চন্দ্রকোনা: জাওয়াদের কারণে আলুচাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। বেড়েছিল ঋণের বোঝা। মানসিক অশান্তি থেকে আত্মঘাতী হয়েছিলেন এক আলুচাষি। মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর জানতে পেরে আজ ওই কৃষকের বাড়িতে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর্ত পরিবারের হাতে দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন তিনি।
এরপর বিরোধী দলনেতা বলেন, “জাওয়াদে এই বছর আলুচাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই গ্রামেই তিনজন আত্মহত্যা করেছেন। আমদের কাছে একজনের খবর ছিল। সেই একটি পরিবারকে সাহায্য করতে পারলাম। আমরা বাইশ তারিখ থেকে প্রতিটি ব্লকে বিক্ষোভ করছি। প্রতিটি জেলায়-জেলায় এই বিক্ষোভ হবে। কৃষি ঋণ সরকারকে মকুব করতেই হবে। বিঘা প্রতি প্যাকেজ দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী যদি উৎসবে চাঁদা দিতে পারেন তাহলে কৃষক পরিবারগুলিকে কেন সাহায্য করে দিচ্ছে না? এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ কী করছে? এত সারের কালোবাজারি? দ্রুত পদক্ষেপ নেয় যেন তারা।”
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের সাত তারিখ চাষে ক্ষতির আশঙ্কা থেকে আত্মঘাতী হন ওই আলুচাষি। মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। জাওয়াদের জেরে অসময়ে বৃষ্টি ভাসিয়েছে পথঘাট, ভাসিয়েছে খেতের ফসল। পরিবারের দাবি, এই বৃষ্টি নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন চন্দ্রকোণা থানার কাঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধান্যঝাটির ভোলানাথ বায়েন। আলুচাষে ক্ষতির আশঙ্কা থেকে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ভোলানাথ বায়েন এক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছিলেন। প্রায় ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সেই চাষ করেন তিনি। গ্রামবাসীরা জানান, আচমকাই ডিসেম্বরের শুরুতে ঝড়-বৃষ্টির কারণে চাষের বিপুল ক্ষতির আশঙ্কায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন ভোলানাথ। এই নিয়ে পরিবারেও অশান্তি শুরু হয় বলে অভিযোগ। এরপরই ভোলানাথ আত্মহত্যা করেন বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর বাড়িতেই বিষ খান ভোলানাথ বায়েন। দ্রুত চিকিৎসার জন্য তাঁকে চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় ওই আলুচাষির।
মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমা কৃষি প্রধান এলাকা। ধান, আলু থেকে সবজি চাষ হয় এখানকার উর্বর জমিতে। গভীর নিম্নচাপের ফলে ভারী বৃষ্টি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে ঘাটালের কৃষকদের। জলে ডুবে নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান, সর্ষে, আলু থেকে সবজি। মাঠ ভরে রয়েছে সরষে, আলু, সবজি, পাকা ধানে। সরষে, আলু, পাকা ধানের ক্ষেত ডুবে রয়েছে জলে। জমি থেকে জল বের করতে মরিয়া কৃষকরা সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবু বিধি বাম! পাকা ধান জল থেকে ছেঁকে উঁচু জায়গায় নিয়ে আসতে ব্যস্ততা চরমে কৃষকদের। দুর্যোগ কাটলেও দুর্ভোগ না কাটায় আর্থিক ক্ষতির দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন: Bank fraud Case: ক্রেডিট কার্ড বাতিলের জন্য ওটিপি দিতেই চোখ কপালে ব্যক্তির!