সরকার গঠন শীঘ্রই! প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে বৈঠকে তালিবানের প্রতিনিধি
হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা আনাস হাক্কানি বুধবার হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে দেখা করেছে।
কাবুল: তালিবান কাবুল দখল করার পরই আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যান প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি। আপাতত আফগানিস্তানের কোনও সরকার নেই। তাই দ্রুত সরকার গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে তালিবান। এরই মধ্যে আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে দেখা করল তালিবানের প্রতিনিধিদল। তালিবানের উপ সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা আনাস হাক্কানি এ দিন দেখা করেছেন প্রাক্তন আফগান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে।
জানা গিয়েছে বুধবারের এই বৈঠকে হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন সরকারের প্রতিনিধি আব্দু্ল্লা আব্দুল্লা ও আফগান সেনেটের চেয়ারম্যান ফজল হাদি মুসলিমিয়ার। পাক সীমান্তে সক্রিয় তালিবানের এই উপ সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্ক। গত ১৫ অগস্ট একটি টুইটে হামিদ কারজাই বার্তা দিয়েছিলেন, যাতে কোঅর্ডিনেশন কাউন্সিল তৈরি করে দ্রুততার সঙ্গে সরকার গঠন করা হয়। কাবুলের রাস্তায় বর্তমানে যে পরিস্থিতি তা নিয়ন্ত্রণে আনার কথাও বলেছিলেন কারজাই।
কারজাইয়ের কথায়, আফগানিস্তানের সব মানুষের জীবন এবং নিরাপত্তাই সবথেকে বেশি। তিনি জানিয়েছেন তালিবান তাঁকে জানিয়েছে, তাঁরা শহরের নিরাপত্তার দিকে নজর দেওয়ার জন্য লোক নিয়োগ করেছে। এ বিষয়ে আগামিদিনে আরও উন্নতি ঘটবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আফগানিস্তানের প্রথম উপ রাষ্ট্রপতি আমরুল্লাহ সালেহ নিজেকে কেয়ারটেকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে ঘোষণা করেছেন ইতিমধ্যেই। টুইটে এই ঘোষণা করেন তিনি। তিনি জানান, দেশে সংবিধান অনুযায়ী তিনি নিজের দায়িত্ব পালন করছেন। মঙ্গলবার টুইটারে আমরুল্লাহ সালেহ লেখেন, ‘আফগানিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতি, পলায়ন, ইস্তফা কিংবা মৃত্যুর পর প্রথম উপ রাষ্ট্রপতি কেয়ারটেকার প্রেসিডেন্ট হয়ে যান। আমি এখনও আমার দেশেই রয়েছি। আমি আমার দায়িত্ব পালন করব। যাঁরা আমাকে শুনছেন আমি কাউকে হতাশ করব না। আমি কোনও দিন তালিবানের সঙ্গে এক ছাদের নিচে থাকব না। কোনও দিনও না।’ সকলের মতামতের অপেক্ষায় তিনি।
রবিবারই তালিবান যখন আফগানিস্তান দখলে নেয়, তার আগেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। তবে সালেহ পঞ্জশিরে যান। প্রথম থেকেই তালিবানের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি। টুইট করে বলেছিলেন, ‘আমি কখনও কোনও পরিস্থিতিতেই তালিবানের সন্ত্রাসবাদের কাছে মাথা নত করব না।’
শোনা যাচ্ছে, মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদরকে প্রেসিডেন্ট করতে পারে তালিবান। ২০০১ সালে মার্কিন সেনা যখন তালিবানি শাসনে ইতি টানে, তখন ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন বরাদর। তালিবানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ২০১০ সাল থেকে পাকিস্তানের জেলে বন্দি ছিলেন মোল্লা বরাদর। তিন বছর আগে আমেরিকার আবেদনে সাড়া দিয়ে মুক্তি দেয় পাকিস্তান। তার পর থেকে দোহায় বসে ঘুঁটি সাজিয়েছেন আফগানিস্তান দখলের। ইসলামিক এমিরেটের প্রেসিডেন্ট হতে পারেন তিনি। আরও পড়ুন: ভিডিয়ো: বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে ‘জুজু’ তালিবান, তোয়াক্কা না করেই প্রতিবাদ আফগান মহিলাদের