Exclusive: ঘন্টার পর ঘন্টা কথা থেকে শুরু করে বিপদে পাশে থাকা, অমিতাভের জীবনে কে এই বাঙালি নারী?
Untold Story: কঙ্কনার আগামী শর্ট ফিল্ম 'রি-রুটিং ' আদপে একটি সাইকোলজিকাল থ্রিলার। তিন জন মানুষের মধ্যে সারা রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রবাহে তাঁদের জীবন কীভাবে বদলাতে থাকে, সেটাই কাহিনি। বরুণ চন্দ, কঙ্কনা ও প্রদীপ ভট্টাচার্য এই স্বপ্ল দৈর্ঘ্যের ছবিতে রয়েছেন।

পরিচালক অভিনেত্রী কঙ্কনা চক্রবর্তী আর পাঁচটা বাঙালি অভিনেত্রীর থেকে একটু আলাদা। লম্বা, ছিপছিপে বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা তাঁর। কঙ্কনার আর একটি বিশেষত্ব হল, তাঁর তৈরি সব কাজই বিগ বি অর্থাৎ অমিতাভ বচ্চন শেয়ার করে থাকেন। এটাই তাঁকে অন্যদের থেকে আরও বিশেষ করে তুলেছে। এই প্রশ্ন নিয়েই শুরু হল কঙ্কনার সঙ্গে কথোপকথন। এই মুহূর্তে তাঁর আগামী শর্ট ফিল্ম ‘রি-রুটিং’ নিয়ে ব্যস্ত। তাঁর সব কাজ অমিতাভ বচ্চন শেয়ার করেন স্যোশাল মিডিয়ায়। এই কথা শুনে কঙ্কনা জানালেন, তিনি খুবই ভাগ্যবতী যে তাঁর সব কাজ যখনই তিনি বচ্চন স্যারকে দেখতে পাঠান, স্যার তা শেয়ার করে থাকেন। যদিও কঙ্কনা কোনওদিনই বিগ- বি-কে শেয়ার করতে বলেন না। তিনি এই প্রসঙ্গে আরও বলেন, “বচ্চন স্যার আমার মেন্টর, তাই যা কিছুই করি, সবার আগে তাঁকে পাঠাই। উনি আমায় অত্যন্ত স্নেহ করেন, তাই শেয়ার করেন। আসলে আমার বাবা মা-র মতোই বিগ বি আমার কাছের মানুষ।”
কঙ্কনার আগামী শর্ট ফিল্ম ‘রি-রুটিং ‘ আদপে একটি সাইকোলজিকাল থ্রিলার। তিন জন মানুষের মধ্যে সারা রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রবাহে তাঁদের জীবন কীভাবে বদলাতে থাকে, সেটাই কাহিনি। বরুণ চন্দ, কঙ্কনা ও প্রদীপ ভট্টাচার্য এই স্বপ্ল দৈর্ঘ্যের ছবিতে রয়েছেন। বাংলা ও ইংরেজি ভাষাতে মুক্তি পাবে এই ছবি। আশা করছেন, আগামী ৩১ মার্চ এই ছবি তৈরি হয়ে যাবে।
কঙ্কনার মতে, বরুণ চন্দকে এইভাবে কেউ দেখেনি। এই কাজ দেখে অভিভূত মিস্টার বচ্চন। তবে কীভাবে বচ্চনের সঙ্গে আলাপ হল তাঁর, সেই প্রশ্ন করতে হেসে কঙ্কনা বলেন, “আমি ওঁর ফ্যান ছিলাম, ছোট থেকেই ওঁকে চিঠি লিখতাম, আর বচ্চন স্যার সেই সব চিঠির উত্তর দেন, এইভাবেই আমি আমার কাজ শেয়ার করতে উনি সেটা সমাজ মাধ্যমেই শেয়ার করেন, এরপর স্যারের সঙ্গে যখন প্রথম আলাপ হয় সামনে থেকে , তখন ফ্যান গার্ল থেকে আমি একধাপ এগিয়ে যাই। আমিও যে এই রকম সৃষ্টিশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি , সেটা ভাবতে শুরু করি। প্রথম বার বচ্চন স্যার আমার অভিনীত ডকু ফিচার “মালতি ‘ র ট্রেলার প্রকাশ করে ছিলেন। আসলে সাংবাদিকতা পড়েছিলাম তো ওঁর সাক্ষাৎকার নেব বলেই।”
প্রসঙ্গত কঙ্কনা বলেন, “আমার যেকোন রকম সমস্যায় বচ্চন স্যার আমার পথ দেখান। একবার এক পারিবারিক সমস্যার কারণে মানসিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়েছিলাম। সেই কথাও আমি স্যারকে জানাই। তখন তিনি আমায় একটি কবিতা লিখে দিয়েছিলেন। যেখানে ‘অগ্নিপথ’ কবিতার লাইন লেখা ছিল। যা আমার কাছে সারা জীবনের এক সম্পদ হয়ে থাকবে। আবার মজার করেও কখনও কখনও পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন।
কঙ্কনা জানান, যখন তিনি বিদেশে অভিনয় নিয়ে পড়তে যাবেন ঠিক করেন, সেই সময় একটু ভয় পাচ্ছিলেন। তখন তিনি মজা করে অমিতাভ বলেছিলেন, তিনিও যাবেন, অভিনয়ের ক্লাস করতে। কঙ্কনার কথায়, “খুবই মজার মানুষ বলিউডের শাহেনশাহ।”
কঙ্কনা বলেন, “স্যারের মতো এত উৎসাহি মানুষ আমার দেখা নেই। এখন তিনি গান কম্পোজ করছেন, তবে নিজেই বলেন, সবই নাকি দুঃখের গান। তবে একটা কথা শেয়ার করতে চাই, আমার লম্বা চুল ছিল, হঠাৎ করেই কেটে ছোট করে দিয়েছিলাম আমি। দেখে স্যার বলেছিলেন, ভাল দেখাচ্ছে। তবে চুল ছোট হওয়ার জন্য আমি অনেক চরিত্র পাই না। এরপর যখন স্যারকে জিজ্ঞাস করেছিলাম, আমার কি চুল বাড়ানো উচিত? এর উত্তরে তিনি বলেছিলেন– দেখ চাইলে বাড়াতেই পার, তবে চরিত্র পাওয়ার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। তুমি নিজে কীসে খুশি বা কনফিডেন্ট, সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই দেখ আমার উচ্চতা আর গলার স্বর নিয়েও অনেকের মতামত ছিল, তাতে কিছু অসুবিধা হয়নি। চরিত্রের প্রয়োজনে তো হেয়ার এক্সটেনশন ব্যবহারের উপায় আছেই।” তিনি আরও বলেন, “আসলে আমার সব রকম ক্রাইসিস এ আমার একমাত্র ভরসার জায়গা অমিতাভ স্যার। ঘন্টার পর ঘন্টা সিনেমা ও নানা বিষয়ে আলোচনা হয়, আমার কাছে ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভগবান ও ভক্তের। ওর প্রশ্রয় না পেলে আমি এই সিনেমার জগতে হয়তো আসতাম না।”





