Ladakh Zorawar Tank: লাদাখের মতো প্রতিকূল এলাকায় লড়তে সক্ষম ট্যাঙ্ক তৈরি করেছে ভারত, পোশাকি নাম জোরাবর
Ladakh Zorawar Tank: লাদাখের মতো উঁচু ও প্রতিকূল এলাকায় লড়তে সক্ষম ট্যাঙ্ক তৈরি করে ফেলেছে ভারত। ডিআরডিও-র সঙ্গে যৌথভাবে এই ট্যাঙ্ক তৈরি করেছে এল অ্যান্ড টি। এর পোশাকি নাম জোরাবর। আমি আগেই স্ট্রেট কাটে বলেছিলাম, ভীষ্ম বা অর্জুনের মতো ট্যাঙ্ক ওজনে ভারি। লাদাখের মতো পাহাড়ি জায়গায় দরকার হালকা ট্যাঙ্ক। চার বছরের চেষ্টায় মিশন সফল।
২০২২ সালের ৯ মার্চ। ভারতের মিসাইল লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাকিস্তানে গিয়ে পড়েছিল। ফাঁকা জায়গায় পড়ে বলে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আবার কি এমন ঘটনা ঘটতে পারে? প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, না। কারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স যোগ হওয়ায় সেনার অস্ত্রশস্ত্র এখন আরও ধারালো, আরও নিখুঁত। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শুধুমাত্র সেনার ব্যবহারের জন্য ৭৫টি এআই টুলস তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। চলতি সপ্তাহে এর মধ্যে ৩২টি টুলসের ব্যবহার শুরু করেছে সেনা। মিসাইল, ট্যাঙ্কে, রাইফেলে বসেছে এআই টুলস। গতকাল আমি আপনাদের ব্যাটল ট্যাঙ্ক ভীষ্ম ও অর্জুনের কথা বলেছিলাম। ভীষ্ম-অর্জুনেও এআই টুলস ব্যবহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সেনা। যতটা খবর পাচ্ছি আর্মি ট্যাঙ্কে ফায়ার ফানেল নামে এআই টুলসটি যোগ হলে ট্যাঙ্কের ক্ষমতা একধাপে অনেকটা বাড়বে। লাদাখের মতো উঁচু ও প্রতিকূল এলাকায় লড়তে সক্ষম ট্যাঙ্ক তৈরি করে ফেলেছে ভারত। ডিআরডিও-র সঙ্গে যৌথভাবে এই ট্যাঙ্ক তৈরি করেছে এল অ্যান্ড টি। এর পোশাকি নাম জোরাবর। আমি আগেই স্ট্রেট কাটে বলেছিলাম, ভীষ্ম বা অর্জুনের মতো ট্যাঙ্ক ওজনে ভারি। লাদাখের মতো পাহাড়ি জায়গায় দরকার হালকা ট্যাঙ্ক। চার বছরের চেষ্টায় মিশন সফল। লাইটওয়েট ট্যাঙ্ক জোরাবর সব অর্থেই অত্যাধুনিক ও ভারতীয় সেনার প্রয়োজনের কথা ভেবে তৈরি। এই ট্যাঙ্ক থেকে একাধিক ড্রোন ফায়ার করা যায়। জোরাবর মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াম ঠাণ্ডাতেও টানা ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে পারে। লাদাখের মতো ভৌগলিক পরিবেশেও সমান কার্যকর থাকবে। তবে জোরাবরের সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজ হল এটি জলে ও স্থলে চলতে সক্ষম। হালকা বলে জোরাবরকে বিমানে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। প্যারাশুটে করে এয়ার ড্রপ করাও সম্ভব। এই প্রসঙ্গে আরও একটা খবর আপনাদের জানানো প্রয়োজন। আমেরিকার সঙ্গে যৌথভাবে অত্যাধুনিক সাঁজোয়া গাড়ি বা আর্মারর্ড ভেহিকেলস তৈরির কাজও শুরু করেছে ভারত। সেনা সূত্রে খবর মার্কিন সেনার অন্যতম সেরা অস্ত্র স্ট্রাইকারের ধাঁচে সাঁজোয়া গাড়ি ভারতেই তৈরি হবে। এজন্য দুপক্ষের কথাবার্তা প্রায় চূড়ান্ত। লাদাখ ও থর মরুভূমিতে ট্রায়ালের পর আনুষ্ঠানিকভাবে স্ট্রাইকার তৈরিতে চুক্তি করবে দু-দেশ। জোরাবর ও স্ট্রাইকার। দুটোতেই থাকবে লিভিট ক্যাটেগরির এআই টুলস। শক্রুর অবস্থান ও সম্ভাব্য হামলার আঁচ পেতে দুনিয়ার অন্যতম সেরা এআই টুলস বলে ধরা হয় লিভিটকে।
ভারতের সামরিক প্রস্তুতির অনেকটাই এখন চিনের কথা মাথায় রেখে। এটা সত্যি। কারণ পাকিস্তানের পক্ষে আমাদের সঙ্গে এঁটে ওঠা আর সম্ভব নয়। তবে যুদ্ধ বাদ দিয়ে জঙ্গি হামলার কথা যদি বলেন। তাহলে কিন্তু পাকিস্তানকে নিয়ে না ভেবে উপায় নেই। আমরা দেখছি গত কয়েকমাসে জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনা নতুন করে বেড়েছে। মাঝে কিছুটা কমেছিল। আবার বেড়েছে। বিশেষ করে কেন্দ্রে নতুন সরকার শপথ নেওয়ার পর হামলার তীব্রতা অনেকটাই বেড়েছে। অনেকে বলছেন দিল্লির নতুন সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাইছে জঙ্গিরা। দেখুন কাশ্মীরে জঙ্গি হানা নতুন কোনও ঘটনা নয়। বছরের নানা সময়ে হামলার কথা শুনতে পাই আমরা। কোথাও জঙ্গিদের আক্রমণের মুখে পড়েন গ্রামবাসীরা। আবার কখনও সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উপত্যকা। তবে ইদানিং কিন্তু জঙ্গিদের কৌশলে একটা বদল দেখা যাচ্ছে। কিংবা বহু পুরনো একটা কৌশল তারা আবার নতুন করে ফিরিয়ে এনেছে। ব্যাপারটা চিন্তার। নিয়ন্ত্রণরেখার বদলে জঙ্গিরা এখন আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে দক্ষিণ কাশ্মীরকে টার্গেট করছে। বলা ভাল টার্গেট করছে তাদের মেন্টর পাকিস্তান। গত কয়েকদিনের ঘটনা দেখলেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। প্রাক্তন সেনাকর্তারা বলছেন, এলওসি-র নিরাপত্তা এখন এতটাই মজবুত যে মাছি গলারও জো নেই। ফলে পাকিস্তান আর সেখান দিয়ে জঙ্গিদের ঢোকাতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে আজ থেকে দু-দশক আগের মতো জম্মুর পিরপাঞ্জাল রেঞ্জ হয়ে উঠেছে জঙ্গিদের নয়া এন্ট্রি পয়েন্ট। ফলে এপারে ঢুকে কাছাকাছি দক্ষিণ কাশ্মীরের নানা জায়গায় হামলা চালাচ্ছে তারা। দক্ষিণ কাশ্মীরের আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকা পাহাড় আর ঘন জঙ্গলে ঢাকা। প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে এই এলাকায় ভারতীয় সেনার দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে সন্ত্রাসবাদীরা। এইবার প্রশ্ন হল বেশ কিছুদিন চুপ করে থাকার পর আবার কেন মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা। একটা কারণ তো স্পষ্ট এখন অমরনাথ যাত্রা চলছে। কাশ্মীরে ট্যুরিস্টদের সংখ্যা বাড়ছে। এই সময়ে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে তারা। এছাড়া যেটা আরও বড় কারণ তা হল, সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা ভোটে কাশ্মীরের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছেন। যার মানে আম-কাশ্মীরিরা গণতন্ত্রের রাস্তায় হাঁটতে চাইছেন। এটা ভয় ধরিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের মনে। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরেও ইসলামাবাদের শাসন নিয়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সেখানকার মানুষ আজাদি চাইছেন। সূত্রের খবর অমরনাথ যাত্রা শেষ হলে জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হবে। সবটা দেখে পাক সেনা, আইএসআই-এর নার্ভ ফেল করছে। তাই জঙ্গি অনুপ্রবেশ বাড়িয়ে যে কোনও মূল্যে কাশ্মীরকে অশান্ত করতে চাইছে তারা। আরেকটা কথাও আমি বলবো। পাকিস্তানের এই নতুন চালে কি চিনের হাত রয়েছে? বিশেষজ্ঞদের মতে সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ অর্থনৈতিক দিক থেকে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানের পক্ষে এখন একা কিছু করে ওঠা বেশ কঠিন। গালওয়ানের ঘটনার পর চিন সীমান্তে আমাদের বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করতে হয়েছে। চিন বারবার সীমান্তে উস্কানি দিয়ে ভারতীয় সেনাকে ব্যস্ত রাখতে চাইছে। আর সেই সুযোগে তাদের বন্ধু দেশ পাকিস্তান কাশ্মীরে সন্ত্রাস তৈরি করতে চাইছে না তো? দুই প্রতিবেশির যৌথ উদ্যোগের সম্ভাবনাও কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।