শাসক বদলের সঙ্গেই কী বদলে গেল বাংলাদেশ? বাংলাদেশের ইতিহাসে সাম্প্রদায়িকতা কীভাবে প্রভাব ফেলেছে বারবার?

শাসক বদলের সঙ্গেই কী বদলে গেল বাংলাদেশ? বাংলাদেশের ইতিহাসে সাম্প্রদায়িকতা কীভাবে প্রভাব ফেলেছে বারবার?

TV9 Bangla Digital

| Edited By: Tapasi Dutta

Updated on: Dec 01, 2024 | 11:14 PM

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্মম অত্যাচার। টার্গেটেড কিলিং। অভিযোগ বরাবরই ছিল। অবস্থার চরম অবনতি হল শেষ কয়েক মাসে। ১৮ ই নভেম্বর ২০২৪। জ্বলতে থাকা আগুনে ঘি দিল ইস্কনের প্রাক্তন কর্তা ও সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর অ্যারেস্ট। কেন গ্রেফতার? কিভাবে একটা অ্যারেস্ট ছড়িয়ে দিল আগুন? শাসক বদলের সঙ্গেই কী বদলে গেল বাংলাদেশ? বাংলাদেশের ইতিহাসে সাম্প্রদায়িকতা কীভাবে প্রভাব ফেলেছে বারবার? কোন পথে যাচ্ছে পদ্মাপাড়ের রাজনীতি? আমাদের রাজ্য বা দেশেই বা কতটা আসবে পড়শি দেশের আগুনের আঁচ? 

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্মম অত্যাচার। টার্গেটেড কিলিং। অভিযোগ বরাবরই ছিল। অবস্থার চরম অবনতি হল শেষ কয়েক মাসে। ১৮ ই নভেম্বর ২০২৪। জ্বলতে থাকা আগুনে ঘি দিল ইস্কনের প্রাক্তন কর্তা ও সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর অ্যারেস্ট। কেন গ্রেফতার? কিভাবে একটা অ্যারেস্ট ছড়িয়ে দিল আগুন? শাসক বদলের সঙ্গেই কী বদলে গেল বাংলাদেশ? বাংলাদেশের ইতিহাসে সাম্প্রদায়িকতা কীভাবে প্রভাব ফেলেছে বারবার? কোন পথে যাচ্ছে পদ্মাপাড়ের রাজনীতি? আমাদের রাজ্য বা দেশেই বা কতটা আসবে পড়শি দেশের আগুনের আঁচ?

সন্ত্রস্ত সংখ্যালঘু

২২ নভেম্বর , ২০২৪। রংপুর। আট দফা দাবিতে সনাতনী জাগরণ মঞ্চের সমাবেশ। মানুষের ভিড়ে ছয়লাপ। মাথায় বাঁধা বাংলাদেশের পতাকা। হাতে গেরুয়া পতাকা। দাবি আদায়ে অনড়। রংপুরের মাটি কাঁপিয়ে সেদিন জানান দিচ্ছিলেন তাঁরা। সেদিনও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুখে শোনা গিয়েছিল আগুনে ভাষণ। জ্বালাময়ী ভাষণ। তারপর? পুলিশ কেস। কেস রাষ্ট্রদ্রোহের। সিডিশন। কেস জাতীয় পতাকা অবমাননার। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে। কিন্তু থামানো যায়নি তাকে। বরং কেসের পর আরও ঝাঁঝ বেড়েছিল সংখ্যালঘুদের আন্দোলনের। হিন্দুরা কোনঠাসা বাংলাদেশে! নির্মম অত্যাচারের শিকার। তবে এর শুরুটা কবে? একটি ঘটনা মনে করাব আপনাদের। আমার, আপনার খুব চেনা একজন মানুষ। হিংসার কবলে জ্বলে গিয়েছিল তাঁর সব স্বপ্ন। সেই হিংসা রাজনৈতিক না সাম্প্রদায়িক?

পদ্মাপাড়ে রক্তগঙ্গা

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই জুটলো পূর্ব পাকিস্তানের তকমা। বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা হবে ঊর্দু! জোর করে চাপানো হল এই অর্ডার। সেদিনও কট্টর মৌলবাদের কবলে ছিল বাংলাদেশ। বাঙালি হিন্দুদের উপর অত্যাচার তো ছিলই,
ভাষার বিদ্বেষে, হিংসার কবলে প্রাণ হারিয়েছিলেন মুসলিমরাও। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। গোটা বিশ্ব দেখলো পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো সামরিক আত্মসমর্পণ। স্বাধীন বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশে আর কোনো বাধা রইলো না। মার্চ থেকে ডিসেম্বর, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ দীর্ঘ নয় মাস পর অবশেষে বাস্তবে রূপান্তরিত হলো। আজ যখন ভারত বিদ্বেষের হাওয়া। সংখ্যালঘুদের উপর অকথ্য অত্যাচার। তখন ইতিহাসের এই অধ্যায়গুলোই উঠে আসে।

পালাবদলে অরাজকতা

২৮ নভেম্বর ২০২৪। শেখ হাসিনা তীব্র নিন্দা করলেন ইউনুস সরকারের। অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে। দাবি জানালেন। তিনি এখন কোথায়? উত্তরটা স্পষ্ট নয়। তবে একটা জিনিস স্পষ্ট। তার দেশ ছেড়ে পালানোর কারণ। তার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে বাড়তে থাকা নৈরাজ্যের ছবি। কোন পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছিল তাকে? ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপট কী? সেখানেই কি লুকিয়ে ছিল মৌলবাদের বীজ? ইউনূসের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক ভাল নয়। অতীতে ইউনুস প্রকাশ্যেই ট্রাম্প বিরোধিতায় ডেমোক্র্যাটিক ক্যাম্পেনের অংশ হয়েছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প সরকার আসায় বাংলাদেশে ইউনুস সরকারের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে? ভারতেই বা তার প্রভাব কী?

 ও-পারে সন্ত্রাস, এ-পারে প্রতিবাদ

পুড়ছে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি। একের পর এক হিন্দু প্রাণ হারাচ্ছেন, গ্রেফতার হচ্ছেন। ভেঙে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে মন্দির-মঠ। প্রাণভয়ে পালাতে চাইছেন সবাই। এককথায় এটাই এখন বাংলাদেশ। সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীন। এই ভিত্তিতেই কলকাতায় জ্বলে উঠল আন্দোলনের আগুন। ঝরলো রক্ত। রাজ্যে ক্রমশ সুর চড়াচ্ছে বিজেপি। বর্ডার অভিযান থেকে বাংলাদেশে সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকি। ভয় হচ্ছে, পাল্টা প্রতিঘাতের লড়াইয়ে রাজ্যের বা দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট হবে না তো? চোখের বদলে চোখ নেওয়ার রাজনীতি উঠে আসবে না তো? ধর্মের রাজনীতি সেনসিটিভ। স্পর্শকাতর। বাংলাদেশে শান্তি ফিরুক। শান্তি ফিরুক সব ধর্মের মানুষের জীবনে। প্রতিহিংসার ঘৃণ্য রাজনীতি বন্ধ হোক। এটুকুই কামনা।