Pandua News: ইঞ্জিনিয়ার আজ ঠাকুর বানান!
ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল মাটির প্রতিমা তৈরি করার। পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় বাড়িতেই দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছিল। প্রদীপ স্কুলে যেতেই তার মা সেই প্রতিমা জলে দিয়ে আসে। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে প্রতিমাকে দেখতে না পেয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেয়, জল থেকে সেই প্রতিমাকে তুলে পুনঃরায় দুর্গার রূপ দেয়। ব্যাস, তারপর থেকেই চলে আসছে তার প্রতিমা গড়ার কাজ।
ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল মাটির প্রতিমা তৈরি করার। পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় বাড়িতেই দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছিল। প্রদীপ স্কুলে যেতেই তার মা সেই প্রতিমা জলে দিয়ে আসে। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে প্রতিমাকে দেখতে না পেয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেয়, জল থেকে সেই প্রতিমাকে তুলে পুনঃরায় দুর্গার রূপ দেয়। ব্যাস, তারপর থেকেই চলে আসছে তার প্রতিমা গড়ার কাজ। প্রতিমা তৈরীর পাশাপাশি চলতে থাকে পড়াশোনা। বড় হওয়ার পরও সেই শখ চালিয়ে গেছে পান্ডুয়ার সিমলাগড়ের চাঁপাহাটি গ্রামের প্রদীপ মন্ডল। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে পলিটেকনিকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ আরামবাগের সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। ২০২০ সালে ৩ বছরের কোর্স করে ট্রেনিংও নিয়েছিল। এরপরেই চেন্নাইয়ে একটি শোলার সেলের কোম্পানিতে চাকরির সুযোগও পায়। কিন্তু লকডাউন ও করোনার জন্য পিছিয়ে আসতে হয় তাকে। পরিবারের একমাত্র ছেলেকে বাইরে পাঠাতেও রাজি ছিল না বাবা-মা। সারা দেশে যখন করোনা মহামারীর রূপ নিয়েছিল ঠিক তখনই লকডাউন ঘোষণা করেছিল সরকার। ফলে সেই চাকরি তাকে ছাড়তে হয়। এদিকে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে কিভাবে সংসার চলবে তাও ভেবে উঠতে পারছিল না। এ রাজ্যে সরকারি চাকরির অবস্থা খুব খারাপ তাই আর চেষ্টা করেনি। আর বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করে পরিবার চালানো অসম্ভব।তাই শেষমেষ কোন পথ না পেয়ে বাধ্য হয়েই প্রতিমা তৈরি কাজ শুরু করে। যদিও প্রতিমা গড়ার কাজ কারোর কাছেই শেখেনি প্রদীপ। লক্ষ্মী, বিশ্বকর্মা, মনসা ,কালীর পাশাপাশি এ বছরই প্রথম বৈঁচিগ্রাম জিটি রোডের পাশে চলছে দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ। বিভিন্ন বারোয়ারি পুজো কমিটি গুলির থেকে এসেছে বায়না।আর কয়েকদিন বাদেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। তাই এখন নাওয়া খাওয়া ভুলে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত প্রদীপ। প্রদীপের বাবা দীপক কুমার মন্ডল বলেন, ছেলের ছোট থেকেই শখ প্রতিমা গড়ার। তাতে আমরা কোন সময় বাধা দিইনি, বরং উৎসাহ দিয়েছি। আমার অসুস্থতার কারণে চাকরি পেয়েও তাকে ছাড়তে হয়েছিল।ইচ্ছা ছিল ছেলে রেলে চাকরি করবে,তবে এখন এই পথকে বেছে নিয়েছে। ছেলেকে শিক্ষিত করিয়েছি, তাই সে যে কাজই করুক না কেন ছোট নয়। প্রদীপ বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরে শোলারের একটি ট্রেনিং করি। পরে চেন্নাইতে একটি কোম্পানিতে চাকরি পায়। লকডাউন ও বাবার অসুস্থতার কারণে সেই চাকরিতে যোগ দিতে পারিনি। তারপর থেকেই কয়েক বছর বাড়িতে বসে থাকতে হয় তাকে। ছোটবেলায় খেলার ছলে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করায় আজ সেটাই পেশা হয়ে গিয়েছে। এ রাজ্যে চাকরির পরিস্থিতি খুব খারাপ সরকারি চাকরি নেই বললেই চলে। প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করলে সেখানে যা মাইনে দেবে তা দিয়ে সংসার চলবে না । তাই নিজের পায়ে দাঁড়াতেই প্রতিমায় শিল্পীকেই হাতিয়ার করে নিয়েছি। আগামী দিনে এই শিল্পকে আরো বড় করে তুলতে চাই।যেখানে আমার মত আরও অনেক বেকার ছেলে কাজ পাবে।।