কালনা: ভাগীরথী নদীর এক পারে পূর্ব বর্ধমানের কালনা, অন্য পারে নদিয়ার শান্তিপুর। জলপথই এখানে যাতায়াতের ভরসা। তবে রাজ্য বহুদিন ধরেই কালনা ও শান্তিপুর ব্রিজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। জমি নিয়েও জট তেমন নেই, দাবি স্থানীয় পঞ্চায়েতের। কালনার সাতগাছিয়া বেলতলায় বৃহস্পতিবার একটি বৈঠক হয়। জমিদাতা ও প্রশাসনের আধিকারিকরা ছিলেন সেখানে। ৯৭ শতাংশ জমি মিললেও ব্রিজ তৈরির জন্য এখনও ৩ শতাংশ জমির প্রয়োজন। যা নিয়ে দফায় দফায় চলছে আলোচনা। তা মিটে গেলেই ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু হবে।
কালনা শহর ও নদিয়ার শান্তিপুরের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলা ভাগীরথী নদীর উপর তৈরি হবে সেতু। তাতে দুই জেলার যাতায়াত অনেক মসৃণ হবে। বাড়বে যোগাযোগও। কালনা শহরে বহু দর্শনীয় স্থান আছে। শান্তিপুরও বহু ঐতিহ্যের ধারক। ফলে এই ব্রিজ হলে পর্যটনও বেশ চাঙ্গা হবে।
২০১৮ সালে এই সেতু তৈরির কথা ঘোষণা করা হয়। এরপর শুরু হয় জমি কেনার প্রক্রিয়া। অনেকেই যেমন জমি দিতে এগিয়ে আসেন। আবার অনেকে জমি দিতে নারাজ ছিলেন। দাবি ছিল, জমির দাম আরও বাড়াতে হবে। যদিও এই ক’বছরে তাঁরাও নমনীয় হয়েছেন বলেই প্রশাসনের দাবি।
বৃহস্পতিবার কালনার সাতগাছিয়ায় ব্লকের যুগ্ম বিডিও, পিডব্লুডি, ভূমি দফতরের আধিকারিকরা ও জমিদাতারা প্রশাসনিক বৈঠকে বসেন। বিডিও অরুণাভ চৌধুরীর কথায়, “আমরা জমিদাতাদের কাছে আবেদন করলাম যাঁরা জমি দিয়েছেন, তাঁরা যেন ওই জমিতে যা রাখা আছে সরিয়ে নেন। তাতে পিডব্লুডি পজিশন নিয়ে কাজ শুরু করতে পারবে। যাঁরা চাষ করছেন আরও কিছুটা সময় চাইলেন। আশা করছি দ্রুত ব্রিজের কাজ শুরু হবে।”
টাকার বিনিময়ে সরকারকে জমি বিক্রি করে দিলেও এতদিন সেই বিক্রি করে দেওয়া জমিতে চাষ আবাদ করছিলেন জমি দাতারা। কারও জমিতে মরসুমি ফসলের চাষ, কেউ গাছ লাগিয়ে রেখেছেন। জমিদাতা রাজু ঘোষ বলেন, “আমরা সরকারকে জমি দিয়ে দিয়েছি, টাকাও পেয়ে গিয়েছি। তবে আমার যেমন ওখানে ধান আছে। অনেকেরই এরকম ফসল আছে। এক মাস সময় দিয়েছেন ওনারা। তবে এই সময়ের মধ্যে না হলে আবার বিকল্প ভাবনাচিন্তা করবেন ওনারা। ব্রিজ হবে আমরা খুবই খুশি।”
পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান হরেকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “৯৬ শতাংশের উপরে জমিদাতা আছে। বিঘা চারেকের মতো জমি দিতে বাকি রয়েছে। কয়েকজন দাবি করছেন আরও বেশি টাকা দিতে হবে। সেটা ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব দেখবে।”