চাষের জমি ‘বাঁচাতে’ না পেরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বপরিবারে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন কৃষকের

যদিও পূর্ব রামনগর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আশীষ সামন্ত বলছেন, এই কাজের সঙ্গে পঞ্চায়েতের কোনও সম্পর্ক নেই। কোনও তৃণমূল নেতা ও কর্মী রুট ম্যাপ ঘোরানোর ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন।

চাষের জমি 'বাঁচাতে' না পেরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বপরিবারে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন কৃষকের
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 31, 2021 | 5:39 PM

হুগলি: বেআইনি ভাবে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধি এবং তৃণমূল নেতা কর্মীদের মদতে তাঁদের চাষের জমির ওপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ৩২ হাজার ভোল্টেজ ক্ষমতার ট্রান্সমিশন লাইন। এমনই অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে স্বপরিবারে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করল এক কৃষক পরিবার।

তারকেশ্বর সাব স্টেশনের সঙ্গে জাঙ্গিপাড়া সব স্টেশন যুক্ত করতে ব্যবহৃত হচ্ছে ট্রান্সমিশন লাইন। আর তাই নিয়ে শুরু হয়েছে জটিলতা। তারকেশ্বরের পূর্ব রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাই কুড়ু এলাকায় এই ট্রান্সমিশন লাইন নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে গত কয়েক ধরে জমির মালিকদের সঙ্গে জটিলতা তৈরি হয় ঠিকাদারি সংস্থার। এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষকের মতামত ছাড়াই তাঁদের জমির ওপর দিয়ে নিয়ে ট্রান্সমিশন লাইন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। আরও অভিযোগ, ২০১৭ সালের সার্ভে অনুযায়ী যে জমির উপর দিয়ে ট্রান্সমিশন লাইনের রুট ম্যাপ ছিল তা বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীর জমি বাঁচাতে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। লাইন নিয়ে যাওয়ার রুট ম্যাপই বদলে ফেলা হয়।

এই প্রেক্ষিতে চাষের জমি ‘বাঁচাতে’ না পেরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করলেন এক জমির মালিক। অমিত বিশ্বাস নামে ওই জমি মালিকের দাবি, ট্রান্সমিশন লাইন নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অর্ধেক ডিম্বাকৃতি আকারে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এই এলাকায় শুধুমাত্র প্রভাবশালীদের জমি বাঁচাতে ত্রিকোণ করা হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, এ নিয়ে তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আদালত জানিয়েছে, তিনি আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন। কিন্তু এসবের পরেও জমি না বাঁচানো হলে তাঁরা স্বপরিবারে স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করবেন জেলা শাসক এবং মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠান অমিতবাবু।

যদিও এ নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে অভিযুক্ত সংস্থা। ঠিকাদারি সংস্থার সাইট ইঞ্জিনিয়র সৌমেন মণ্ডল বলেন, “আমরা সমস্ত আইন মেনে কাজ করছি। সরকারি ভাবে কাজ করতে বলা হলে কাজ চালিয়ে যাব। বন্ধ করতে বললে বন্ধ করব।” এদিকে প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান তথা বর্তমান পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বাপি রায় আবার জানাচ্ছেন, আগে যে রুট ম্যাপ নির্দিষ্ট ছিল, তা স্থানীয় কয়েকজন নেতার মদতে এবং অর্থের বিনিময়ে বদলানো হয়েছে।

যদিও পূর্ব রামনগর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আশীষ সামন্ত বলছেন, এই কাজের সঙ্গে পঞ্চায়েতের কোনও সম্পর্ক নেই। কোনও তৃণমূল নেতা ও কর্মী রুট ম্যাপ ঘোরানোর ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন।

আরও পড়ুন: শুভেন্দুর উপস্থিতিও তাঁর কলাইকুণ্ডার বৈঠকে না থাকার কারণ! আলাপন ইস্যুতে মোদীকে লেখা চিঠিতে ‘সোজাসাপটা’ মমতা

যদিও ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, যে কয়েকজন জমি মালিক অভিযোগ জানিয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।