আমপান-দুর্নীতিতে ক্যাগের ‘তদন্ত’কে চ্যালেঞ্জ, ফের হাইকোর্টে রাজ্য
এর আগে ৪ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারের তরফে আর্জি জানানো হয়, এই নির্দেশ আদালত যেন প্রত্যাহার করে।
কলকাতা: আমপান (Amphan) ক্ষতিপূরণ মামলায় ক্যাগের তদন্তের নির্দেশের পুনর্বিবেচনা চেয়ে ফের কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন রাজ্য সরকারের। বুধবার হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাল রাজ্য। আমপানের ত্রাণ-দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে প্রথম থেকেই অসন্তুষ্ট আদালত। এরপরই গত ১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় সংস্থা কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা CAG of India-র হাতে এই দুর্নীতির তদন্তভার তুলে দেয় প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণণের ডিভিশন বেঞ্চ। তাদের নির্দেশ ছিল, ক্যাগ আমপান-ক্ষতিপূরণে অনিয়মের তদন্ত করবে। তিন মাসের মধ্যে সেই রিপোর্ট আদালতকে দেবে।
ক্যাগ মূলত খতিয়ে দেখবে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রাণ পেয়েছেন কি না, না পেলে কেন পাননি, এই ত্রাণ বণ্টনে কারা কারা যুক্ত, কাদের জন্য প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হলেন। সবদিক খতিয়ে দেখে তারই রিপোর্ট পেশ করার কথা আদালতে। এর আগে ৪ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারের তরফে আর্জি জানানো হয়, এই নির্দেশ আদালত যেন বিবেচনা করে দেখে।
আরও পড়ুন: নেতাই নন্দীগ্রাম ঘিরে কাল সম্মুখ সমরে তৃণমূল-শুভেন্দু
কিন্তু সে সময় আদালত রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেয়। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানায়, ক্যাগই তদন্ত করবে। বুধবার নতুন করে ফের মামলা দায়ের করেছে রাজ্য। সেখানে তারা আর্জি জানিয়েছে, বিষয়টি যেন আদালত পুনর্বিবেচনা করে। ক্যাগের তদন্ত নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত যেন বদল করে। বিরোধীদের কটাক্ষ, এভাবে তদন্তের সময়ে বিলম্ব ঘটানোর চেষ্টা করছে শাসকদল। কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “আমপানের টাকা যদি চুরি না করেন তাহলে তদন্তে ভয় কেন? বিচার হবে তৈরি থাকুন।”
২০২০ সালের মে মাসে বাংলাকে তছনছ করে দেয় সুপার সাইক্লোন আমপান। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় উপকূলের জেলা-সহ বাংলাজুড়ে। এরপরই রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করে। আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত ৫ লক্ষ পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। এই ক্ষতিপূরণ বণ্টন ঘিরেই উত্তাল হয় পূর্ব মেদিনীপুর থেকে উত্তর ২৪ পরগনা। অভিযোগ ওঠে, মূল ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বদলে সে টাকা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছে এলাকার একাধিক তৃণমূল নেতা, কর্মী।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে বসে বলেছিলেন, আমপানের ক্ষতিপূরণ দ্রুত দিতে গিয়ে কিছু ‘ভুল’ হয়ে গিয়েছে। এরপর নতুন করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাও তৈরি করা হয়। কিন্তু তাতেও ঠিকমতো কাজ হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে আদালত।