কৃষ্ণনগর: কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ীতে কামান দেগে ও নীলকন্ঠ পাখি উড়িয়ে সূচনা হতো দেবী দুর্গার আরাধনার। রাজবাড়ির পুজোর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হতো গোটা অবিভক্ত বাংলার সমস্ত জায়গায় দুর্গাপূজা। প্রথমে চলত বাসন্তী পূজা। এরপর রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রথম শুরু করেন মায়ের সঙ্গে লক্ষ্মী,গণেশ,কার্তিক স্বরস্বতীর পুজো। অষ্টমীতে আটটি ভাজা দিয়ে মাকে ভোগ দেওয়া হয়। আর নবমীতে দেওয়া হয় মাছ এবং পান্তা ভাতের ভোগ। সাড়ে ৪০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্য মেনে এবারো ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের রাজবাড়ির দুর্গাপুজো।
শুধুমাত্র কৃষ্ণনগর নয় গোটা জেলা এবং রাজ্য থেকে ভক্তরা আসেন কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের রাজবাড়ি দর্শন করতে। এবং অঞ্জলি দিতে। সাড়ে চারশো বছর আগে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের হাত ধরেই শুরু হয় দুর্গা প্রতিমা এবং তার সন্তানদের নিয়ে পুজো। এরপরে সেই রীতি আস্তে আস্তে গোটা রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে যায়। যখন এদেশে ইংরেজরা প্রবেশ করেছে তখন চলতো বাসন্তী পূজা। সেই কারণে ভয়ে এবং অর্থনৈতিক অভাবে দুর্গা প্রতিমা এবং তাদের সন্তানদেরকেও পূজা দিত না। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় প্রথম শুরু করেন এই দুর্গাপুজো।
কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের বাড়িতে দেবী রাজ রাজশ্রী নামে মহামায়া রূপে পূজিত হন। মহালয়া থেকে শুরু হয় হোম যজ্ঞ। টানা দশমী পর্যন্ত চলে এই হোমের আগুন। সপ্তমীতে সাতটি ভাজা দিয়ে মায়ের সামনে ভোগ দেওয়া হয়। ঠিক সেই রকম অষ্টমীতেও আট রকম ভাজা দিয়ে মাকে পুজো করা হয়। নবমীতে প্রাচীণ রীতিনীতি মেনে পান্তা ভাত এবং বিভিন্ন মাছের ভোগ দেওয়া হয়। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছু নিয়মের পরিবর্তন করা হয়েছে।
বর্তমান রানিমা অমৃতা রায় বলেন, ” মা তো বছরে একবারই আসেন। আগের মতোই নদিয়াবাসীর কল্যাণে সেই মর্যাদা, সেই সম্মান দিয়েই তাঁকে ডাকি।”