হুগলি: হাঁস হলেও বাড়ির লোকের কাছে কম আদরের নয়। কোনওমতে দিন গুজরান চুঁচুড়ার সিংহীবাগানের ইতি বিশ্বাসের। তবে কষ্ট হলেও পোষ্যদের কোওনওভাবেই অনাদর করেননি কোনওদিন। পশুপালন ও ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালান ইতি। কঠিন লড়াই তাঁর। স্বামী অসুস্থ হয়ে শয্যায়, ছোট ছেলের ব্লাড ক্যান্সার। সেই ইতি সদ্য হারিয়েছেন তাঁর আদরের তিনটি হাঁস।
ইতি বাড়িতে ১০টি হাঁস প্রতিপালন করেন। এরইমধ্যে শনিবার ৩টি হাঁস মারা যায়। ইতির বক্তব্য, তিনি সেদিন হাঁসের ঘর খোলার পর দেখেন তিনটি হাঁস মুড়ি খেয়ে ছটফট করতে করতে জলের দিকে যাচ্ছে। এরপরই ওই মুড়ির প্যাকেট হাতে তুলে দেখেন তাতে কেমন একটা গন্ধ। তা থেকেই সন্দেহ হয়।
ইতি বলেন, এরপরই পঞ্চায়েত সদস্যকে তিনি সবটা জানান। তিনিই পরামর্শ দেন পুলিশের কাছে যেতে। পুলিশ বাড়িতে যান। তদন্ত করে দেখে পুলিশের কাছে যেতে বলেন। পুলিশ পশু হাসপাতালে যাওয়ার পরমার্শ দেয়। চার পাঁচদিন ধরে এভাবে ঘুরে চলেছেন তিনি।
এরপর বুধবার হুগলি জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ দফতরের কর্মাধ্য়ক্ষ নির্মাল্য চক্রবর্তীর কাছে যান ইতি। তাঁর উদ্যোগেই কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে হাঁসগুলি। নির্মাল্য চক্রবর্তী বলেন, “শুনলাম তিনটে হাঁস মারা গিয়েছে ওনার। ভেটারিনারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন উনি। বলা হয় জেনারেল ডায়েরি করে নিয়ে যেতে। যানও। তারপর বলা হয় থানার মাধ্যমে লিখে দিতে হবে পোস্ট মর্টেম করার বিষয়টি। উনি অভিযোগ করেছেন তিনটে হাঁসকে বিষ প্রয়োগ করে মারা হয়েছে। কিন্তু এর ময়নাতদন্তের পরিকাঠামো আমাদের জেলায় হাসপাতালে নেই। আমরা ভেটারিনারি হাসপাতালের আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করেছি।”
ইতির ধারণা, কেউ ইচ্ছাকৃত এটা করেছে। মৃত হাঁসের দেহ বরফ চাপা জায়গায় রাখেন তিনি। কলকাতার বেলগাছিয়া স্টেট ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে দেহগুলির নমুনা। এরপরই জানা যাবে ঘটনার সত্যটা কতটা।