কলকাতা: “আমি জলঢোঁড়াও নই, বেলেবোড়াও নই, জাত গোখরো, এক ছোবলেই ছবি।” মিঠুন চক্রবর্তীর এক ডায়লগেই গোটা ব্রিগেড উত্তাল। হাততালি দিলেন বিজপিরে একের পর এক নেতা। কৈলাস বিজয়বর্গীয় তো দাঁড়িয়েই পড়লেন। কিন্তু ‘মহাগুরুর’ পদ্মযোগের পর উঠছে একের পর এক প্রশ্ন। এক সময় রমলা চক্রবর্তীর হয়ে সিপিএমের প্রচার করেছেন মিঠুন। তারপর জোড়াফুল শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন। এ বার প্রশ্ন উঠছে বিধানসভা নির্বাচনে কি বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ? কলকাতার অলিতে গলিতে জোর গুঞ্জন এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে। স্বাভাবিক ভাবেই খোদ ‘জাত গোখরো’ মিঠুন চক্রবর্তীর কাছেও এরকম একাধিক প্রশ্ন নিয়ে গেল টিভি নাইন বাংলা।
তবে রাজনীতি শব্দবন্ধ না-পসন্দ মহাগুরুর। প্রথমেই সাফ করে দিলেন তিনি রাজনীতি জানেন না মনুষ্যনীতি জানেন। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় তাঁর বক্তব্য, “রাজনীতির দায়রায় আমায় ফেললে গণ্ডগোল হয়ে যাবে।” টিভি নাইন বাংলার একান্ত সাক্ষাৎকারে একেবারে কালী মন্দিরের সামনে বসেছিলেন মহাগুরু। সাংবাদিক যখন প্রশ্ন করলেন, “আমরা একেবারে কালী মন্দিরের সামনে বসে আছি, শুনেছিলাম পুজো করেন!” তখন মিঠুন বললেন, “হ্যাঁ মা আমার, রোজই পুজো করি। রোজ সাড়ে ৪টা-৫টার সময় আমি ঘুম থেকে উঠি তারপর সেই ব্রহ্ম মূহুর্তে ১০৮ বার গায়ত্রী জপ করি। এই জন্য আমায় কেউ বাইরে পুজো করতে দেখে না।”
‘মৃগয়া’ থেকে ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ বঙ্গে সর্বস্তরের মানুষের কাছেই সমান জনপ্রিয় মিঠুন চক্রবর্তী। বঙ্গে বিজেপির ম্যারাথন প্রচারে দেখা যাবে তাঁকে। ব্রিগেডে মহাগুরু যোগ দেখে এমনটা জানিয়েছিলেন বহু পর্যবেক্ষক। মহাগুরুর মুখেও একই কথা। তিনি জানালেন, প্রধানমন্ত্রী ১২ তারিখ থেকে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেছেন তাঁকে। তবে কোথায় প্রচারে যাবেন, কী হবে ‘সবটাই ঠিক করবেন কৈলাসজি, অর্জুনজি-সহ বিজেপি নেতারা।’ ব্যক্তিগত পছন্দে কোথাও প্রচারে যাওয়ার ইচ্ছে নেই তাঁর। দল যা বলবে সেই মতোই এগোবেন তিনি।
এরপরই টিভি নাইন বাংলার প্রশ্ন, “বিজেপি তো বাংলায় একটা মুখ খুঁজছিল, যাকে বাংলার মানুষ চেনে, সেই মুখ কি আপনি?” অট্টহাসি ‘মহাগুরুর’। পাল্টা উত্তর, “সেটা কি সবাই ভাবে, অনেকে তো বলে সেই ফেস না কি আমি নয়।” পদ্মাসনে মিঠুন বসার পর লাগাতার কটাক্ষ এসেছে ঘাসফুল শিবির থেকে। সাংসদ সৌগত রায় কটাক্ষ করে জানিয়েছেন, আগে বামেদের ছিলেন মাঝে তৃণমূল, এখন বিজেপি। প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী তথা কামারহাটির তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্র তো একধাপ উপরে ওঠে সাংবাদিকদের সাফ বলেছেন, “মারব এখানে লাশ পড়বে ঝাড়খণ্ডে।” আর টিভি নাইন বাংলাকে মদন এক্সক্লুসিভলি জানিয়েছেন, মিঠুন নাকি জলঢোঁড়াই, তাই মোদীর পায়ে মাথা ঠেকিয়েছেন।
এইসব কটাক্ষ সম্পর্কে মিঠুনের উক্তি, “আমি তো গুরুত্বপূর্ণই নই, যাঁরা আমার সম্পর্কে মন্তব্য করছেন তাঁদের সম্পর্কে আমি কোনও খারাপ কথা বলব না। এখনও বলছি আমি জ্যোতি বসুর ফ্যান ছিলাম। সুভাষদার সঙ্গে আমার ঘরোয়া ব্যাপার। আজকে দাদা নেই তা বলে কি আমায় বৌদির হাত ছেড়ে দিতে হবে। যতদিন বাঁচবো বৌদির পাশে থাকব।” আগামী দিনে সোনার বাংলা গড়া নিয়ে মিঠুন চক্রবর্তীর গ্যারান্টি দিয়ে দাবি, ‘বিজেপি সরকার এলে ৬ মাসে সব পালটে যাবে।’
আরও পড়ুন: West Bengal Election 2021 LIVE: তৃণমূলের প্রার্থী বদল, দলত্যাগের জল্পনা উস্কে সরলেন হবিবপুরের সরলা