মৃত্যুর কয়েকদিন আগে প্রেমিকার কাছে কী চেয়েছিলেন রাজেশ খান্না?
কেরিয়ারের শুরুতে টানা কয়েকটি ছবি ফ্লপ হলেও শক্তি সামন্তর ‘আরাধনা’ রাতারাতি বদলে দিয়েছিল রাজেশের ভাগ্য। এরপর ‘সফর’, ‘আনন্দ’, ‘আন্দাজ’ থেকে ‘অমর প্রেম’— একের পর এক সিলভার জুবিলি ছবি উপহার দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বলিউডের অবিসংবাদিত সম্রাট।

বলিউডের ইতিহাসে ‘সুপারস্টার’ শব্দটি প্রথম যাঁর নামের পাশে বসেছিল, তিনি রাজেশ খান্না। রূপোলি পর্দার সেই ম্যাজিক, সেই মায়াবী হাসি— এক সময় যা পাগল করে দিয়েছিল কোটি কোটি ভক্তকে। কিন্তু মুদ্রার উল্টো পিঠটাও ছিল বড় নিষ্ঠুর। জীবনের শেষ লগ্নে এসে সেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়ককেই লড়তে হয়েছে চরম একাকীত্ব আর শারীরিক যন্ত্রণার সঙ্গে।
কেরিয়ারের শুরুতে টানা কয়েকটি ছবি ফ্লপ হলেও শক্তি সামন্তর ‘আরাধনা’ রাতারাতি বদলে দিয়েছিল রাজেশের ভাগ্য। এরপর ‘সফর’, ‘আনন্দ’, ‘আন্দাজ’ থেকে ‘অমর প্রেম’— একের পর এক সিলভার জুবিলি ছবি উপহার দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বলিউডের সম্রাট। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘কাকাজি’ নামে। অমিতাভ বচ্চনের মতো অভিনেতাও একসময় রাজেশের অভিনয় দেখে বিস্মিত হতেন।
ফিল্ম বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজেশের আকাশছোঁয়া সাফল্যের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল তাঁর পতনের বীজ। মাত্রাতিরিক্ত অহংবোধ এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন তাঁর কেরিয়ারে চোরাবালি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সমসময়ে অমিতাভ বচ্চনের ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’ ইমেজের উত্থান রাজেশের সিংহাসন টলিয়ে দেয়। একদিকে পেশাদারী জীবনে ব্যর্থতা, অন্যদিকে ডিম্পল কাপাডিয়ার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ— সব মিলিয়ে একসময়ের সুপারস্টার ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়েন।
সম্প্রতি ‘অবন্তি ফিল্মস’ ইউটিউব চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে রাজেশের শেষ জীবনের ছায়াসঙ্গী অনিতা আডবাণী সেই যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেছেন। অনিতার ভাষ্যে, শেষ জীবনে শয্যাশায়ী রাজেশ বার বার বলতেন, “আমি এই অবস্থা আর সহ্য করতে পারছি না। এর চেয়ে আমাকে মেরে ফেলো।” অসুস্থ শরীরে কাটানো একেকটা দিন রাজেশের কাছে একেকটা বছরের মতো দীর্ঘ মনে হতো।
রাজেশ খান্নার প্রাণভোমরা ছিল তাঁর বাংলো ‘আশীর্বাদ’। অনিতা জানান, রাজেশের স্বপ্ন ছিল তাঁর এই বাড়িটি একদিন মিউজিয়াম হবে, যেখানে তাঁর সুপারস্টার হওয়ার ইতিহাস সংরক্ষিত থাকবে। কিন্তু হঠাৎই ১৫০ কোটি টাকায় বাড়িটি বিক্রির প্রস্তাব আসায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। অনিতা বলেন, “ক্রেতাকে পত্রপাঠ বিদায় দিয়েছিলেন রাজেশ। শেষ সময়ে ডিম্পল ও তাঁর দুই মেয়েও দেখা করতে আসতেন, কিন্তু তাঁর মনের ক্ষত তাতে উপশম হয়নি।”
