কোচবিহার: তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে পঞ্চমীর রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহারের দিনহাটা। মৃত্যু হয়েছে দুই তৃণমূল কর্মীর। ঘটনায় রাতভর চলে ধরপাকড়। গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে রাতেও উত্তপ্ত ছিল ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের দিনহাটার গীতালদহ। রাতভর ধরপাকড় চালিয়েছে পুলিশ । ইতিমধ্যেই ১১ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ।
রবিবার সন্ধ্যায় গীতালদহ ২ নং ব্লকের মরা কুঠি এলাকায় ব্রিজের কাছে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। শুরু হয় সংঘর্ষ। সিতাই বিধানসভা এলাকায় বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া ও বর্ষীয়ান নেতা আবু আল আজাদের গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এদিন ভোরাম উপস্থিত ব্রিজের কাছে দু’পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল শুরু হয। চলে গুলি।
ধারালো অস্ত্র নিয়ে চলে উন্মত্ত দাপাদাপি। ধারাল অস্ত্র দিয়েই একে অপরের ওপর হামলা চালান কর্মীরা । এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ এবং বিএসএফ জওয়ানরা দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই মৃত্যু হয় মোজাফফর হোসেন নামে এক তৃণমূল কর্মীর । ওপর আহত আব্দুল মান্নানকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাঁর আঘাত গুরুতর হওয়ায় কোচবিহারে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু ঘটে।
এ প্রসঙ্গে সিতাইয়ের তৃণমূল নেতা বিধায়ক ঘনিষ্ঠ জগদীশ বর্মা বসুনিয়ার ঘনিষ্ঠ নুর আলম বলেন, “রাজনৈতিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের। যারা তৃণমূলকে জয়যুক্ত করেছে, তাদের ওপর যারা বিজেপির দালালি করেছে তারা আঘাত করেছে। যারা এমএলএ-এর লোক রয়েছে, তাদের প্রাণের মারার চেষ্টা করেছে।”
অন্যদিকে, অন্যদিকে, দিনহাটা ২ নম্বর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় বর্মন বলেন, “না, এখানে গোষ্ঠীকোন্দলের কোনও ব্যাপার নেই। আমি যতটুকু জানি, এটা ওদের পারিবারিক বিবাদ।”
প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গীতালদহ। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। অভিযোগ, সেই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেও গুলি চলে। ঘটনায় আহত হয়েছিলেন ২জন। এক আহতের নাম আবুল জলিলি মিঞা। তৃণমূলের দলীয় সূত্রে খবর, সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া ও তৃণমূল নেতা আবু আল আজাদ গোষ্ঠীর লড়াই দীর্ঘদিন থেকেই। সেই বিবাদ থেকেই এই সংঘর্ষ চরম আকার নেয়। সেখানেই গুলি চলে বলে অভিযোগ। আজাদ ঘনিষ্ঠ নামে এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
সেপ্টেম্বরেই গীতালদহে গুলিকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল নেতা মফজুর রহমানকে। দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিস চত্বর থেকে মফজুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, মফজুর সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এলাকার প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রাথপ্রতিম রায়ের সঙ্গে সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া গোষ্ঠীর সংঘাত ছিল। গুলিকাণ্ডে মফজুর রহমান ছাড়াও আব্দুল জলিল-সহ আরও কয়েকজন গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন: Red Road: পঞ্চমীর সন্ধ্যায় শহরে চলল ‘গুলি’, আতঙ্ক-উদ্বেগ উৎসবমুখর কলকাতায়
আরও পড়ুন: Khardah By Poll 2021: খড়দহে বিজেপি প্রার্থীর গাড়িতে ভাঙচুর, খুনের চেষ্টার অভিযোগ