‘চটি খুলে বুটটাও পরার সময় পাইনি’, মৌনতা ভেঙে বাইডেনকেও জবাব দিলেন ঘানি

TV9 Bangla Digital | Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Aug 19, 2021 | 7:06 AM

তাঁর বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে দেশ ছাড়ার যে অভিযোগ উঠেছিল, তা অস্বীকার করেছেন তিনি। আরব আমিরশাহীতে আশ্রয় নেওয়ার পর দুবাই থেকে প্রথম ভিডিয়ো বার্তা দিলেন ঘানি।

চটি খুলে বুটটাও পরার সময় পাইনি, মৌনতা ভেঙে বাইডেনকেও জবাব দিলেন ঘানি
সেই ভিডিও বার্তা থেকে নেওয়া ছবি

Follow Us

দুবাই: গত কয়েকদিন ধরে তাঁর অবস্থান ঠিক ভাবে বোঝা যাচ্ছিল না। আফগানিস্তান (Afghanistan) ছেড়ে কোন দেশে গেলেন আসরাফ ঘানি (Ashraf Ghani), সেই প্রশ্নে ঘুরছিল আন্তর্জাতিক মহলে। অবশেষে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির (UAE) তরফে জানানো হয়েছে যে মানবিকতার খাতিরে সেখানেই আশ্রয় দেওয়া হয়েছে তাঁকে। গতকালের সেই খবর প্রকাশ্যে আসার পর একটি ভিডিয়ো বার্তায় দেশ ছাড়ার পর প্রথম মৌনতা ভাঙলেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। রক্তপাত এড়াতে যে কাবুল ছেড়েছেন সে কথা আগেই বলেছিলেন ঘানি। এবার তিনি নাম না করে জবাব দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কে। সেই সঙ্গে টাকা নিয়ে দেশ ছাড়ার যে গুজব তৈরি হয়েছে তা মিথ্যা বলেও ওড়ালেন তিনি।

আফগান প্রেসিডেন্টের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়ার পর এটাই ছিল তাঁর প্রথম ভিডিয়ো বার্তা। গতকাল দুবাই থেকে সেই বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, যদি তিনি কাবুলে থাকতেন তাহলে সেখানে আরও ধ্বংসাত্মক ঘটনা ঘটত।সেই সঙ্গে আফগানিস্তানের থেকে লড়াই করার জন্য আফগান সেনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তরের যে প্রক্রিয়া চলছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এবং প্রাক্তন নেতা আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহের নেতৃত্বে, সেই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। ঘানি বলেন, ‘আমি আমি চাই এই প্রক্রিয়া সফল হোক।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি যদি আফগানিস্থানে থাকতাম তাহলে একজন প্রেসিডেন্টকে আফগানিস্তানের মানুষের চোখের সামনে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হতো।

আসরাফ ঘানি দেশ ছাড়ার পর রাশিয়ার এক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল যে গাড়ি এবং চপার ভর্তি টাকা নিয়ে আফগানিস্তান ছেড়েছেন ঘানি। সেই অভিযোগ উড়িয়ে আসরাফ ঘানি বলেন, ‘আমি খালি হাতেই দেশ ছেড়েছি। এত কম সময়ের মধ্যে আমাকে দেশ ছাড়তে হয়েছে যে আমার পায়ের চটি খুলে বুট পর্যন্ত পরার সময় পাইনি। টাকা নেওয়ার অভিযোগ যে মিথ্যা তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খালি হাতেই দেশ ছেড়েছি। প্রয়োজন হলে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কাস্টমসে খোঁজ নিন।

নাম না করে এই ভিডিয়ো বার্তায় জো বাইডেন এবং ন্যাটো প্রধান জেনস স্টোলেনবার্গকে জবাব দিয়েছেন ঘানি। বাইডেন এবং স্টোলেনবার্গকে দু’জনেই বলেছিলেন যে আফগানিস্তানের নেতৃত্ব একজোট হয়ে তালিবানের সঙ্গে সমঝোতা করতে পারেনি বলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভিডিওবার্তায় ঘানি বলেন, ‘সবটা না জেনে কিছু বলা হোক আমি চাইনা।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আফগান সরকারের সঙ্গে তালিবানের কথাবার্তা হলেও তা শেষ করা যায়নি। সেটা আমাদের ব্যর্থতা। তাঁর দাবি, তিনিও চেয়েছিলেন যে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হোক। কিন্তু তার আগেই আফগানিস্তান থেকে উৎখাত হতে হয়েছে তাঁকে।

দেশছাড়ার পর অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘানি দেশবাসীর উদ্দেশে লিখেছিলেন, যে তাঁর সামনে দুটো কঠিন বিকল্প ছিল। হয় তালিবানের মুখোমুখি হতে হত অথবা তাঁর ‘প্রিয় দেশ’ ছেড়ে পালিয়ে আসতে হত। গত ২০ বছর ধরে এই দেশ রক্ষার স্বার্থে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন ঘানি। কেন চলে এলেন, সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সেখানেও তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি যদি থাকতেন তাহলে বহু আফগানের মৃত্যু হত আর কাবুল শহর ধ্বংস হয়ে যেত। কার্যত বিপর্যয় হতে পারত ৬০ লক্ষ মানুষের এই শহরে। আরও পড়ুন: সরকার গঠন শীঘ্রই! প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে বৈঠকে তালিবানের প্রতিনিধি

Next Article