কলকাতা: নতুন বছরের শুরুতেই গঙ্গাসাগর মেলা। তুঙ্গে মেলার প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে, আবার বাংলায় করোনার গ্রাফচিত্র ক্রমেই উর্ধ্বমুখী। তৃতীয় ঢেউয়ের হাতছানি। এই পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগরের মেলা করাই কঠিন চ্যালেঞ্জ রাজ্য সরকারের কাছে। গঙ্গাসাগরে মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে সেই প্রশ্নই করেছিলেন সাংবাদিক। ধমক খেলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, “হোয়াই আর ইউ ওনলি ইন্টারেস্টেড ফর গঙ্গাসাগর, অ্যাক্সড কুম্ভমেলা…” মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, “গঙ্গাসাগর পাবলিক কা হ্যায়!”
প্রস্তুতি পরিদর্শন ২৯, ৩০ ডিসেম্বর গঙ্গাসাগরে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার গঙ্গাসাগর থেকে ফিরে আসছেন তিনি। ফেরার সময় সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। কোভিড পরিস্থিতিতে মেলা নিয়ে বেশ কিছু সতর্কবার্তা দেন তিনি। গঙ্গাসাগরে দাঁড়িয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সংক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। আমরা অনুরোধ করব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে। মাস্ক পরতে ও স্য়ানিটাইজেশন মেনে চলতে। রিভিউ করে গোটা পরিস্থিতি টাইম টু টাইম আমরা জানাব।”
তবে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তেমনটাই ইঙ্গিত মিলল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়। বিদেশি বিমানেই বয়ে আসছে সংক্রমণ, তেমনই দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমি ইউকে-কে ব্যক্তিগতভাবে বেশি ভালোবাসি। তবে দেখছি ইউকে ফ্লাইটেই ওমিক্রন কেরিয়ার বেশি আসছে। ওমিক্রন ভীষণ স্প্রেড করছে। যতটুকু বাড়ছে, এই কারণেই হচ্ছে। যাঁরা আসছেন, তাঁদের অ্যান্টিজেন টেস্ট হয়তো হয়ে যায়। কিন্তু র্যাপিড টেস্টের ফল পেতে তো দেরি হয়। আমরা কাউকেই বিরক্ত করতে চাই না। কিন্তু কোটি কোটি মানুষের কথা ভেবে এটা করতে হবে। আরটিপিসিআরে জোর দিতে হবে।”
এই কথাগুলি বলার সময়েই গঙ্গাসাগর নিয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। প্রশ্ন করতেই বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আপনারা কেন গঙ্গাসাগর নিয়েই এত উৎসাহী? গঙ্গাসাগর নিয়ে তোমাদের ওত চিন্তা করতে হবে না। এটা আমাদের গঙ্গাসাগর নয়। পাবলিকের! পাবলিক যদি উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে আসতে চাইছেন, সেটা কি আমরা আটকাব? আমি কি ওদের আটকাতে পারি? এটা কি আমাদের হাতে আছে? তবে যাঁরা উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে আসবেন ভাবছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই ভালো বুঝেই আসবেন। কোভিড প্রটোকল মেনে আসবেন।” মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা বলেন, “নতুন বছরের উৎসব আমি কী করে আটকাব? নেগেটিভিটি ছড়াবেন না। কোভিড তো ৬-৮ মাস ছিল না। অনেক কোভিড হাসপাতাল তুলে নেওয়া হয়েছিল। এখন আবার রিভিউ করা হচ্ছে। ”
ইতিমধ্যেই গঙ্গাসাগর মেলায় পৌঁছতে শুরু করেছেন পুণ্যার্থীরা। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের ভ্যাক্সিনেশন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে কপিল মুনির আশ্রমের সামনে অস্থায়ী ভ্যাকসিন সেন্টার খোলা হয়েছে। তাতে টিকাকরণ চলছে। সাধুদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার সূত্রে খবর, ১০ লক্ষ ভ্যাকসিন মজুত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাক্স পরা।