বালুরঘাট: বছরে একবার দুর্গাপুজো (Durga Puja 2021)। পাড়ার ক্লাবকে চাঁদা দিতে আপত্তি ছিল না প্রৌঢ়ের। কিন্তু চাঁদার পরিমাণ শুনে চোখ কপালে ওঠে তাঁর। কীভাবে এতটাকা চাঁদা দেবেন? না, বলে দিয়েছিলেন। আর তাতেই ক্ষোভ ক্লাবকর্তা ও সদস্যদের। দাবি মত পুজোর চাঁদা না দেওয়ায় গৃহস্থের বাড়ির সামনে ও ভিতরে মদের বোতল ছুড়ে ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠল ক্লাব সদস্যদের বিরুদ্ধে।
গোটা বাড়ি ভাঙা কাচের টুকরোয় ভরা। পুজোর দিনে পাড়ার ক্লাবের ছেলেদের এহেন রূপে ভীত প্রৌঢ় ও তাঁর বাড়ির সদস্যরা। বৃহস্পতিবার, নবমীর দিন চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট (Balurghat) শহরের উত্তর চকভবানী এলাকায়। বিষয়টি নিয়ে ওই পরিবারের তরফ থেকে বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দিয়েছে পুলিশ। যদিও এনিয়ে সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
ঠিক কী ঘটেছে?
বালুরঘাট উত্তর চকভবানী এলাকার বাসিন্দা বিকাশ মণ্ডল। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। জানা গিয়েছে, তাঁর কাছে গত সপ্তাহের শেষের দিকে স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা দুর্গাপুজোর জন্য চাঁদা চান। কিন্তু সেই অঙ্কটা ছিল কয়েক হাজার টাকা। ক্লাবের তরফ থেকে চাওয়া এই চাঁদা কোনও ভাবেই তাঁর পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন বিকাশবাবু। তাতেই গোঁসা হয় ক্লাব সদস্যদের। এ নিয়ে কয়েকদিন আগেই তাঁদের সঙ্গে একপ্রস্থ বচসা হয়েছে বিকাশবাবুর। একই ভাবে এলাকার আরও কয়েকজনের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এদিকে চাঁদা না পেয়ে চলে গিয়েছিলেন ক্অলাব সদস্যরা। তাঁরা হুজ্জুতি শুরু করেন অষ্টমীর রাতে। অভিযোগ, এর আগে চাঁদা না পেয়ে চলে যাওয়ার সময় বিকাশবাবুদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় স্থানীয় ক্লাবের তরফে। এর পর বৃহস্পতিবার যে কাণ্ড ঘটল তাতে অবাক এবং ভীত বিকাশবাবু। অভিযোগ, দুপুরবেলা আচমকা তাঁর বাড়ির সামনে একের পর এক কাচ ভাঙার শব্দ শুনতে পান তিনি। একটু পরে বাড়ির ভিতরে এসে পড়ে মদের বোতল! মাঝরাতে এমন কাণ্ডে বাড়ির সদস্যরা রীতিমতো ভয় পেয়ে যান। বেশ কিছুক্ষণ ধরে এই বোতল ছোড়ার পর চলে যায় কয়েকজন যুবক।
এদিকে শুধুমাত্র মদের বোতল ভেঙে দেওয়া নয়, বাড়ির সামনে গাছ-ও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। বুধবার গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে জানান তিনি। শুধুমাত্র বিকাশ মণ্ডল বাড়িতে নয় গত কয়েকদিন আগে ওই এলাকার আরও একটি বাড়িতে একই ঘটনা ঘটে বলে জানা গিয়েছে। তখন সেই বিষয়ে গুরুত্ব না দেওয়ায় বুঝতে পারেননি স্থানীয়রা। তবে অষ্টমীর রাতের ঘটনায় সামনে আসতেই চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে। গত ৩০ বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি বলে মন্তব্য এলাকার আদি বাসিন্দা বিকাশবাবুর। এনিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা৷
আরও পড়ুন: Durga Pujo 2021: ‘সুজিতের আরও রেসপনসিবল হওয়া উচিত ছিল’, শ্রীভূমির পুজো ভেঙেছে আইন, তোপ দলেরই সাংসদের