সরকারি হোম থেকে ফিরে মেয়ে বলল, ‘সেফটিপিন দিয়ে হাতে নাম লিখতে বাধ্য করেছে দিদিরা’

অভিযোগ, শারীরিক নিগ্রহের পাশাপাশি সেফটিপিন দিয়ে তাদের নাম লিখতেও বাধ্য করেছে তাকে।

সরকারি হোম থেকে ফিরে মেয়ে বলল, 'সেফটিপিন দিয়ে হাতে নাম লিখতে বাধ্য করেছে দিদিরা'
প্রতীকী চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jan 06, 2021 | 6:40 PM

হাওড়া: সরকারি হোমে নাবালিকার উপর অত্যাচারের অভিযোগ। এবার হাওড়ার লিলুয়া। শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ উঠল হোমেরই সিনিয়র আবাসিকদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই নাবালিকাকে হোমের সিনিয়র দিদিরা সেফটিপিন দিয়ে হাতে নাম খোদাই করতে বাধ্য করে। পুলিস তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পাঠালেও এখনও আতঙ্কে, যন্ত্রণায় কুঁকড়ে রয়েছে ওই নাবালিকা। তদন্তে বেলুড় থানার পুলিস। যদিও এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ হোম কর্তৃপক্ষ।

গত ১৫ ডিসেম্বর বাবার কাছে বকুনি খেয়ে চুঁচুড়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ১৬ বছরের ওই নাবালিকা। সেদিন রাতেই হাওড়া স্টেশন থেকে তাকে উদ্ধার করে রেল পুলিস। চাইল্ড লাইনের হাতে তাকে তুলে দেয়। সেখান থেকে লিলুয়ার সরকারি হোমে পৌঁছয় সে। পুলিস সূত্রে খবর, হোম থেকে মেয়েটির বাড়িতে যোগাযোগ করেছিল। তার বাবা এসে দেখাও করেন। কিন্তু হোম থেকে জানানো হয় ১৪ দিন পর মেয়েকে তারা বাড়ি পাঠিয়ে দেবে।

আরও পড়ুন: আমপান-দুর্নীতিতে ক্যাগের ‘তদন্ত’কে চ্যালেঞ্জ, ফের হাই কোর্টে রাজ্য

যেহেতু মেয়েটির বাড়ি হুগলিতে এবং সে হাওড়ার লিলুয়া হোমে ছিল, তাই গত ৩ ডিসেম্বর উত্তরপাড়ার সরকারি হোমে পাঠানো হয়। পরদিন ৪ তারিখ মেয়ে বাড়ি ফেরার পর তাকে দেখে শিউরে ওঠেন মা, বাবা। মেয়ের হাত ভর্তি ক্ষত। সেখানে অন্য মেয়েদের নাম লেখা। এরপরই বাড়িতে ওই নাবালিকা জানায়, মাঝের এতগুলো দিন তার উপর নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছে হোমের সিনিয়র আবাসিকরা। অভিযোগ, শারীরিক নিগ্রহের পাশাপাশি সেফটিপিন দিয়ে তাদের নাম লিখতেও বাধ্য করেছে। মেয়েকে নিয়ে বেলুড় থানায় ছোটে পরিবার। হোম কর্তৃপক্ষ ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলছে পুলিস।

কেন ১৪ দিন পর মেয়েটিকে বাড়ি পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল, তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে। একইসঙ্গে পরিবারের লোকজন কেন মেয়েকে ১৪ দিন হোমে রাখতে রাজি হল সেটা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। যদি কোনও আইনি প্রক্রিয়ার বিষয় থাকে সেটাও এতটা সময় সাপেক্ষ কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। হোম কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে এখনও একটি কথাও বলতে চায়নি। তারা মনেই করতে পারছে না, এই মেয়ে তাদের হোমে ছিল।

কিছুদিন আগেই পুরুলিয়ার এক সরকারি হোমে আবাসিকদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ঘিরে তুলকালাম হয় রাজ্য। বিজেপির সাংসদরা সেখানে যেতে গেলে বাধার মুখে পড়তে হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সরগরম হয় রাজ্য রাজনীতিও। এরইমধ্যে লিলুয়ার সরকারি হোমে নৃশংসতার এই অভিযোগ ঘিরে প্রশ্নের মুখে প্রশাসন।