Ankush Hazra: ‘প্রতারণা’র শিকার অঙ্কুশ, ঠগবাজ চেনাতে হাতজোড় করে সাবধান করলেন ইন্ডাস্ট্রিকে

Tollywood Inside: প্রতারণা, ফাঁদ, অপমান অপবাদ, লড়াই, সবটাই স্পর্শ করে গেল এই পোস্টে। যেখানে অঙ্কুশ কড়া ভাষায় জানিয়ে দিলেন, কীভাবে বাংলা সিনেপাড়া ক্রমেই জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে।

Ankush Hazra: 'প্রতারণা'র শিকার অঙ্কুশ, ঠগবাজ চেনাতে হাতজোড় করে সাবধান করলেন ইন্ডাস্ট্রিকে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 19, 2023 | 4:15 PM

‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান’, বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে এই স্লোগান ভীষণ পরিচিত। যদিও গত দু’বছরে বারবার ‘টার্গেট’ হতে হয়েছে টলিউডকে। সৌজন্যে রাজ্য-রাজনীতি এবং একের পর এক দুর্নীতি-কাণ্ডের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির নাম জড়িয়ে যাওয়া। তা সে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে হোক অথবা সম্প্রতি রেশন দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমানই হোক। ঘুরপথে কালো টাকা সাদা করার ‘অবলম্বন’ হিসেবে যেভাবে বারবার টলিউডকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে প্রায়শই ময়দানে নেমে মন্তব্য করতে হয় কলাকুশলীদের। কিন্তু এবার প্রতিবাদ নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে ‘হাতজোড় করে’ অন্যদের সাবধান করতে দেখা গেল অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরাকে। কীভাবে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বারবার জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে, দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সে ব্যাপারে সমাজমাধ্যমে এভাবে অঙ্কুশকে আপডেট দিতে দেখে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে টলিউডে। ঠিক কী করেছেন অঙ্কুশ?

অভিনেতা লিখেছেন, “বাইরে থেকে প্রচুর ভুলভাল মানুষ এসে নতুন অভিনেতা অভিনেত্রীদের স্বপ্ন দেখিয়ে ঠকিয়ে নিজেরটা গোছাচ্ছে। আর পুরনো অভিনেতাদের জালি কাগজ আর false ব্যাংক একাউন্ট দেখিয়ে ঠকাচ্ছে। আমি নিজে তার শিকার হয়েছি আর বাকিদেরও সাবধান করেছি।” অঙ্কুশের এই ‘স্বপ্ন দেখিয়ে ঠকিয়ে নিজেরটা গোছাচ্ছে’র মধ্যেই নেটিজ়েন থেকে শুরু ইন্ডাস্ট্রির একাংশ খুঁজে পেয়েছেন গত দু’বছর ধরে চলা দুর্নীতিকাণ্ড ও টলিউড যোগের ছায়া। গত এক বছরে টলিপাড়ার অন্দরমহলের যে ছবি প্রকাশ্যে উঠে এসেছে, তা নিয়ে একশ্রেণির কপালে চিন্তার ভাঁজ। কখনও কাঠগড়ায় উঠতে হয়েছে ইম্পাকে (IMPPA), কখনও আবার নবাগত পরিচালক-প্রযোজকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। কালো টাকার বিনিয়োগ নিয়ে বারবার বিদ্ধ হতে হয়েছে টলিউডকে, যার জেরে স্বজনপোষণ নিয়ে সমালোচনাও বাদ পড়েনি তালিকা থেকে। এই মর্মে যখন টলিপাড়ার অন্দরমহলে শোরগোল, ইম্পার তরফে জানানো হয়েছিল, ”কে, কোথা থেকে টাকা এনে বিনিয়োগ করছে, তার বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হয় না ইম্পা থেকে।”

পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে TV9 বাংলা-কে বলেছিলেন, ”বরাবরই কালোটাকার সঙ্গে সিনেমার এক গভীর সম্পর্ক। সবার আগে কালো টাকা যেন এখানেই বিনিয়োগ করা হয়। আমরা, স্টাররা বুঝতেই পারি না, আমাদের পারিশ্রমিকের টাকার উৎস কোথায়?” আর্থিক তছরূপে অভিযুক্ত  প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবীও ঠিক একইভাবে সিনে-দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন। অর্পিতা মুখোপাধ্যায় অভিনীত করা ছবির টাকার উৎসের শেষ কোথায়, তা আজও ইডির নজরে।

আর টলিউডের এই ভয়াল পরিস্থিতির কথাই আরও একবার নজরে আনলেন অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরা। তাঁর আরো অভিযোগ, “পুরনো অভিনেতাদের জালি কাগজ আর মিথ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখিয়ে ঠকাচ্ছে। আমি নিজে তার শিকার হয়েছি আর বাকিদেরও সাবধান করেছি।” তবে কীভাবে এই প্রতারণা হয়েছে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে নিজের পোস্টে কিছু লেখেননি অঙ্কুশ।

View this post on Instagram

A post shared by Ankush (@ankush.official)

প্রতারণা, ফাঁদ, অপমান অপবাদ, লড়াই, একে-একে সবকিছুই স্পর্শ করে গিয়েছে অভিনেতার এই পোস্ট। যেখানে অঙ্কুশ কড়া ভাষায় জানিয়ে দিলেন, কীভাবে বাংলা সিনেপাড়া ক্রমেই জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। পোস্টের নিরিখে TV9 বাংলা অঙ্কুশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কোনও উত্তর মেলেনি। প্রসঙ্গত ‘মির্জা’ ছবি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে নানা জল্পনা বর্তমান। যদিও অঙ্কুশ নাম না করেই তোপ দ্লন, সতর্ক করেছেন সকলেই। সেই সঙ্গে তাঁর কাতর আর্জি, “দয়া করে এই অযোগ্য মিথ্যে লোকজনদের জেনে শুনে আস্কারা দেবেন না। আর একজন পরিচালককে বলতে চাই, যতদিন না আপনি একটু হলেও নাম করছেন, ততদিন দয়া করে সদ্য নাম করা অভিনেতাদের অপমান করবেন না বা বিচার করবেন না। কারণ আপনি এখনও সেই সদ্য নাম করা জায়গাটাতেই পৌঁছননি। ধন্যবাদ।”