বাঁকুড়া: রাস্তা হারিয়ে এবার দিশেহারা হয়ে পড়ল দশটি হাতির একটি দল। সপ্তাহ খানেক আগেই তিনটি শাবক-সহ এই হাতির দলটি পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমানা পেরিয়ে ঢুকে পড়ে বাঁকুড়ার সারেঙ্গার জঙ্গলে। এরপর থেকেই রাস্তা হারিয়ে কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়ে দলটি। ধীরে ধীরে উত্তরমুখী যাচ্ছিল হাতির পাল। বৃহস্পতিবার সাত সকালে হাজির হয় ছাতনায়।
সপ্তাহ খানেক আগে খাবারের খোঁজে সারেঙ্গায় প্রবেশ করেছিল হাতির দলটি। বাঁকুড়া জেলায় প্রবেশের পর থেকেই হাতির দলটি ক্রমশ উত্তরমুখী হয়ে পড়ে। এরপর থেকে লাগাতার হাতির দলটিকে ফের পশ্চিম মেদিনীপুরে পাঠানোর চেষ্টা চালায় বন দফতর।
হুলা পার্টির অনবরত চেষ্টাকে ব্যর্থ করে হাতির এই দল সিমলাপাল, ইন্দপুর হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় পৌঁছে যায় বাঁকুড়া শহরের উপকন্ঠে। এদিকে তাদের আটকাতে মরিয়া বন দফতরও কৌশলের বাদ রাখেনি। পরে হুলা পার্টির তাড়া খেয়ে ছাতনার দিকে এগিয়ে চলে দুলকি চালে।
বৃহস্পতিবার সকালেই ছাতনা লাগোয়া এলাকায় পৌঁছে যায় হাতির দলটি। সকাল সকাল ‘অতিথি’দের দেখে চোখ কপালে ওঠে এলাকাবাসীর। ভয় রয়েছে, পাছে ফসলের ক্ষতি করে। একইসঙ্গে প্রাণহানি, বাড়িঘরে ভাঙচুরের ভয়েও তটস্থ স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও বন দফতরের তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছে, মানুষের নিরাপত্তা ও ফসলের ক্ষতি রুখতে সবদিক থেকে তৈরি রয়েছে তারা।
বনদফতরের সেন্ট্রাল সার্কেলের সিসিএফ জানান, বুধবার রাত ৩টে পর্যন্ত হাতির দলের পিছনে হুলাপার্টি ছোটে। ৩টের পর হঠাৎই পথ পরিবর্তন করে ছাতনা দিতে চলে যায় হাতির দল। একদিকে ঠান্ডা, তার মধ্যে অন্ধকার। হুলাপার্টিও ওদের পথ বুঝতে পারেনি। এভাবেই ছাতনার দিকে চলে যায়। তবে এখনও পুলিশ, বনদফতরের দল রয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে হাতির দলকে যদি দলমার দিকে পাঠানো যায়। এই হাতির দল দলমা থেকেই এসেছে। অনেকদিন ধরে এই হাতি পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে থেকেছে। তছনছও করেছে জিনিস।
কিন্তু বার বার কেন দিকভ্রান্তের মতো এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে হাতির দল? পথ হারিয়ে সমস্যায় পড়ছে তারা? বনদফতরের সেন্ট্রাল সার্কেলের সিসিএফের কথায়, দক্ষিণবঙ্গে এই মুহূর্তে যে হাতির দল রয়েছে তারা এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কোনও দলে সাতটা, কোনও দলে পাঁচটা, কোনও দলে দশটা, কোনও দলে আবার কুড়ি, তিরিশটাও রয়েছে হাতি। আগে এরাই একসঙ্গে ১২০-১৩০টা হাতি থাকত। এখন একটু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকছে। আর ধান, আলু চাষের সময়। প্রচুর খাবারও রয়েছে চারদিকে। বৃষ্টি হয়েছে, ফলে জলও পেয়েছে এবার অনেক। তবে মানুষের যাতে কোনওরকম ক্ষতি না হয়, সে কারণে বন দফতর সতর্ক রয়েছে বলেই জানান তিনি।
আরও পড়ুন: Howrah: ‘একজনের সঙ্গে বেরিয়েছি’, কিছুক্ষণ পরেই বাড়িতে হাজির পুলিশ, ছেলের খবরে শিউরে উঠলেন মা