দুর্গাপুজো
বাঙালির সবচেয়ে বড় আবেগের নাম দুর্গাপুজো। আজকের দুর্গাপুজোর ইতিহাস প্রায় ৭০০০ বছরেরও বেশি পুরনো। আজকের বাঙালির কাছে যা বাসন্তী পুজো, সেটাই কিন্তু একটা সময় ছিল সত্যিকারের দুর্গা আরাধনার সময়। তবে ত্রেতাযুগে রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয় পেতে অকাল বোধন করেন রামচন্দ্র। আর সেই থেকেই বাঙালির কাছেও এই অকাল বোধন হয়ে উঠেছে আসল দুর্গাপুজো। বছরের এই সময় মেতে ওঠে গোটা দেশই। তবু দুর্গাপুজোকে ঘিরে বাঙালিদের উন্মাদনা এবং উৎসব পালনের ঘনঘটার কাছে ফিকে বাকি সবাই। তার প্রমাণ কলকাতার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর ‘হেরিটেজ’ বলে সম্মানিত করা।
হেরিটেজ তো বটেই, কারণ কলকাতা তথা বাংলার দুর্গাপুজোর গোড়া কোথায় তা খুঁজে বের করাই যেন প্রায় অসম্ভব এক কাজ। প্রথমে জমিদার বা রাজবাড়িতে পুজো হলেও বারো ভূঁইয়ার হাত ধরে সেই পুজোই প্রভাবশালীদের আঙিনা ছেড়ে নেমে আসে জন সাধারণের কাছে। শুরু হয় বারোয়ারি পুজোর। এখন যা আবার থিম পুজোয় পরিণত হয়েছে।
দুর্গাপুজো তো কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এই উৎসবকে ঘিরেই গড়ে ওঠে বাংলার সবচেয়ে বড় ব্যবসাও। কোটি কোটি মানুষের অন্নসংস্থান করে এই পুজোই। তথ্য বলছে ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোকে ঘিরে প্রায় ৩২,৩৭৭ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছিল। ২০২২ সালে সেই অঙ্কটা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫,০০০ কোটি টাকায়। আর গত বছরে অর্থাত ২০২৩ সালে দুর্গাপুজোকে ঘিরে প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। অর্থাৎ প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। এই সময় জাত-ধর্ম ভুলে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় সকলে। ঐতিহ্য, পরম্পরার মতো এই উৎসব তাই আর্থ-সামাজিক দিক থেকেও সমান গুরুত্বপূর্ণ।