কামারহাটি: আরজি কর কাণ্ডের রেশ এখনও স্তিমিত হয়নি। বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই আবহে রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালে উত্তেজনা। শুক্রবার চিকিৎসকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠে রোগীর পরিজনদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত ৩ জুনিয়র ডাক্তার, নার্স-সহ ৩ স্বাস্থ্যকর্মী ও এক পুলিশকর্মী। চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনার পর সাগর দত্তে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
বছর ছত্রিশের রঞ্জনা সাউ নামে এক মহিলাকে শুক্রবার শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে কামারহাটি সাগর দত্ত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোগীর পরিজনদের দাবি, হাসপাতালে কোনওরকম চিকিৎসা হয়নি রোগীর। এর ফলে মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর যখন অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠে, সেই সময় স্বাস্থ্যকর্মী অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা সফল হয়নি। রোগীর মৃত্যুর পর হাসপাতালের ভিতরেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন রোগীর পরিজনরা।
হাসপাতালের আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, রোগীর পরিজনরা চিকিৎসকদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। চিকিৎসকদের ধাক্কাধাক্কি করা হয়। তাঁরা এগিয়ে গেলে তাঁরাও আহত হন। এমনকি একজন পুলিশকর্মীও আহত হন। পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তেজনা প্রশমিত করতে গিয়ে তাদের এক কর্মী হাতে আঘাত পান।
হামলাকারীরা কীভাবে রোগীদের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, হাসপাতালগুলিতে স্বাস্থ্য কর্মীদের কোনও নিরাপত্তা নেই। যতক্ষণ না পর্যন্ত নিরাপত্তার সঠিক ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা। এদিন ঘটনার পর জুনিয়র ডাক্তার কিঞ্জল নন্দের নেতৃত্বে ৮ জনের প্রতিনিধি দল সাগর দত্ত হাসপাতালে যান। সাগর দত্তের ঘটনার উল্লেখ করে জুনিয়র ডাক্তার কিঞ্জল নন্দ প্রশ্ন তোলেন, “আমাদের সুরক্ষার দাবি তোলা কি অন্যায়?”
হাসপাতালে নিরাপত্তায় যে গাফিলতি রয়েছে, স্বীকার করছেন স্বয়ং কলেজের প্রিন্সিপাল পার্থপ্রতিম প্রধান। তাই যে দাবি নিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা অবস্থান করছেন, তাকে সমর্থন জানান। গোটা ঘটনা ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য ভবনে তিনি জানিয়েছেন। ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।