তৃণমূলের হাতিয়ার ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব, দিলীপের ‘পরিযায়ী শ্রমিক’
দিলীপ ঘোষের কথায়, বাংলার কয়েক লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক অন্য রাজ্যে গিয়ে কাজ করেন। তাঁদের যদি সে রাজ্যের লোকজন বাইরের শ্রমিক বলে ফেরত পাঠিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবেন তো?
TV9 বাংলা ডিজিটাল: বঙ্গ রাজনীতিতে বিরোধীদের একটা বড় হাতিয়ার বোধহয় এই পরিযায়ী শ্রমিকরা। না হলে কথায় কথায় রাজনৈতিক নেতারা তাঁদের ধরে টানাটানি করেন কেন! গত কয়েকদিনে ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে তৃণমূল (Trinamool Congress) ও বিজেপি (BJP)-এর মধ্যে। সে প্রসঙ্গেই তৃণমূলকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) এবার তুলে আনলেন পরিযায়ী-প্রসঙ্গ। বললেন, বাংলার কয়েক লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক অন্য রাজ্যে গিয়ে কাজ করেন। তাঁদের যদি সে রাজ্যের লোকজন বাইরের শ্রমিক বলে ফেরত পাঠিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবেন তো?
একুশের বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে ময়দানে নেমেছে বিজেপি। তবে এই ভোট বৈতরণী পারে ভিন রাজ্যের নেতাদের উপরই ভরসা রেখেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই পাঁচ রাজ্যের কেন্দ্রীয় নেতাকে বাংলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ কলকাতা ঘুরেও গিয়েছেন। এই নেতাদেরই ‘বহিরাগত’ বলে একাধিকবার কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু, সৌগত-সহ তৃণমূলের ৫ হেভিওয়েট বিজেপিতে আসছেন, বিস্ফোরক অর্জুন সিং
দিলীপ ঘোষের বক্তব্য
শনিবার তৃণমূলের সেই বহিরাগত তত্ত্বকেই নস্যাৎ করে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেন, “যাঁরা এখানকার মানুষের উপর ভরসা রাখতে পারছেন না তাঁরাই অকারণে এই বহিরাগত, বহিরাগত করছেন। বাঙালি এতটা ছোট মনের নয়। এই যে ৪০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বাংলার বাইরে গিয়ে কাজ করেন। তাঁদের যদি বাইরের লোক তকমা দিয়ে সে রাজ্যের মানুষ বাড়ি পাঠিয়ে দেন তা হলে দিদিমণি তাঁদের দায়িত্ব নেবেন তো? শুধু শুধু এসব কথা বলে অন্য রাজ্যের মানুষের মনে বাংলা সম্পর্কে সন্দেহ ঢোকানোর কোনও অর্থই নেই।”
আরও পড়ুন: তদন্তের মাঝেই ফের বিস্ফোরণ সুজাপুরের প্লাস্টিক কারখানায়!
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের দাবি, তৃণমূল যখন বাংলা পার করে ঝাড়খন্ড, ত্রিপুরা, অসমে গিয়ে রাজনীতি করে তখন তারা ‘বহিরাগত’ যুক্তিটা ভুলে যায়। আসলে বিজেপির প্রতি ভয় থেকেই তৃণমূলের এ হেন আচরণ বলে দাবি তাঁর। দিলীপের স্পষ্ট যুক্তি, দেশের বাইরের কাউকে নিয়ে আসা হচ্ছে না। বিজেপি একটা সর্বভারতীয় দল। তাই তাদের ভোটের রণকৌশলও সর্বভারতীয় স্তরেই হবে।
আরও পড়ুন: সম্পত্তির সব হিসাব স্ত্রীর কাছেই! এবার দায় ঝেড়ে দাবি গরু পাচারকাণ্ডে ধৃত বিএসএফ কমান্ডান্টের
যদিও শনিবারও বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের ‘বাইরের লোক’ বলে দাবি করে তোপ দেগেছেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার (Kakali Ghosh Dastidar)। কাকলির বক্তব্য, “বাংলার বিজেপি নেতাদের উপর কেন্দ্রের কোনও ভরসা নেই। তাই তাদের বাইরের নেতাকে বাংলায় আনতে হচ্ছে। বাঙালি এটা কখনওই মেনে নেবে না।” তৃণমূলের অপর সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy)-ও কাকলির সুরেই বলেছেন, “বাংলা দখল করতে এখন বিজেপি বাইরে থেকে লোক আনছে।” এর আগে এই একই তত্ত্বে সরব হন তৃণমূলের চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ব্রাত্য বসুরাও।