জলপাইগুড়ি: সরকারি বিধি-নিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নদীর বুকে জেসিবি, আর্থ মুভার বসিয়ে অবৈধভাবে চলছে দেদার বালি পাথর তোলা, রীতিমতো পরিবেশ আইনকে অমান্য করেই চলছে বেআইনি কাজ। যার কারণে নদী হারাচ্ছে তার স্বাভাবিক গতি। বানারহাট ব্লকের অন্তর্গত ভুটান সীমান্ত লাগোয়া চামুর্চি নদীতে এমনটাই ছবি ধরা পড়ে TV9বাংলা। রীতিমতো পুলিশ প্রশাসনের চোখের সামনে চলছে অবৈধ ভাবে বালি পাথর তোলা। যার কারণে নদীর বুকে তৈরি করা হচ্ছে বড় বড় গর্ত। পরিবর্তন হতে বসেছে নদীর গতিপথ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর বাস্তুতন্ত্র।
পরিবেশ প্রেমীদের অভিযোগ, অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বালি পাথর তোলায় নদী তার গতি পথ হারাচ্ছে। গ্রিন ট্রাইবুলের নির্দেশ রয়েছে নদীতে কোনওভাবেই জেসিবি আর্থ মুভার ব্যাবহার করা যাবে না। তথাপি চলছে অবৈধ কাজ। বড় বড় জেসিবি মেশিন বসিয়ে নদীতে বালি পাথর তোলায় তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। যার কারণে পর্যটন দপ্তরের চামুর্চি ইকো ট্যুরিজম পার্ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে পার্কের প্রাচীর। যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, পর্যটক আসা বন্ধ জয়ে গিয়েছে। প্রশ্নের মুখে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা।
এমন কি সেই নদীতে দেখা যাচ্ছে ভুটার নাম্বারের বড় বড় ডাম্পার জেসিবি মেশিনের সাহায্যে বালি পাথর তুলে বেরিয়ে যাচ্ছে প্রশাসনের নাখের ডগা দিয়ে। সূত্রের খবর প্রশাসনের চোখে ধুলো দিতেই এই অসাধু ব্যবসায়ী মাফিয়ারা ভুটার নম্বরের গাড়ি ব্যবহার করছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে কি আন্তর্জাতিক বালি পাথর মাফিয়াদের যোগ রয়েছে এই অবৈধ বালি পাচার চক্রে?
বিরোধীরা আঙ্গুল তুলেছে শাসক দল ও স্থানীয় প্রশাসনের দিকেই। যদিও পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বানারহাট ব্লকের বিডিও নীরঞ্জন বর্মন। তিনি বলেন, “আমি গিয়েছিলাম। সেরকম কিছু চোখে পড়েনি তখন। তবে আমার বিএলআরও-কে বলা রয়েছে। আইসি-কে বলছি।”
তবে বিষয়টি নিয়ে সরব বিরোধীরা। বিজেপি ধুপগুড়ি বিধানসভা কনভেনার চন্দন দত্ত বলেন, “প্রশাসনের নাকের ডগায় কাজ হচ্ছে। তৃণমূলের লোক জড়িত। প্রশাসনের পকেটেও বড় টাকা ঢোকে। তা না হলে প্রশাসন কীভাবে চুপ করে বসে থাকে? ”
যদিও তৃণমূল জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপ দে বলেন, “এগুলি যদি হয়ে থাকে, তাহলে আলাদা করে বিষয়টি নজর দিয়ে দেখতে হবে। বিজেপি এমন একটা দল, যাতে সবেতেই তৃণমূলের দোষ দেখে। যারা যুক্ত, সে যে রাজনৈতিক দলেরই লোক হোক না কেন, প্রশাসনকে দেখতে হবে। বিএলআরও-কে এই বিষয়টি দেখতে হবে।”