নয়া দিল্লি: দীর্ঘ এক বছর ধরে চলা কৃষক আন্দোলন (Farmers Protest) বদলে দিয়েছে অনেক রাজনৈতিক সমীকরণ। সেই কারণেই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের (Uttar Pradesh Assembly Election 2022) কয়েক সপ্তাহ আগেই কৃষকদের মন পেতে জাঠ নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অমিত শাহ (Amit Shah)। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতার ছেলে সাহিব সিং ভর্মার সঙ্গেও তাঁর বাসভবনে দেখা করেন অমিত শাহ। মূলত উত্তর প্রদেশের পশ্চিমভাগের ভোট নিয়েই গতকাল আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় লোক দলের নেতা জয়ন্ত চৌধুরি বিজেপির আমন্ত্রণ নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন।
পশ্চিম দিল্লির সাংসদ সাহিব সিং ভর্মা জানান, এই বৈঠকটি জাঠ সম্প্রদায়ের নেতাদের জন্যই আয়োজন করা হয়েছিল, যাতে তারা নিজেদের সমস্যাগুলি তুলে ধরতে পারেন। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে প্রায় ২০০ জাঠ নেতা উপস্থিত ছিলেন। একইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় লোক দলের নেতা জয়ন্ত চৌধুরির কাছেও আমন্ত্রণ পাঠানো হয় সমঝোতার জন্য।
অমিত শাহের বৈঠকে আমন্ত্রিত হওয়ার খবর প্রচার হতেই টুইটে বোমা ফাটান জয়ন্ত চৌধুরি। তিনি লেখেন, “এই আমন্ত্রণ আমার জন্য নয়, বরং যে ৭০০ কৃষক পরিবারকে আপনারা ধ্বংস করে দিয়েছেন, তাদের পাঠান।”
২০১৪ এবং ২০১৯ এর লোকসভা ভোট এবং ২০১৭ সালের উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে জাঠদের সমর্থন বিজেপির দিকে থাকলেও কৃষক আন্দোলনের জেরে তা পরিবর্তিত হয়েছে। জাঠ সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশই বর্তমানে রাষ্ট্রীয় লোক দলকে সমর্থন করছে, যারা অখিলেশ যাদবের দল সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট বেঁধেছে।
বিজেপি নেতা পরভেশ ভর্মা বলেন, “জয়ন্ত চৌধুরি ভুল পথ বেছে নিয়েছে। জাঠ সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলবে। অন্যদিকে, আমাদের দরজা সবসময়ই খোলা রয়েছে।”
আরএলডিকে সমর্থন করলেও, বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মিরাটের জাঠ সম্প্রদায় আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিক্ষুব্ধ। সমাজবাদী পার্টির দখলেই অধিকাংশ আসন থাকায় শিওয়ালখা, সারদানা ও হস্তিনাপুরে জোট প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেছে তারা। একইভাবে মুজাফ্ফরনগরেও মুসলিম ভোটকে মাথায় রেখে এক মুসলিম প্রার্থীকেই দাঁড় করানো ঘিরেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাঠ সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা। তবে বিজেপির দাবি, সুযোগ পেলেই জাঠদের সমস্ত ক্ষোভ মেটানো হবে। তাই সমাজবাদী পার্টিকে যেন তারা ভোট না দেন।
গত বিধানসভা নির্বাচনে মুজাফ্ফরনগরে বিজেপি ৬টি আসনেই জয়ী হলেও, বর্তমানে মুসলিম ভোটাররা শাসকদলকে নিয়ে যথেষ্ট অসন্তুষ্ট। তাদের দাবি, একজনও নেতাকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমস্য়া বা দাবি-দাওয়া বিধানসভায় তুলে ধরতে দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: Mohan Bhagwat : প্রাচীন ভারতের মতো দেশের গণতন্ত্র গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর আরএসএস, জানালেন মোহন ভাগবত