২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী ৩৪২,০০০ মহিলা জরায়ুমুখের ক্যানসারে মারা গিয়েছে। এই মধ্যে ৭২,০০০ জন ভারতীয় মহিলা। ভারতে সারভিক্যাল ক্যানসার বা জরায়ুমুখের ক্যানসারে প্রতি সাত মিনিটে একজন মহিলার মৃত্যু হয়। সারা বিশ্বে মহিলাদের মধ্যে যে সব ক্যানসার সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়, তার মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার রয়েছে চতুর্থ স্থানে। সুতরাং, মহিলাদের এই রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। তবে, সারভিক্যাল ক্যানসার নিরাময়যোগ্য, যদি প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগ নির্ণয় করা যায়। তাই, এই মারণ রোগের উপসর্গগুলো সম্পর্কে সব মেয়েদের সচেতন থাকা দরকার।
হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)-এর কারণে মহিলাদের শরীরে সারভিক্যাল ক্যানসারের কোষ বাড়তে থাকে। এই ভাইরাস ছাড়া অসুরক্ষিত যৌন মিলনও কিন্তু সারভিক্যাল ক্যানসারের জন্য দায়ী। সাধারণত ২০ বছরের কম বয়সিদের এই রোগ দেখা যায় না। কিন্তু বয়স ৩০ পেরলেই সাবধান হওয়া জরুরি। সাধারণত ৩৮ থেকে ৪২ বছর বয়সিরা সবচেয়ে বেশি জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। জরায়ুমুখের ক্যানসারে প্রতিরোধযোগ্য। এর জন্য আপনাকে নিয়মিত পরীক্ষা এবং টিকা নিয়ে যেতে হবে। বয়স ১০ পেরলেই এসব রুটিন মাফিক শুরু করা উচিত। আর নিরাপদ যৌন মিলন এই রোগের হাত থেকে বাঁচার অন্যতম উপায়।
সারভিক্যাল ক্যানসারের যে সব উপসর্গ এড়িয়ে যাবেন না-
১) যৌন মিলনের সময় জরায়ুতে তীব্র ব্যথা অনুভব হয়। এমনকী যৌন মিলনের পর রক্তপাতও হতে পারে।
২) ঋতুচক্রের সময়ের পরও অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হয়। এমনকী ঋতুস্রাবের সময়ও অতিরিক্ত মাত্রায় রক্তক্ষরণ হয়।
৩) অন্যান্য সময়ে যোনি দিয়ে সাদা স্রাব বের হতে থাকে। তার সঙ্গে দুর্গন্ধ ছাড়ে।
৪) প্রস্রাবের সময় জ্বালাভাব কিংবা ব্যথা অনুভব করলে এটি বিষয়টিকে এড়িয়ে যাবেন না।
৫) হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া কিন্তু সারভিক্যাল ক্যানসারের একটি সাধারণ উপসর্গ।
সারভিক্যাল ক্যানসারের ঝুঁকি এড়াবেন যে ভাবে-
১) নিরাপদ যৌন মিলন এই রোগ এড়ানো সবচেয়ে সহজ উপায়। আপনার সঙ্গীর একাধিক যৌন সঙ্গী আছে কিনা কিংবা তাঁর অন্য কোনও যৌন রোগ আছে কিনা সে সম্পর্কে অবগত হয়ে নিন। সুরক্ষিত যৌন জীবন আপনাকে সুস্থ জীবনযাপনে সাহায্য করবে।
২) বন্ধ্যাত্ব, পলিসিস্টিক ওভারি এবং ঋতুস্রাব সম্পর্কিত অন্যান্য রোগ থাকলে সচেতন থাকুন। রুটিন মাফিক টেস্ট ও টিকা নিতে থাকুন।
৩) ধূমপান ও মদ্যপান ক্যানসারের সঙ্গে যুক্ত। অ্যালকোহল সেবন শরীরে সাত ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করে।