কিয়েভ: ফের নিশানায় ইউক্রেন(Ukraine)-র রাজধানী। শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল অবধি একের পর এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে কিয়েভ (Kyiv)। এরপরই আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। তাদের আশঙ্কা বিশাল সংখ্যক রুশ বাহিনী (Russian Army) রাজধানী দখল করে নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসছে। বিগত ১৬দিন ধরে লাগাতার গোলাবর্ষণ করলেও, এবার আরও ভয়াবহ কোনও হামলা চালাতে পারে রাশিয়ার সেনা। ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষদের নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, লুৎস্ক(Lutsk)-এও মিসাইলের আঘাতে ৪ জন সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেই শহরের মেয়র।
সিএনএন সংবাদমাধ্যমের এক সাংবাদিক শুক্রবার রাতেই জানান, বর্তমানে কিয়েভের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যেকোনও মুহূর্তেই রাশিয়ার সেনাবাহিনী বড় মাপের হামলা চালাতে পারে। সাধারণ বাসিন্দা থেকে শুরু করে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনিক আধিকারিক, সকলকেই অত্যন্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের পরামর্শদাতাও জানিয়েছেন, কিয়েভকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনা। রাশিয়ার সামরিক হামলায় কিয়েভ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বুচা শহর। বাকি শহরের সঙ্গে একমাত্র সংযোগকারী সেতুটিও ধ্বংস করে দিয়েছে রুশ বাহিনী। গোটা কিয়েভই লাগাতার আক্রমণে জর্জরিত।
অন্যদিকে, রাশিয়ার তরফে অভিযোগ করা হয়েছে যে ইউক্রেন আমেরিকার সাহায্য নিয়ে জৈব অস্ত্র বানাচ্ছে। সেই তথ্য রাশিয়ার হাতে আসতেই কিয়েভ প্রশাসন সামরিক জৈব অস্ত্র তৈরির সেই সমস্ত তথ্য ধ্বংস করে দিচ্ছে। তবে কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
গতকালই ইউক্রেনের পার্লামেন্টের তরফে জানানো হয়, দক্ষিণ ইউক্রেনের মেলিটোপেল শহরের মেয়র ইভান ফেডোরোভকে অপহরণ করে নিয়েছে রুশ বাহিনী। প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কিও এই দাবি স্বীকার করে নিয়েছেন। বন্দর শহর মারিউপোলের অবস্থাও শোচনীয়। সেখানে বিগত কয়েকদিন ধরে মানবিক করিডর তৈরি করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশকে উদ্ধার করে আনা হলেও, বাকি অনেকেই এখনও আটকে রয়েছেন। বিগত ১১দিন ধরে শহরে জল ও বিদ্যুৎ নেই। প্রায় প্রতি ৩০ মিনিট অন্তরই সেখানে বোমাবর্ষণ হচ্ছে। এখনও অবধি ১২০০-রও বেশি বাসিন্দার মৃত্যুর খবর মিলেছে। রাস্তাতেই ইতিউতি ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার দিনিপ্রো শহরের একটি আবাসনেও তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। একটি জুতোর কারখানা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, মৃত্যু হয়েছে এক নিরাপত্তারক্ষীরও। খারকিভের বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য তৈরি একটি শেল্টারেও বোমাবর্ষণ করা হয়েছে, সেই সময় প্রায় ৩৩০ জন ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। লুৎস্ক ও ফ্রান্কিৎভিকেও সামরিক এয়ারফিল্ডগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।