দেশ-বিদেশের নানা অজানা তথ্য ‘স্ট্রেট কাট’-এ

মালদ্বীপকে খাদের কিনারা থেকে তুলে আনতে ভারতীয় সেনার অপারেশন। ১৯৮৮ সালের ৩রা নভেম্বর। বিদেশমন্ত্রকের কাছে মালদ্বীপ থেকে সাহায্য চেয়ে জরুরি বার্তা এসে পৌঁছয়। শ্রীলঙ্কার এক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেনা অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেছেন ওদেশের বড় ব্যবসায়ী আবদুল্লা লুথুফি। ভারতীয় সেনার তিন বাহিনীই একসঙ্গে অপারেশনে নেমে মালদ্বীপকে বাঁচায়। এরকম যৌথ অভিযান সচরাচর দেখা যায় না। তবে...

দেশ-বিদেশের নানা অজানা তথ্য ‘স্ট্রেট কাট’-এ
| Edited By: | Updated on: Mar 23, 2024 | 11:21 PM

মালদ্বীপকে খাদের কিনারা থেকে তুলে আনতে ভারতীয় সেনার অপারেশন। ১৯৮৮ সালের ৩রা নভেম্বর। বিদেশমন্ত্রকের কাছে মালদ্বীপ থেকে সাহায্য চেয়ে জরুরি বার্তা এসে পৌঁছয়। শ্রীলঙ্কার এক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেনা অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেছেন ওদেশের বড় ব্যবসায়ী আবদুল্লা লুথুফি। ভারতীয় সেনার তিন বাহিনীই একসঙ্গে অপারেশনে নেমে মালদ্বীপকে বাঁচায়। এরকম যৌথ অভিযান সচরাচর দেখা যায় না। তবে সময়ের দাবি মেনে এবার এটাকেই নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করে ফেলতে চলেছে আমাদের সেনা। সোজা কথায় অ্যাটাক কিংবা ডিফেন্স। সব সময়ই সেনার তিন বাহিনীকে একইসঙ্গে অভিযানের জন্য তৈরি থাকতে হবে। অন্তত ৭৫ দিন টানা যুদ্ধ চালানোর প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাইছে ভারতীয় সেনা। সেজন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রক অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করছে। যার মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সেনার হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র তুলে দেওয়া। সঙ্গে সাইবার ওয়ার। স্পেস ওয়ার। ভাইরাস ওয়ার ও টেকনো ওয়ারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। এরই একটা পার্ট হল এই তিন বাহিনীর একসঙ্গে যুদ্ধের মেকানিজম। এ সপ্তাহেই সেনার জন্য প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র কেনায় ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আগামী ৫ বছরে এই খাতে সাড়ে ৩ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হবে। এটাও ওই অ্যাকশন প্ল্যানেরই অংশ।

 

এগিয়ে আসছে লোকসভা ভোট। আমরা সকলেই সাদা চোখে দেখতে পাচ্ছি শাসক-বিরোধী সব পক্ষই মহিলা ভোটারদের মন জয়ের জন্য একটু বেশিই মরিয়া। রাজনৈতিক নেতারা বুদ্ধিমান। তাঁরা নিশ্চই হিসেব না কষে এই স্ট্র্যাটেজি নেননি। Centre for Studies in Social Sciences-এর সমীক্ষা প্রমাণ করছে বুদ্ধি তাঁদের ভালই আছে। সমীক্ষা বলছে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন। দু-ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে মহিলাদের পছন্দ সংখ্যায় কম রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তুলনায় পুরুষেরা অনেক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ভোট দিচ্ছেন। মানে আমরা যদি মহিলাদের ৫০ জনের একটা গ্রুপ বেছে নিই। তাহলে দেখব তাঁরা হয়ত ২টো কি ৩টে দলকে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু পুরুষদের ৫০ জনের একটা গ্রুপকে বেছে নিলে দেখা যাবে তাঁরা সেখানে ৭-৮টা দলকে ভোট দিয়েছেন। তাই মহিলারাই হয়ে দাঁড়াচ্ছেন ভোটের ডিসাইডিং ফ্যাক্টর। তাই তাঁদের মন রাখার চেষ্টায় মরিয়া সব দল। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে এইবার লোকসভা ভোটে প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার ভোট দেবেন। এঁদের মধ্যে পুরুষ ভোটার প্রায় ৫০ কোটি। বাকি ৪৭ কোটি মহিলা ভোটার। কিন্তু গত লোকসভা ভোটের তুলনায় এই ফারাকটা অনেকটাই কমে গেছে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মহিলাদের গুরুত্ব বেড়ে গেছে আরও।

 

হাতের ওপর হাত রাখা খুব সহজ নয়। সারা জীবন বইতে পারা সহজ নয়। তবে কেউ যদি বইতে পারেন জীবন পেরিয়েও। জীবন মরণের সীমানা ছাড়িয়েও। ওঁরা হয়ত পারলেন। নেদারল্যান্ডসের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দ্রিস ভন অগত ও তাঁর স্ত্রী ইউজিন ভন অগত। দুজনেরই বয়স হয়েছিল ৯৩. সেই ২৩ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল ওঁদের। তারপর ৭০ বছরের দাম্পত্য জীবন। ইদানিং শরীর আর দিচ্ছিল না। কালের নিয়মে দুজনকেই গ্রাস করেছিল জরা। তাই দুজনে হাতে হাত রেখে সহমরণে গেলেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন দ্রিস। ক্রিশ্চান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নামে একটা রাজনৈতিক দলও তৈরি করেন। দ্য রাইটস ফোরাম নামে এক মানবাধিকার সংগঠনেরও কর্ণধার ছিলেন দ্রিস। ওই সংগঠনই সারা দুনিয়াকে এই মৃত্যু সংবাদটা দেয়। তারা জানিয়েছে কোনও স্পেশাল ক্লিনিকে নয়। নিজেদের গ্রামের বাড়িতে সহমরণে গেছেন দ্রিস আর ইউজিন। দুজনকেই বিষ ইঞ্জেকশন দেওয়ার সময় দ্রিস তাঁর গার্লের হাত ধরে ছিলেন। স্ত্রীকে যে মাই গার্ল বলেই ডাকতেন দ্রিস। নেদারল্যান্ডসে সেই ২০০২ সাল থেকেই ইউথেনেশিয়া বা নিষ্কৃতি মৃত্যু আইনগতভাবে বৈধ। গত বছরেই সরকারি অনুমতি নিয়ে প্রায় ৩০ জন দম্পতি স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেন। যত দিন যাচ্ছে ততই ওদেশে নিষ্কৃতি-মৃত্যুর প্রবণতা বাড়ছে। তিরানব্বইয়ের বৃদ্ধ দম্পতিকে দেখলেন। এবার তেইশের এই তরুণীকে দেখুন। নাম লিলি তাই। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে বাড়ি। লিলির একটা অসুখ ছিল। অটো-ইমিউন অটোনমিক গ্যাংগ্লিওনোপ্যাথি। স্নায়ুতন্ত্রের জটিল অসুখ। ১৭ বছর বয়সে রোগ ধরা পড়ে। তারপর আস্তে আস্তে হাঁটাচলার ক্ষমতা পুরোপুরি চলে যায়। আর দিনে চব্বিশটা ঘণ্টা সারা শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা। এ রোগ সারার নয়।প্যালিয়েটিভ কেয়ারেও কোনও লাভ হচ্ছিল না। গত কয়েকটা বছর হাসপাতালেই শয্যাশায়ী ছিলেন লিলি। বিরামহীন জীবনযন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে নিষ্কৃতি-মৃত্যুর আবেদন করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া সরকার তাতে সায় দেয়। মৃত্যুর আগে লিলির শেষ ইচ্ছে ছিল সমুদ্র দেখার। বিছানায় শুইয়েই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সি-বিচে। সমুদ্রের ঢেউ দেখতে দেখতে শেষ বার পছন্দের আলু ভাজা আর কোল্ড ড্রিঙ্ক খান লিলি। তারপর হাসপাতালে ফিরে ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই সব শেষ। লিলির জীবনের শেষ দিনগুলো নিয়ে দুনিয়ার নানা সংবাদমাধ্যম খবর করে। গতবছর লিলির মতোই প্রায় ৩০ জন মানুষকে নিষ্কৃতি-মৃত্যুর অনুমতি দেয় অস্ট্রেলিয়া সরকার। আমাদের দেশে এরকম মৃত্যু আইনসিদ্ধ নয়। শুধু পরোক্ষ নিষ্কৃতি-মৃত্যুর অনুমতি আছে। তবে সেজন্যও যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়। এবার সুপ্রিম কোর্ট সেই ব্যাপারটাকেই সহজ করে দিয়েছে। অরুণা শানবাগের কথা নিশ্চই আপনাদের মনে থাকবে। ১৯৭৩ সালের ২৭শে নভেম্বর। অরুণা তখন মুম্বইয়ের কিং এডওয়ার্ড হাসপাতালের নার্স। নাইট ডিউটিতে হাসপাতালের এক ওয়ার্ড বয় অরুণাকে ধর্ষণ করে। চেন দিয়ে চেপে ধরা হয় গলা। পরদিন সকালে অজ্ঞান অবস্থায় অরুণাকে পাওয়া যায়। গলায় চেন এত জোরে চেপে বসেছিল যে ৮ ঘণ্টা তাঁর মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছয়নি। তিনি কোমায় চলে যান। তখন থেকেই টানা ৪২ বছর কিং এডওয়ার্ড হাসপাতালের বিছানাতেই শুয়ে ছিলেন অরুণা। হাসপাতাল কর্মীরা তাঁকে এত যত্নে রেখেছিলেন যে ৪২ বছর বিছানায় শুয়ে থাকলেও একটুও বেড সোর হয়নি। ২০১৮ সালের মার্চে নিউমোনিয়ায় অরুণা মারা যান। তার আগেই ২০১১ সালে সমাজকর্মী পিঙ্কি বিরানি অরুণার জন্য নিষ্কৃতি মৃত্যু চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু হাসপাতালের কর্মীরা তার বিরোধিতা করায় শীর্ষ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। তবে বিচারপতিরা বলেছিলেন এইরকম ক্ষেত্রে নিষ্কৃতি মৃত্যুর আইনি স্বীকৃতি থাকা উচিত। পরে সুপ্রিম কোর্ট এনিয়ে একটা গাইডলাইন তৈরি করে দেয়। দেখুন যাঁর প্রিয়জন আর কখনও ফিরবেন না। শুধু জীবন্মৃত অবস্থায় বেঁচে থাকবেন। তাঁর কষ্ট কতটা তা বুঝতে আমাদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কষ্টবোধ যদি অবশিষ্ট থাকে তাহলে চিরকালের জন্য শয্যাশায়ী মানুষটার কী অবস্থা তাও আমাদের কারোর বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। এরপরে তো লাইফ-সাপোর্ট সিস্টেমে রাখার খরচ-সহ অন্যান্য বিষয় আছেই। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর অনারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্তের জন্য পরোক্ষ নিষ্কৃতি মৃত্যুর দরজা খুললেও বিষয়টা খুব সহজ ছিল না। ছিল নানারকম লাল ফিতের ফাঁস। অবশেষে শীর্ষ আদালত নিজেই সেই ফাঁসগুলো আলগা করে দিয়েছে।

এবার আপনাদের একটা আশঙ্কার খবর দিই। এক একনায়কের পেশি আস্ফালনে আরও একটা যুদ্ধের টেনশন। পরপর মিসাইল পরীক্ষা শুরু করেছে উত্তর কোরিয়া। কিম জং উনের সামনেই তাঁর সেনারা মিসাইল ছোঁড়ে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর কিমের নতুন অস্ত্রের নাম পাদাসুরি-সিক্স। মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র যা কিনা দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের অনেকটা ভিতরে গিয়েও আঘাত করতে সক্ষম। তবে হাতের তাসটা তখনই দেখাননি উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক। সেটা দেখালেন পরে। মিসাইল মহড়ার পরই পিয়ংইয়ংয়ের ঘোষণা যে কোরীয় উপসাগরে নিজেদের জলসীমায় বিদেশি হস্তক্ষেপ তারা সহ্য করবে না। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই সেখানে মোতায়েন করা হবে সাবমেরিন ও আন্ডার ওয়াটার ড্রোন। যে দুটোই আবার পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। কিমের এই হুমকি এখন জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে খুব বড় চ্যালেঞ্জ। ইতিমধ্যেই উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়কের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে জাপান। দক্ষিণ কোরিয়া এখনও চুপ। ঘটনা হল কিমের হাতে থাকা নিউক্লিয়ার আন্ডার ওয়াটার ড্রোন সাগরে নামলে পরিণাম মারাত্মক হতে পারে। শুধু জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া নয়। গোটা দুনিয়ার সামনেই বড়সড় সিকিউরিটি থ্রেট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা। কারণ উত্তর কোরিয়ার সেনা যাকে ওয়ান্ডার বয় বলে ডাকে। সেই আন্ডার ওয়াটার ড্রোন মার্কিন মারণাস্ত্রের সঙ্গেও টক্কর দিতে পারে।

Follow Us: