মাটিয়া: নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া এই রাজ্যেও। মোবাইলে গেম খেলতে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুকন্যাকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগ খোদ মাসি ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনায় নির্যাতিতার বাবা অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছে। বর্তমানে ওই নাবালিকার শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। দু’ঘণ্টা ধরে চলেছে তার অস্ত্রোপচার। রক্তাক্ত হয়েছে ক্ষুদ্রান্ত। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে ২ অভিযুক্ত।
বসিরহাটের মাটিয়ার ঘটনা। মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানালো নৃশংসতা। নিজের দিদির মেয়েকেই অপহরণ খোদ মাসির। প্রেমিকের কাছে ফোন ও টাকা পৌঁছানোর নাম করে নাবালিকাকে অপহরণ করে মাসি ও তার প্রেমিক।
জানা গিয়েছে, ২৪ মার্চ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাত থেকে ওই নাবালিকা নিখোঁজ হয়ে যায়। নির্যাতিতার বাবা পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। এদিকে মেয়ে বাড়ি না ফেরায় সারারাত খোঁজ করতে থাকেন তাঁরা। পরে মাটিয়া থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার বাবা। এরপর শুক্রবার গভীর রাতে মাটিয়ার বিবেকনগর কুলতলা ব্রিজের কাছে ওই শিশুকন্যাকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপর মাটিয়া থানার পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে একটি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় নাবালিকাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ইতিমধ্যে এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, শিশুকন্যার নিজের মাসি ও তার প্রেমিক পরিকল্পনা করেই শিশুটিকে ধর্ষণ করেছে। মোবাইলে গেম খেলতে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কিছু টাকা ও একটি মোবাইল ফোন তার প্রেমিকের কাছে পৌঁছে দিতে বলে ওই নাবালিকার মাসি। মাসির কথামত সেই কাজ করতেও যায় বাচ্চা মেয়েটি। তারপর থেকেই সে নিখোঁজ।
পরে শিশুটির মেডিক্যাল পরীক্ষা করে জানা যায় সে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এরপর অভিযোগের ভিত্তিতে মাসি ও তার প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত দু’জনকে শুক্রবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ছয় দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান পারিবারিক শত্রুতার বদলা নিতেই এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এদিকে, নির্যাতিতা নাবালিকাকে ভর্তি করা হয়েছে আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। কিশোরীর চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। সেই মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, সার্জারি, মেডিসিন, সাইকোলজি বিভাগের চিকিৎসক। এর পাশাপাশি, পিকু বিভাগের বিশেষজ্ঞ এবং ফরেনসিক মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও নজর রাখছেন কিশোরীর শারীরিক অবস্থার উপর।
আরও পড়ুন: Canning Women Harassment: ফাঁকা ঘর পেয়েই মহিলাকে টেনে নিয়ে গেল যুবক, পরের ঘটনা মারাত্মক