ওয়াশিংটন: নতুন বছরের গোড়ায় এবার আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করেছে কান্ডিডা অরিস (Candida Auris)। মূলত, ছত্রাক প্রজাতির কান্ডিডা অরিসও প্রাণঘাতী হতে পারে। বর্তমানে মার্কিন মুলুকে বাড়তে শুরু করেছে কন্ডিডা অরিসের সংক্রমণ। অবিলম্বে প্রতিহত না করা গেলে এই ছত্রাক সংক্রমণ মহামারীর আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (CDC) সূত্রে খবর, চলতি বছরে প্রথম কন্ডিডা অরিস সংক্রমিত রোগীর হদিশ মেলে গত ১০ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে। তারপর গত সপ্তাহে আরও ৩ জনের এই প্রাণঘাতী ছত্রাকে সংক্রমিত হওয়ার খবর মেলে।
কারা আক্রান্ত হয়?
সাধারণত যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা কন্ডিডা অরিসে সংক্রমিত হয়। এছাড়া হাসপাতালের যে সব রোগী ফিডিং টিউব, শ্বাস নেওয়ার টিউব বা ক্যাথেটার ব্যবহার করেন তাদের দেহে প্রায়শই এই ছত্রাক পাওয়া যায়।
উপসর্গ
CDC অনুসারে, কন্ডিডা অরিসে সংক্রমিত হলে শরীরের বিভিন্ন অংশে, এমনকি রক্তপ্রবাহের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়ায়। এর ফলে দেহের বিভিন্ন অংশে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। কানেও সংক্রমণ হতে পারে। সাধারণত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সঙ্গে কন্ডিডা অরিসের সংক্রমণের কোনও প্রভেদ থাকে না।
ছোঁয়াচে
কন্ডিডা অরিস ছোঁয়াচে। অর্থাৎ কেউ এই ছত্রাকে সংক্রমিত হলে তার সংস্পর্শে আসা অন্য ব্যক্তিও সংক্রমিত হতে পারে। তাই কন্ডিডা অরিস সংক্রমিত ঝুঁকিপূর্ণ রোগীকে আলাদা থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এমনকি যে রোগীর পরিচর্যা করবে তাকেও গ্লাভস ও গাউন পরতে হবে।
প্রতিরোধের উপায়
কন্ডিডা অরিস সংক্রমিত রোগীদের আলাদা একটি ঘরে থাকা উচিত। ঘরটি নিয়মিত জীবাণুনাশক সামগ্রী দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। রোগী ও পরিচর্যাকারীকে বারবার অ্যালকোহল-ভিত্তিত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে। রোগীর থেকে পরিচর্যাকারীর মধ্যে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সেজন্য পরিচর্যাকারীকে গ্লাভস এবং গাউন পরতে হবে।
কন্ডিডা অরিসের প্রথম হদিশ মেলে ১৫ বছর আগে জাপানে। তারপর গত কয়েক বছরে এই ছত্রাকের সংক্রমণ অতিরিক্ত বেড়ে গিয়েছে। ২০২২ সালে এই ছত্রাকে সংক্রমিত হয়েছিল ২,৩৭৭ জন, যা ২০১৬ সালের তুলনায় ৫৩ গুণ। সিডিসি-র তথ্য অনুসারে, মোট ৪০টি দেশে প্রাণঘাতী ভাইরাস কন্ডিডা অরিসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশে। যেভাবে এই ছত্রাকের সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, এটা গোটা বিশ্বের জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে সিডিসি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।