কাঁথি: কাঁথি-মেদিনীপুর রাজ্য সড়কের উপর দাঁড়িয়ে তিনতলা হোটেল। সবুজ রঙের ওই হোটেলটি ঘিরেই এখন উত্তপ্ত জেলার রাজনীতি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই হোটেলের আড়লে নাকি চলে চোলাই মদ ও মধুচক্রের ব্যবসা। বারবার বলেও যখন সমস্যার সুরাহা হচ্ছিল না, তখন লাগাতার বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা। পড়ে চাপের মুখে পড়ে ব্যবসা বন্ধ হয়। কিন্তু এরপরও আসেনি আসেনি শান্তি। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, গতকাল গভীর রাতে খোদ নিজের হোটেলেই আগুন লাগিয়ে দেন তৃণমূল নেতা। আর এরপর গ্রামবাসীদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন বলেও দাবি করেন তারা।
ঠিক কী ঘটেছে?
জানা গিয়েছে ওই হোলের মালিক স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তপন জানা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ কাঁথি মেদিনীপুর রাজ্য সড়কের উপর অবস্থিত রয়েছে তাঁর ওই হোটেল। এই হোটেলের আড়ালেই চলত অবৈধ মদ ও মেয়ে নিয়ে ব্যবসা। যা নিয়ে বারবার রীতিমত সরব হয়েছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামের মানুষের গণ স্বাক্ষরিত আবেদনও জমা পড়েছিল আগে। এরপর দীর্ঘ এক বছর যাবৎ এই হোটেল ব্যবসা বন্ধ ছিল বলে গ্রামবাসীরা জানান। তবে গতকাল রাত্রিবেলা বর্তমান তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য তপন জানা তাঁর নিজের অনুগামীদের দিয়ে ‘নিজেরই’ হোটেল ভেঙে আগুন লাগিয়ে দোষ দিচ্ছেন গ্রামবাসী সহ বেশ কিছু তৃণমূল কর্মীদের ঘাড়ে। এরপরই প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের কোন্দল।
যদিও, হোটেল মালিক তপন জানা বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দা সহ বেশ কিছু তৃণমূল কর্মীরা আমার হোটেলে রাতের অন্ধকারে গ্রামবাসীদের নিয়ে লুটপাট চালিয়েছে। ঘরদর ভাঙচুর, ফ্যান,বেসিন, জানলার কাচ ভাঙচুর সহ একাধিক আসবাসপত্র যথেচ্ছভাবে লুঠ করেছে।”
এদিকে, পাল্টা এক গ্রামবাসী দুর্গাশঙ্কর মণ্ডল বলেন, “গত একবছর ধরে আমরা এই হোটেলে অসামাজিক কাজের বিরুদ্ধে সরব হয়েছি।পুলিশ প্রশাসনকে বার বার জানিয়েছি হোটেলের ভেতরে মদ ও মেয়ে নিয়ে অবৈধ ব্যাবসার বন্ধ করার জন্য। তাই সার্বাঙ্গিক ভাবে গ্রামবাসীরা মিলে মাসপিটিশন দিয়েছি। কিন্তু আমরা যেহেতু প্রতিবাদ জানিয়েছে তাই এই রকম ঘটনা নিজেরা ঘটিয়ে আমাদের নামে ছড়াচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ” ঘটনার পর গ্রামে উত্তেজনা থামাতে এলাকায় উপস্থিত হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। হোটেলের ম্যানেজারকে ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে।
বস্তুত, এর আগে একুশের ভোটের সময় তপন জানা বিজেপির অনুগামী হয়ে কাজ করছিলেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানতে পারা গিয়েছে। যদিও, দলবদল করে সক্রিয় ভাবে বিজেপি করেননি তিনি।