভাবনাই বাদ দিচ্ছে না। গতবছর ২৩ অগাস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নেমেছিল চন্দ্রযান থ্রি। সব ঠিকঠাক চললে ২০২৭-র শেষ বা ২০২৮-র শুরুতে আবার চাঁদে পাড়ি দেবে ইসরো। তার এক বছরের মাথায় জাপানের সঙ্গে যৌথভাবে ফের চাঁদে অভিযান। ইসরোর ল্যান্ডারে চাঁদের মাটিতে নামবে জাপানের রোভার।