লাদাখের গালোয়ান সীমান্ত নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে অবশেষে সেনা প্রত্যাহার করেছে। এর পর প্রথমবারের জন্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দিল ভারত-চিন। বৈঠকে যোগ দেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ডং জুন। সুত্রের খবর সেখানেই রাজনাথ সিং চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, “গালোয়ানের মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে।”
জানা গিয়েছে, লাও দেশের ভিয়েনতিয়েন শহরে হওয়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রাজনাথ ভারত এবং চিনের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। এমনকি বিশ্বের দুই সবচেয়ে বড় দেশের উচিত বিশ্ব শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্য কাজ করে চলা বলেই জানান তিনি। রাজনাথ বলেন, “প্রতিবেশী দেশ হিসাবে আমাদের উচিত, একে অপরের দিকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া, না কি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া।”
বৈঠকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার পরিস্থিতি এবং চার বছরেরও বেশি সময় ধরে দুই পক্ষের অচলাবস্থায় থাকা অঞ্চলগুলির বিচ্ছিন্নতার বিষয়টিকেও পর্যালোচনা করা হয়েছে।
বৈঠকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ২০২০ সালের এই অযাচিত দুর্ভাগ্যজনক সীমান্ত সংঘর্ষ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষার প্রতিফলন করার জন্য এবং ভারত-চিন সীমান্তে স্থির ও শান্ত অবস্থা বজায় রাখার জন্য, এই ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সেই উদ্দ্যেশ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বৃহত্তর আস্থা ও আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠার পথ প্রশস্ত হয়েছে বলে জানান রাজনাথ। পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়া পুনর্গঠনের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে দুইই দেশই।
‘ডেমচাক’ ও ‘ডেপসাং’ এই দুই পয়েন্ট থেকেও গত মাসেই সেনা প্রত্যাহার করেছে দুই দেশ। প্রায় সাড়ে চার বছর পরে উভয় দেশের সৈন্যদের নিয়মিত দুই এলাকায় টহল দেওয়াও শুরু হয়েছে।
গালওয়ান, প্যাংগং, গোগরা হট স্প্রিংস, ডেপসাং এবং ডেমচোকে লাদাখের উচ্চ হিমালয় রেঞ্জে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা এলএসি, অঞ্চলে মূলত এই পাঁচ জায়গায় সামরিক অচল পরিস্থিতি ছিল এত দিন।
২০২০ সালে জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পরেই অবনতি ঘটে ভারত-চিন সম্পর্কের। চার বছর ধরে বহু সামরিক এবং কূটনৈতিক বৈঠকের পরে অবশেষে জট কেটেছে ভারত-চিন সীমান্তের। অবশেষে ২১ অক্টোবর সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে এক মত হয় দুই দেশ। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ২০২০ সালের আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।