পূর্ব মেদিনীপুর: বিজেপির দলীয় কার্যালয়কে দখলের চেষ্টার অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল ময়নায়। বুধবার বিকেলে ময়নার বাকচায় এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগের আঙুল তৃণমূলের দিকে। যদিও তৃণমূল সেই অভিযোগ মানতে নারাজ। তবে বিজেপির দাবি, প্রায়ই শাসকদলের কর্মী, নেতারা তাদের লোকজনের উপর হামলা চালায়। দলীয় কার্যালয় দখলের চেষ্টা করে। এভাবে চললে এবং পুলিশের ভূমিকা কঠোর না হলে আগামিদিনে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না বিধানসভা কেন্দ্রের বাকচা। সেখানকারই গোবরাদন গ্রাম। অভিযোগ, বুধবার সেখানকারই বিজেপির দলীয় কার্যালয় দখল করতে যায় তৃণমূলের লোকেরা। বাইরে থেকে লোক এনে ঝামেলা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, এদিন বিকেলে তৃণমূলর বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী ফিস্ট করার অজুহাতে বাইরের লোকজন জড়ো করেন। এরপরই বিজেপির পার্টি অফিস দখল করার চেষ্টা চালায়।
যা ঘিরে এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এলাকার লোকজন বাধা দিতে এলে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের লক্ষ্য করে বোমাবাজিও করে বলে অভিযোগ। অন্যদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, ওই দলীয় কার্যালয়টি তিন বছর আগে তৃণমূলেরই দলীয় কার্যালয় ছিল। বিজেপি জোর করে তাদের পার্টি অফিস দখল করে নেয়। সেই পার্টি অফিস দখল ঘিরেই বিজেপির কর্মীরা তৃণমূলের লোকজনের উপর হামলা চালায় বলে পাল্টা অভিযোগ। অর্থাৎ এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় রাজনৈতিক আকচাআকচি শুরু হয়। পরে ময়না থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে সেখানে পুলিশ একটি অস্থায়ী ক্যাম্পও করে।
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির তমলুক জেলা সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল বলেন, “ময়না বিধানসভার বাকচায় অহরহ তৃণমূলের লোকজন বিজেপির কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা করে। ওরা বার বার আমাদের পার্টি অফিসে হামলা করে। তৃণমূলের প্রায় ২০-২৫ জন বুধবার ওখানে মদ মাংস নিয়ে জোর করে ফিস্ট করছিল। তার সঙ্গে বোমাবাজিও করে। খাওয়াদাওয়ার পর ওরা বাইরে কিছু গুন্ডাকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির যে দলীয় কার্যালয়টি আছে তা দখলের চেষ্টা করে। আমাদের ফ্লেক্স, পোস্টার যে ছিল, সেগুলিও নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা ওদের বাধা দিতে গেলে গোলমালের পরিবেশ তৈরি হয়। ময়না পুলিশকে আমাদের দলের তরফে জানানোর পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এভাবে চলতে থাকলে আগামিদিনে ভারতীয় জনতা পার্টি আলাদা করে পথে নামবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে কীভাবে বাকচায় শান্তি ফিরিয়ে দেওয়া যায় সেই ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বাকচায় শান্তি না ফিরলে বিজেপি কিন্তু বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে। সবকিছু স্তব্ধ করে দেবে।”
অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে ময়না পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুব্রত মালাকার বলেন, “আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি ময়নার বাকচা উত্তপ্ত হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে তো এখানকার বিধায়ক অশোক দিন্দা মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। মঙ্গলবার থেকে উনি আছেন। বুধবারও তিনি বিডিও অফিসে যান, থানাতে যান। উনি থাকলেই বাকচা উত্তপ্ত হয়। কারণ একটাই, বিজেপি সন্ত্রাস করে। সারা ভারতে কোথাও ওরা শান্তি স্থাপন করতে পারেনি। অশান্তির মতাদর্শেই ওরা চলে। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি বাকচায় বিজেপির কোনও দলীয় কার্যালয় নেই। আমাদের আটটার কাছাকাছি দলীয় কার্যালয়। ২৩ জানুয়ারি সামনে। আমরা দলের তরফে নেতাজির জন্মদিবস পালন করব, দলীয় কার্যালয়ে তারই প্রস্তুতি চলছিল। সেখানেই বিজেপি বহিরাগত লোকজন এনে আক্রমণ করে। আমাদের ছেলেরা তখন খেতে বসেছিল। তার মধ্যেই তুলে মারধর করে। আমরা পরে পুলিশকে জানাই। বিজেপি যে অভিযোগ করতে পুরোটাই মিথ্যা।”
আরও পড়ুন: West Bengal BJP : করোনার মৃতদের কতজনের পরিবার ক্ষতিপূরণ পেয়েছে? শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি বিজেপির