নয়া দিল্লি: ছাত্র আন্দোলন থেকেই তৈরি হয়েছিল গণ আন্দোলন। সেই আন্দোলনের সামনেই মাথা নোয়াতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। প্রাণভয়ে বাধ্য হয়েছেন দেশ ছাড়তেও। আপাতত ভারতেই রয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। ভারতে বসেই বাংলাদেশ নিয়ে বোমা ফাটালেন শেখ হাসিনা। তাঁর দাবি, বাংলাদেশের এই হিংসা-অস্থিরতার পিছনে আমেরিকার হাত রয়েছে।
ভারতে শেখ হাসিনার সঙ্গে যারা সাক্ষাৎ করেছেন, তাদের কাছেই ক্ষমতাচ্যুত হওয়া নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা। ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে বাংলাদেশের এই অশান্তি এবং আওয়ামী লিগকে ক্ষমতাচ্যুত করার পিছনে সরাসরি আমেরিকার হাত রয়েছে।
শেখ হাসিনা তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন যে আমেরিকার হাতে যদি সেন্ট মার্টিন আইল্যান্ড তুলে দিতেন, তবে হয়তো ক্ষমতা ছাড়তে হত না। আমেরিকার কথা মানতে চাননি, তাই ক্ষমতা হারাতে হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছেন, তারা যেন মৌলবাদীদের কথায় প্রভাবিত না হন।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তাঁর কাছের মানুষদের কাছে বলেছেন, “আমি ইস্তফা দিয়েছি যাতে মৃত্যু মিছিল দেখতে না হয়। ওরা পড়ুয়াদের মৃতদেহ মাড়িয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। আমি সেটা হতে দিইনি। নিজেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিই। যদি আমি সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সার্বভৌমত্ব আমেরিকার হাতে তুলে দিতাম এবং তাদের বঙ্গোপসাগরে একাধিপত্য বাড়াতে দিতাম, তাহলে হয়তো আমি এখনও ক্ষমতায় থাকতাম। আমি দেশের মানুষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, মৌলবাদীদের কথায় প্রভাবিত হবেন না।”
হাসিনা আরও বলেছেন, “আমি যদি বাংলাদেশে থাকতাম, তবে আরও প্রাণহানি হত। আরও সম্পত্তি নষ্ট হত। সেই কারণেই দেশ ছাড়ার কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই। আপনারা আমায় বেছে নিয়েছিলেন বলেই আমি আপনাদের নেত্রী হই। আপনারাই আমার শক্তি ছিলেন।”
শীঘ্রই দেশে ফিরবেন বলেই ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন হাসিনা। তিনি বলেন, “আমাদের দলের নেতাদের খুনের খবরে আমার অন্তর কাঁদে। কর্মীদের উপরে হামলা করা হচ্ছে, তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে… আল্লাহের কৃপায় আমি শীঘ্রই দেশে ফিরব। আওয়ামী লিগ আবার উঠে দাঁড়াবে। আমি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য প্রার্থনা করছি। যে দেশের জন্য আমার বাবা লড়াই করেছিলেন, আমার বাবা ও পরিবার প্রাণ দিয়েছিল, তার জন্য প্রার্থনা করি।”
কোটা আন্দোলন ও রাজাকার মন্তব্য নিয়েও সাফাই দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের যুব ছাত্রদের আবারও বলছি, আমি তোমাদের রাজাকার বলিনি। আমার শব্দ বিকৃত করা হয়েছে অশান্তি উসকানোর জন্য। আমি অনুরোধ করছি, সেদিনের পুরো ভিডিয়োটা দেখ। তোমাদের সারল্যের সুবিধা নিয়েছে ষড়যন্ত্রকারীরা এবং দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে তোমাদের ব্যবহার করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেও, গত এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন যে দেশে ক্ষমতা বদলের জন্য চক্রান্ত করছে আমেরিকা। গণতন্ত্র ধ্বংস করে এমন সরকার ক্ষমতায় আনতে চাইছে যেখানে গণতন্ত্রের কোনও অস্তিত্বই থাকবে না।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)