কালনা: উদয়ন গুহর পর রাতদখল নিয়ে আরও এক শাসকমন্ত্রীর মুখে কুকথা। যা নিয়ে উঠেছে নিন্দার ঝড়। রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, রাস্তায় মেয়েরা মদ্যপান করছে। তাঁর বক্তব্য, রাত দুটোয় বাড়ির মেয়ে কোথায় রাত জাগতে যাচ্ছে, তা কি খোঁজ নিচ্ছেন অভিভাবকরা? তাঁদের পাহারা দিচ্ছেন তৃণমূলেরই ছেলেরা।
গত সোমবার কালনা বাসস্ট্যান্ডে একটি সরকারি বাসের রুট উদ্বোধনে যান স্বপন দেবনাথ। সোমবার তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, “রাতে রাস্তায় মেয়েরা মদ্যপান করছে। রাত দুটোয় আপনার মেয়ে কোন রাত জাগা আন্দোলনে গিয়েছে? আন্দোলন করুন মোমবাতি জ্বালান, মিছিল করুন কিন্তু আপনার মেয়ে কোথায় গেল খোঁজ করবেন না?”
এই বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে একটি উদাহরণও দেন তিনি। স্বপনের বক্তব্য, “কাল রাতে একটি জায়গাতে দুটি ছেলে-একটি মেয়ে, রাত তখন দুটো। দেখা যাচ্ছে, দুজনে ওখানে বসে বিয়ার খাচ্ছে। পুলিশকে বলা হল, বাবা-মাকে ফোন করা হল। রাত দুটোয় আপনার মেয়ে কোন রাত জাগা আন্দোলনে গিয়েছে? পুলিশ তুলে নিয়ে গেল।”
তৃণমূলের ছেলেরা পাহারা না দিলে নাকি অন্য কোনও বিপদই হয়ে যেতে পারত ওই মেয়েটার। তেমনই দাবি স্বপনের। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের ছেলেরা যদি না পাহারা দিত, ওই মদ্যপ অবস্থায় মেয়েটার যদি কিছু হয়ে যেত তখন দায়ী আমাদের করত।” স্বপনের আরও সংযোজন, “আমাদের এলাকাতে দেখেছি একটি দোকানে রাতে মেয়েরা মদ খেতে যায়। এখন থেকে ওই হোটেলে কোন মহিলার মদ খেতে যাওয়া যাবে না।”
কেন তিনি এমন কথা বললেন, তারও কারণ ব্যাখ্যা করেন তিনি। বলেন, “কোন মহিলাকে অসম্মান করার জন্য বললাম না। এই ঘটনা অনেকে জানে বলে না। আমাকে বাধ্য হয়ে বলতে হচ্ছে। ওদের রাতে আমাদের পাহারা দিতে হচ্ছে।
বাবা-মা কি খোঁজ নেবে না? জানেনা আমার মেয়ে কোন মদের দোকানে যাচ্ছে?”
এ প্রসঙ্গ টেনেই গল্পের ছলে স্বপন বলেন, “আমার এলাকাতে দেখেছি একটি দোকানে রাতে মেয়েরা মদ খেত। যার নাম বিকাশের হোটেল। আমি খবর পাওয়ার পর দুদিন পরপর রাতে গিয়েছি। কোন মেয়েরা হোটেলে মদ খেতে যায় দেখা দরকার । আমি হোটেলে বলে এসেছি, এখন থেকে এই হোটেলে কোনও মহিলাকে মদ খেতে দেওয়া যাবে না। এটাও আমাকে দেখতে হবে। ওই মহিলারা যদি মদ খেতে যায় যদি কোন অঘটন ঘটে যায় ,তখন কী হবে। সেই জন্য আমাদের পাহারা দিতে হচ্ছে।”
ঘটনার নিন্দার ঝড় উঠেছে। মুখ খুলেছেন বিজেপি নেত্রী চিকিৎসক অর্চনা মজুমদার বলেন, “তাঁরা সরকারে আছেন, ক্ষমতায় আছেন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা দেখা তাঁর দায়িত্ব। রাত ২টোয় মহিলারা রাস্তায় থাকলে, তাঁদের ভালোমন্দ দেখার দায়িত্ব তাঁদের। এটা বাড়তি কিছু করছেন না। আরজি কর কাণ্ডের পর তাঁদের মুখে এ কথা খাটে না। মেয়েরা বাংলায় সম্মান পায় না। শালীনতা বজায় রাখতে হবে। ওদের দলের বড়, মাঝারি, ছোট নেতারা মহিলাদের সম্মান দিচ্ছে না।”