Electric Crematorium: শ্মশানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে মৃতদেহ, মৃতের পরিজনরা বলছেন…
Dhupguri: স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ধূপগুড়ি পৌর মহাশ্মশানে এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। ২০২৩ সালের অগস্টেও বৈদ্যুতিক চুল্লির অব্যবস্থাকে ঘিরে একই রকম সমস্যার মুখে পড়েছিলেন একটি পরিবারের সদস্যরা। শহরের বাইরে থেকে মৃতদেহ নিয়ে এসে সৎকার করতে গিয়ে সেসময়ও চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছিল তাঁদের।

ধূপগুড়ি: এ যেন ‘মরেও শান্তি নেই’! শ্মশানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। কিন্তু, সেই মৃতদেহ দাহ করা যাচ্ছে না। এই দৃশ্য জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি পৌর মহাশ্মশানের। বৈদ্যুতিক চুল্লি অকেজো। তার জেরে মৃতদেহ দাহ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মৃতের পরিজনরা।
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মঙ্গলবার মৃত্যু হয় ধূপগুড়ি পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগর কলোনির বাসিন্দা বাবুন চক্রবর্তীর (৬৫)। সকাল ন’টা নাগাদ মৃতদেহ নিয়ে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা ধূপগুড়ি পৌর মহাশ্মশানে পৌঁছন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁদের পড়তে হয় চরম বিপাকে। প্রায় তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈদ্যুতিক চুল্লির সামনে পড়ে থাকে মৃতদেহ। শ্মশানে কর্তব্যরত কর্মীদের দেখা পাওয়া যায়নি দীর্ঘ সময়।
একই সময়ে ধূপগুড়ির ডাউকিমারি এলাকা থেকেও আর একটি মৃতদেহ নিয়ে পরিবার পৌঁছয় মহাশ্মশানে। বৈদ্যুতিক চুল্লিতে সৎকারের আশায় শহরের শ্মশানে আসলেও শেষ পর্যন্ত তারাও অব্যবস্থার শিকার হয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর জানা যায়, বৈদ্যুতিক চুল্লিটি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে রয়েছে। ফলে বৈদ্যুতিক চুল্লিতে সৎকার সম্ভব নয়।
এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের পরিজনরা। শ্মশান চত্বরে শুরু হয় বিক্ষোভ। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে একসময় ক্ষুব্ধ স্বজনরা মহাশ্মশানের মূল গেট বন্ধ করে দেন। তাঁদের অভিযোগ, যেখানে সৎকারের ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই, সেখানে শ্মশান খোলা রাখার কোনও অর্থ হয় না।
শেষ পর্যন্ত ডাউকিমারি এলাকার পরিবারটি বাধ্য হয়ে মৃতদেহ নিয়ে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে নিজ এলাকার শ্মশানে ফিরে যায়। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মৃতের আত্মীয়স্বজনেরা। আর বাবুন চক্রবর্তীর মৃতদেহ ওই শ্মশানের পুরনো কাঠের চুল্লিতে শেষ পর্যন্ত দাহ করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ধূপগুড়ি পৌর মহাশ্মশানে এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। ২০২৩ সালের অগস্টেও বৈদ্যুতিক চুল্লির অব্যবস্থাকে ঘিরে একই রকম সমস্যার মুখে পড়েছিলেন একটি পরিবারের সদস্যরা। শহরের বাইরে থেকে মৃতদেহ নিয়ে এসে সৎকার করতে গিয়ে সেসময়ও চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছিল তাঁদের। এই ঘটনার ফলে আবারও ধূপগুড়ি পৌর মহাশ্মশানের পরিকাঠামো ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠল। অভিযোগ, শ্মশানের মতো একটি সংবেদনশীল স্থানে ন্যূনতম ব্যবস্থার অভাব সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলছে।
শ্মশানে অব্যবস্থার অভিযোগ নিয়ে ধূপগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক রাজেশ কুমার সিং বলেন, “মানুষের হয়রানির জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু, বৈদ্যুতিক চুল্লি খারাপ হয়ে যেতে পারে। এতে আমাদের হাত নেই।”
