করোনার বর্ষপূর্তি! এখনও রোজ আক্রান্ত হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ, মৃত্যু হচ্ছে হাজারে হাজারে

ফ্রান্স, গ্রিস-সহ বেশ কয়েকটি ইউরোপের দেশ দ্বিতীয় দফায় লকডাউনের পথে হেঁটেছে। কিন্তু তবুও অপ্রতিরোধ্য করোনা!

করোনার বর্ষপূর্তি! এখনও রোজ আক্রান্ত হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ, মৃত্যু হচ্ছে হাজারে হাজারে
প্রতীকী চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Nov 21, 2020 | 12:21 PM

TV9 বাংলা ডিজিটাল: চিনা সংবাদ মাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, গত বছরের ১৭ নভেম্বর চিনে প্রথম করোনা (COVID) আক্রান্তর হদিশ মিলেছিল। অর্থাৎ এক বছর ধরে মারণ ভাইরাস হত্যালীলা চালাল। আরও কতদিন এই পরিস্থিতি থাকবে,তা অনুমান করা অসম্ভব। চিনা সংবাদ মাধ্যম অনুযায়ী সম্ভবত প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন হুবেই প্রদেশের ৫৫ বছরের এক ব্যক্তি। তারপর করোনাভাইরাস হুবেই থেকে ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।

এক বছর পর সারা বিশ্বে মোট করোনা আক্রান্তর সংখ্যা ৫ কোটি ৫৩ লক্ষ ৫০ হাজার ৬৬৩। ৩৬৫ দিনে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ লক্ষ ৩২ হাজার ৩৩৮ জন। অর্থাৎ হিসাব মতো প্রতিদিন ৩ হাজার ৬৫০ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে কোভিড। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে দেওয়া রিপোর্টে চিন জানিয়েছে সে দেশে প্রথম করোনা আক্রান্তর হদিশ মিলেছিল ৮ ডিসেম্বর। কিন্তু চিনা সংবাদ মাধ্যমের দাবি, কিছু অপ্রকাশিত চিনা নথি রয়েছে যেখান থেকে জানা যায় প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল ১৭ নভেম্বরই।

জানুয়ারির ২১ তারিখ পর্যন্ত চিন মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কথা স্বীকার করেনি। পরবর্তীকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায় এই ভয়ানক ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ধীরে ধীরে বিশ্বের প্রত্যেক প্রান্তে পৌঁছে যায় করোনা। ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা, সর্বত্রই কোভিডের কবলে পড়েন লাখ লাখ মানুষ। প্রত্যেক সেকেন্ডের সঙ্গী হয়ে ওঠে মাস্ক -স্যানিটাইজার ও সামাজিক দূরত্ব।

করোনার বাড়বাড়ন্ত রুখতে লকডাউনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয় একের পর দেশ। দীর্ঘ লকডাউনের জেরে তলানিতে ঠেকে অর্থনীতি। বন্ধ হয়ে যায় সব দফতর। চাকরি হারা জন সারা বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষ। এর মধ্যেই করোনা ছড়ানোর দায়ে চিনকে বিঁধতে শুরু করে আমেরিকা। বাক্যবাণে চিনকে ধরাশায়ী করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুদা বন্ধ করে আমেরিকা। তারপর ধীরে ধীরে বিশ্ব সচল হয়েছে। তবু থামেনি মারণ ভাইরাসের হত্যালীলা, বরং আরও তীব্র হয়েছে।

COVID

প্রতীকী চিত্র

প্রথম করোনা প্রতিষেধকের অনুমোদন দিয়েছিল রাশিয়া। স্পুটনিক-ভি-এ আশা দেখলেও লাভ পায়নি কোনও দেশ। বারবার হাতছানি দিয়েছে প্রতিষেধকের স্বপ্ন। কিন্তু এখনও কার্যকরী প্রতিষেধক অধরা। এত অনিশ্চিয়তার মাঝে কিন্তু ভাইরাস রুখতে সফল হয়েছে চিন। উৎস চিনে করোনার কবলে পড়েছেন মোট ৮৩ হাজার ৩৬১ জন। যেখানে আমেরিকায় করোনা আক্রান্ত ১ কোটি ১৫ লক্ষেরও বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ হয়েও কোনও মন্ত্রবলে ভাইরাসকে রুখে দিয়েছে চিন। এক বছর পরে সেখানে কোনও দিন ৮ জন তো কোনও দিন ১৫ জন করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। যেখানে আমেরিকায় রোজ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ। ভারতেও রোজ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩০ হাজারের আশেপাশে।

আরও পড়ুন: হোয়াইট হাউসে তড়িঘড়ি বৈঠক ডেকে ইরানে হামলা করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প!

সারা বিশ্বে মাস্ক পরে ভাইরাস থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন সকলে। কিন্তু উৎস চিনেই মাস্ক পরার কোনও বাধ্য বাধকতা নেই। যেখান থেকে আন্দাজ করা যায়, ভাইরাস প্রতিরোধে কতটা সফল বেজিং। এখন একাধিক প্রতিষেধকের চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়াল চলছে। রাশিয়া দাবি করছে তাদের প্রতিষেধক ৯২ শতাংশ কার্যকরী, তো মোডের্না বলছে তাদের ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকরী। অর্থাৎ ভাইরাস যেমন সংক্রমণের দৌড়ে গতি বাড়াচ্ছে, ঠিক তেমন ভাবেই বাড়ছে ভ্যাকসিনের দৌড়। ১ বছর অতিক্রান্ত, করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়তে শিখে গিয়েছে আম জনতা। তবু এখনও সম্পূর্ণ সচল হয়নি বিশ্ব। ফ্রান্স, গ্রিস-সহ বেশ কয়েকটি ইউরোপের দেশ দ্বিতীয় দফায় লকডাউনের পথে হেঁটেছে। কিন্তু তবুও অপ্রতিরোধ্য করোনা!