কী হবে যোগ্যদের, আদৌ ফিরে পাবেন চাকরি? ‘উদোর পাপে বুধো বেকার!!’
রাজ্য জুড়ে লাগামছাড়া চাকরি চুরি! ঘুষ দিল অযোগ্যরা, চাকরি গেল যোগ্যদেরও। পুরো প্যানেল বাতিল আদালতে। কী হবে যোগ্যদের, আদৌ ফিরে পাবেন চাকরি? দেখুন TV9 বাংলা নিউজ সিরিজ ‘উদোর পাপে বুধো বেকার!!’
ঘড়ির কাঁটা ঘুরছে। ঘুরছে পৃথিবী। একদিন। দুদিন। তিনদিন। দেখতে দেখতে হাজার দিন। এগারোশো দিন। আরও একমাস। তারপর সেই দিনটা এল। সেদিন কলকাতা পুড়ছে রোদের তাপে। ঘড়িতে সকাল ১০ টা। অনেক আন্দোলন লড়াইকে পিছনে ফেলে রেখে, শয়ে শয়ে চোখ তাকিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দিকে। বিচারের আশায়। ২২ এপ্রিল ২০২৪। সোমবার। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় রায়দানের দিন। কত পথ ঘুরেছে এই মামলা! কত বিচারপতির এজলাসে কত দিন ধরে চলেছে লড়াই। এবারে বিচারের পালা। রায় দিল আদালত। বাতিল হল ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল। ২২০০০ হাজারের বেশি কর্মরত শিক্ষক আবার অন্ধকারে। অন্ধকারে ওদের ভবিষ্যৎ। যোগ্য হওয়াটা কি পাপ এই পোড়া দেশে? সব মিলিয়ে পঁচিশ হাজার পরীক্ষার্থীর এই পরিণতির জন্য দায়ী কে? ভোটের হাওয়ায় শাসক বলে বিরোধী, বিরোধী বলে শাসক। কেন্দ্র বলে রাজ্য। রাজ্য বলে কেন্দ্র। আর ওই ছেলেমেয়েগুলো? যাদের স্বপ্ন ভাঙলো তাদের ভবিষ্যৎ কী? দুর্নীতির দায় কি এড়াতে পারবে রাজ্যের শাসক? যোগ্যরা কি নিজেদের শিক্ষক হিসেবে দেখতে পাবেন কোনও দিন? এই রায় কী প্রমান করল? রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদন্ড কি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে? দুর্নীতির গভীর জলের মাছেদের কী শাস্তি মিলবে? নাকি আবারও চলবে গড়িমসি? আজকের নিউজ সিরিজ ‘উদোর পাপে বুধো বেকার!!’।
আজকের নিউজ সিরিজে রয়েছে চারটি পর্ব, ঠক বাছতে গাঁ উজাড়, চাকরি চুরির রাজনীতি!, যোগ্য বনাম অযোগ্য, শাসক নিশানায় আদালত।
ঠক বাছতে গাঁ উজাড়
আপনাদের তিনটি ঘটনার কথা বলি, একবার এসএসসি পাশ করে স্কুলে চাকরি করছিলেন কল্যাণীর এক শিক্ষক। ২০১৬ সালে আবার পরীক্ষা দিয়ে বাড়ির কাছের স্কুলে চাকরি পান। এখন কপাল চাপড়াচ্ছেন। দোষ কোথায়? প্রশ্নটা তুলছেন নদিয়ার প্রবীর মজুমদারও। চাকরি করতেন পুলিশে। এগারো বছর চাকরি করার পরেও স্কুলে চাকরি করার স্বপ্নটা রয়েই গিয়েছিল। ষোলোর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পাশ করে ২০১৮ সালে স্কুলে যোগ দেন। তারপর? তারপর এই দশা! কেন্দ্রের চাকরিতে ডিএ বেশি তাও কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে ২০১৬ সালে এসএসসি-তে বসেছিলেন মেদিনী পুরের বিপ্লব সাউ শুধুমাত্র বাড়ির কাছে চাকরি করবেন বলে। পরিবারের সঙ্গে থাকবেন বলে। অসাধুদের জন্য কেন যোগ্যদেরও ভুগতে হবে?
চাকরি চুরির রাজনীতি!
দুর্নীতি। দুর্নীতির ব্ল্যাক হোলে রাজ্য। তৃণমূল কংগ্রেসের ৪ মন্ত্রী-বিধায়ক গারদে রেশন থেকে চাকরি চুরির অভিযোগে। রাজ্যে প্রতিদিন রেড করছে ইডি, সিবিআই, এনআইএ। এই পাহাড় প্রমান দুর্নীতির ফল কাদের ভুগতে হচ্ছে? আমাকে, আপনাকে আমাদের মত পরিবারের ছেলেমেয়েগুলোকে যারা স্বপ্ন দেখেছিল শিক্ষক হওয়ার। সমাজের মেরুদন্ড শক্ত করার। কিন্তু আজ এই দুর্নীতির পাহাড়ে প্রশ্ন উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়েই। হাই কোর্ট বাতিল করেছে প্যানেল। এখন সুপ্রিম কোর্টে আবার গড়িয়েছে জল। সে দিকেই তাকিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু রাজনীতির জল গড়াচ্ছে কোন দিকে?
যোগ্য বনাম অযোগ্য
চাকরি চাকরি। নিজের হকের চাকরি। চুরি যাওয়া চাকরির দাবিতে যখনই যোগ্যরা রাস্তায় নেমেছে তাদের ওপর নেমে এসেছে পুলিশের লাঠি। জোর করে হয়েছে কণ্ঠ রোধ। করা হয়েছে তাদের। ভেঙে দেওয়া হয়েছে আন্দোলন। মেও রোডে দিনের পর দিন ধরে ধর্নায় বসে থাকা ছাত্র ছাত্রীরা মমতা বান্দ্যোপাধ্যের কাছে বারবার পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এত কান্না, এত লড়াইয়ের ফল হয়েছে শূন্য! শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। দাবি করা হয়েছিল সুপার নিউমেরিক পদ তৈরির! কিন্তু সরকার কি পারে অতিরিক্ত পদ তৈরি করতে? তাও এই পথে এগোচ্ছিল সরকার? সেটা কি সবাই জেনেও চুপ করেছিলেন? নাকি আদালতের রায়ে বোধোদয় হচ্ছে রাজ্যের শাসকদলের? অযোগ্যদের সুযোগ দিতেই কী এই পন্থা? অযোগ্যদের জন্য কেন এত নমনীয় সরকার?
শাসক নিশানায় আদালত
দুর্নীতি চলেছে, দিনের পর দিন ধরে চলেছে। কাক পক্ষিতেও টের পায়নি। কত নাম জড়িয়েছে দিনে দিনে কুন্তল, শান্তনু কত নাম! তাঁদেরকে জেরা করে আরও নাম বেরোবে কিনা সে আশাতেও বসে ছিল রাজ্যবাসী। কিন্তু না তার হেলদোল নেই। এখন দুর্নীতি নিয়ে, শুধুই চলছে রাজনীতি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে নীরব সবাই কিন্তু এই রায় নিয়ে কোর্টের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূলের নেতারা। এসএসসি প্যানেল বাতিলের পর থেকেই সুর ছড়িয়েছেন শাসক নেতারা। কেন? দুনীতি প্রমান হচ্ছে দিনে দিনে? কী বলছে এসএসসি?